আকিমুল ইসলাম চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি:
চুয়াডাঙ্গা জেলায় রয়েছে ঐতিহ্যবাহী ডুগডুগি, শিয়ালমারি পশুর হাট সহ মোট ১১টি পশুর হাট। ঈদ-উল-আযহা অর্থাৎ কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গা জেলায় ডুগডুগি ,শিয়ালমারি, আলমডাঙ্গা সরোজগঞ্জ, পশুর হাট গুলো জম জমাট হয়ে ওঠে।
পশুর হাট গুলো শুরু হওয়ার সাথে সাথেই প্রায় প্রতি বছরই অজ্ঞান পার্টির মলম পার্টি, প্রতারণা সহ বিভিন্ন ধরনের অপ রাধমূলক কার্যক্রম দৌরাত্ম বেড়ে যায়।
এছাড়াও পরিবহনগুলোতেও বাসের যাত্রীবেশী অজ্ঞান পার্টি র সদস্যরা টার্গেট করে সাধারণ যাত্রীদের অজ্ঞান করে তাদে র কাছ থেকে নগদ টাকাসহ মূল্যবান সামগ্রী ছিনিয়ে নেও য়ার সংবাদও বিরল নয়। অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে মৃত্যুর ঘটনা প্রায় ঘটে থাকে।
চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( ক্রাইম এ্যান্ড অবস) নাজিম উদ্দিন আল আজাদ জানান, জেলায় গত ১৬ মে ফরিদপুরের ইউনুস শেখ শিয়ালমারি হাটে, ২৩ শে মে জীবন নগর কালীগঞ্জ সড়কের পশু হাসপাতালের সামনে সানোয়ার হোসেন (৪৫), ৩০শে মে আলমডাঙ্গা মোঃ শমসের আলী শি য়ালমারি হাটে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে। সর্বশেষ অজ্ঞা ন পার্টির সদস্যরা ৩ জুন ডুগডুগির হাটে নোয়াখালীর মোঃ জ সিম উদ্দিন কে টার্গেট করে চেতনা নাশক পুষ করে সর্বস্ব ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় হাতে নাতে বাগেরহাটের বাচ্চু মাঝি নামের একজন গ্রেপ্তার হয়।
এই ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা থানার মামলা নম্বর ৪ তারিখ ০৩/০৬/২০২৪ খ্রিস্টাব্দ রুজু। এই মামলার রুজুর পর চুয়া ডাঙ্গা জেলার পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান সাধা রণ মানুষের ঈদ উদযাপনকে নির্বিঘ্ন ও উৎসব মুখর করতে এবং সাধারণ মানুষ যাতে অজ্ঞান পার্টি মলম পার্টি প্রতারক শ্রেণীর অপরাধীদের দ্বারা সর্বস্বান্ত না হয়।
কোন ধরনের জীবনহানি যাতে না ঘটে ইত্যাদি বিভিন্ন কার্য ক্রম কে সামনে রেখে একটি নিরাপত্তা পরিকল্পনা প্রস্তুত করেছেন।
নিরাপত্তা পরিকল্পনায় প্রতিটি পশুর হাটে, প্রতিটি বড় বড় শপিংমল, বাস স্ট্যান্ড, রেলস্টেশন এলাকায় পোশাকধারী পুলিশের ডিউটির পাশাপাশি সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দা পুলিশ নিয়োগ করে এসব অপরাধীদের ফাঁদ পেতে ধরার নির্দেশনা প্রদান করেন।
পুলিশ সুপারের প্রত্যক্ষ দিকনির্দেশনা এবং পরামর্শক্রমে অজ্ঞান পার্টির এই চক্রকে গ্রেপ্তারে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা, জীবননগর থানা, দর্শনা এবং দামুড়হুদা থানা সহ চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের একাধিক টিম অভিযান পরিচালনা করতে থাকে।
পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় তাদেরকে হাতেনাতে গ্রেফতার এর উদ্দেশ্যে কৌশলে ফাঁদ পাতা হয়।
এই ফাঁদে আটকা পড়ে অজ্ঞান পার্টির সক্রিয় সদস্য মোঃ ইব্রাহিম ওরফে ইব্রা(৫০) পিতা মৃত ইসমাইল সাং সন্তোষপুর, মোঃ আব্দুর রাজ্জাক (৪৭) পিতাঃ মোঃ নওশাদ মন্ডল সাং মৃগমারী, মোঃ সালামত(৫৫) পিতা-মৃত রইচ উদ্দিন সাং ঈশ্ব রচন্দ্রপুর, ৪ মোঃ শাহাবুদ্দিন ওরফে সুখচান (৩০) পিতা মোঃ বিল্লাল হোসেন সাং বোয়ালমারী চুয়াডাঙ্গা।
এ সময় এদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় চেতনাশক ওষুধ সাম গ্রী। এর পূর্বে দামুড়হুদা থানায় রুজুকৃত মামলায় আরো দুই জন বাচ্চু মাঝি (৪৮) পিতা মৃত কাশেম, গ্রাম- দক্ষিণ রাজা পুর থানাঃ শরনখোলা জেলাঃ বাগেরহাট ও মোঃ হাসেম আ লী (৪৮) পিতা মৃত গোলাপ মন্ডল গ্রাম দুধ পাতিলা থানাঃ দামুড়হুদা চুয়াডাঙ্গা’কে গ্রেপ্তার করা হয়।
চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ এই অজ্ঞান পার্টি চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। এটা একটা সংঘ বদ্ধ চক্র। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে টার্গেট ভিকটিম কে চেতনা নাশক প্রয়োগ করে সর্বস্ব ছিনিয়ে নেওয়ার অভি যোগে একাধিক মামলা রয়েছে।
তদন্তকালে আমরা এই চক্রের বেশ কিছু নাম পেয়েছি তাদের চলমান কার্যক্রম মনিটর করা হচ্ছে।
এই চক্রের সকল সদস্যকে আইনের আওতায় আনার জন্য সুষ্ঠ তদন্ত এবং গ্রেপ্তার অভিযান চলবে।জনগণের জান-মাল রক্ষায় চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ সর্বদা আপনাদের পাশে রয়ে ছে।’