আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি ঃ বগুড়ার আদমদীঘিতে গ্রাম্য সালিশে ডেকে নিয়ে গিয়ে আমিনুল ইসলাম (৪০) নামের এক ব্যাক্তিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার রাত সাড়ে ১০’টায় উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামে এ নৃশংস ঘটনা ঘটেছে।
নিহত আমিনুল ইসলাম উপজেলার নসরতপুর ইউপির লক্ষীপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেমের ছেলে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বগুড়া শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকাল কলেজ হাসপাতালে মর্গে প্রেরন করেছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ঘটনার পর থেকে ওই গ্রাম এখন পুরুষ শুন্য ।
পুলিশ ও নিহতের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন জানায়, আদমদীঘির নসরতপুর ইউপির লক্ষীপুর গ্রামে শাহিন হোসেন ও তহিদুল ইসলাম বনাম সেজদা ও আমিনুল ইসলাম নামের দুটি বিবাদমান দল রয়েছে। তাদের মধ্যে মসজিদের টাকা, গভীর নলকুপ মালিকানা ও গ্রামের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রায় ২০ বছর যাবত বিরোধ, মারধর ও মামলা পাল্টা মামলা ঘটনা ঘটে আসছে।
এনিয়ে ওই গ্রামে প্রায় মারধর হুমকি ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা অহরহ ঘটে থাকে। বুধবার দিবাগত রাতে শাহিন হোসেন ও তার লোকজন বীর মুক্তিযোদ্ধার ছেলে আমিনুল ইসলামকে ক্লাব ঘরে সালিশ বৈঠকের কথা বলে মুঠোফোনে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আসে।
এরপর শেখর নামের এক ব্যক্তির পারিবারিক ঘটনা ও টাকা ভাগবাটোয়ারা নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আমিনুল ইসলামকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারী কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। নিহতের স্ত্রী রুখসানা বেগম জানায়, তার স্বামী প্রথমে সেজদা গ্ররুপে ছিল পরে শাহিন গ্ররুপে যোগ দেয়। বিকেল সাড়ে চার’টায় শাহিন তাঁকে মুঠোফোনে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর সে আর বাড়ি ফিরেনি। সাড়ে ১০ টায় মুঠোফোনে এক অচেনা ব্যক্তি তাঁকে জানায়, তার স্বামীকে খুন করে লক্ষীপুর গ্রামের ক্লাব ঘরের পাশে ফেলে রাখা রয়েছে।
খবর পেয়ে এসে দেখেন স্বামীর শরীরে বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ক্ষত বিক্ষত করে হত্যা করা হয়েছে। আদমদীঘি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. ফজলে রাব্বী জানান, আমিনূলকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়েছিল কিন্তু এখানে নিয়ে আসার আগেই তিনি মারা যান।
আদমদীঘি থানার ওসি রেজাউল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রাত থেকেই সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। প্রকৃত খুনিদের চিহিৃত করে গ্রেপ্তারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান ও মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এঘটনার পর থেকে ওই গ্রাম পুরুষ শুন্য হয়ে পরেছে। #