পরেশ দেবনাথ, কেশবপুর, যশোর
কেশবপুরে বিভিন্ন এলাকার বোরো ক্ষেতে ব্লাস্টের আক্রমনে কৃষকরা হতাশ। এর মধ্যে কেশবপুর পৌরসভাৱ ভোগতি বিল, রাজনগর-বাকাবর্ষী বিল, বিলগরালিয়া ও গৌরীঘোনার বিলে বেশী আক্রান্ত হয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিলে গিয়ে দেখা যায়, ভোগতি বিলে পৌরসভার চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মোড়লের ৫০শতক ও কৃষক নাছিমের ২১ শতক জমির ধানে ব্লাস্টে আক্রান্ত হয়েছে। এছাড়া সদরের মধ্যকুল বিলে এক হেক্টর, উপজেলার রাজনগর-বাকাবর্ষী বিল গরালিয়ার কৃষক শাহাদাতের ১০ কাঠা জমিতে, কৃষক শাহজাহানের এক বিঘা, জাহাঙ্গীর আলমের ১০ কাঠা, কৃষক রানার ২১ শতক, কামাল দফাদারের ১৬ শতক, আব্দুল মজিদ দফাদারের ৯ কাঠা জমিতে ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে। পাথরঘাটা গ্রামের মাওলানা আব্দুল কাদেরের পারঘাটা বিলে এক বিঘা জমির ধান ব্লাস্টে ভরে গেছে। পৌরিঘোনা ইউনিয়নের আগরহাটি বিলে আব্দুল মান্নানের ১৫ বিঘা জমিতে, ভরত-ভায়না বিলে আমজাদ গাজীসহ সাড়ে ৭বিঘা, ভর্তের বিলে অসেক আলিসহ ৫ বিঘা জমিতে ফ্লাটে আক্রান্ত হয়েছে। এ ছাড়া বুড়ুলি, মানের বিল, সন্ত্রাসগাছা ও সুফলাকাটি বিলসহ উপজেলার বিভিন্ন বিলে প্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে ব্লাস্টে আক্রান্ত হয়েছে। স্থানীয় কৃষি অফিসের কোন সহায়তা এবং পরামর্শ কৃষকদের দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে চলতি বোরো মৌসুমে কেশবপুরে বোরো আবাদের লক্ষ মাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে কেশবপুর উপজেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিলো ১৪ হাজার ৫২০ হেক্টর জমি। সেখানে আবাদ করা হয়েছে ১৪ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে।
উপজেলার রাজনগর বাকাবর্শী গ্রামের কৃষক আমির আলী, শাহাজান আলী, জাহাঙ্গীর আলম, পাথরঘাটা গ্রামের মাওলানা আব্দুল কাদের বলেন, আমাদের বোরো ধানের ক্ষেত ১৮/২০ দিন আগে ব্লাস্টে আক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু কৃষি অফিসের কেউ খোঁজ-খবর নেননি। এছাড়া আমাদের বয়সে কোনদিন কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে আমাদের মাঠে আসতে দেখিনি। কৃষি অফিস থেকেও কোন সহায়তা বা পরামর্শ দেয়া হয়না ।
কেশবপুর পৌর ও সদর ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ বলেন, আমার এলাকায় পৌর মেয়র ও সাদিকসহ বেশ কয়েক জন কৃষকের জমিতে ব্লাস্টে আক্রান্ত হলেও বর্তমানে তা নিয়ন্ত্রনে আছে। গৌরিঘোনা ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবুল কাশেম বলেন, আমার ইউনিয়নের বিভিন্ন বিলে মোট ২৫ বিঘা ২৮ ধানের ক্ষেত ব্লাস্টে আক্রান্ত হয়েছে। আমার জানামতে ওইসব জমিতে সর ধরনের ওষুধ প্রয়োগ করা হলেও তাতে কোন কাজে আসেনি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও পর্যন্ত নিরুপন করা হয়নি।
পাঁজিয়া ইউনিয়ন ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মিলন কুমার দাস বলেন, আমার ব্লকে ২৮ জাতের ধান ২০ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে ২ হেক্টর জমিতে ব্লাস্টে আক্রান্ত হয়েছে। এছাড়া ২৮ জাতের ধান না লাগানোর জন্য আমি কৃষকদের নিরুৎসাহিত করেছিলাম কিন্তু কৃষকরা তা শোনেননি। তবে বর্তমানে আক্রান্ত সকল ধানের ক্ষেত্রে ওষুধ প্রয়োগ চলছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহামুদা আক্তার বলেন, আমার জানামতে এ উপজেলার ৯ হেক্টর জমির ২৮ জাতের ধানে ব্লাস্টে আক্রান্ত হয়েছে। এছাড়া বাকিটা বিলে আমরা সার্বক্ষনিক তদারকি করছি।