চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি॥ চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলী ইউনিয়নের মল্লিকবাড়ি-গরীবপুর সড়কটি যেন বিনোদন কেন্দ্রে পরিনত হয়েছে। সেখানে চৌগাছাসহ বিভিন্ন উপজেলার মানুষ সেটি দেখতে শত শত মানুষের ভিড়। এই সড়কটির দুই ধার দিয়ে রোপন করা হয় অসংখ্য নারিকেল গাছ।

প্রতিটি গাছই এখন বড় হয়ে অপরুপ এক সৌন্দর্য। অনেকে কিছুটা প্রশান্তির জন্য ছুটে আসেন এই সড়কে।

চৌগাছা-যশোর সড়কের মল্লিকবাড়ি নামক স্থানটি অত্যান্ত পরিচিত একটি এলাকা। মল্লিকবাড়ি মোড় হতে দক্ষিনে আকাবাকা হয়ে গ্রাম তারপর মাঠ দিয়ে একটি সড়ক মিশেছে গরীবপুর নিউ মার্কেট সড়কে। সারিবদ্ধ নারিকেল গাছের কারনে সড়কটি পরিচিতি এখন চৌগাছার গন্ডি পেরিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এমনটিই জানালেন সেখানে ঘুরতে আসা নানা বয়সের লোকজন।

সরেজমিন যেয়ে দেখা যায়, গোটা সড়কটি মানুষের পদচারনার মুখোর। এবার ঈদ শেষ হয়েছে প্রায় এক সপ্তাহ আগ। তারপরও এই সড়কে গেলে অনেকের মনে হবে এখনও চলছে ঈদের আমেজ। অনেকে বাড়ির ছোট্ট শিশুটিকে কোলে নিয়ে ফাঁকা মাঠের মাঝে মনোরম এই পরিবেশে এসেছেন ঘুরতে। অনেকে এসছেন বন্ধু বা পরিবার পরিজন নিয়ে।

সড়কের দুই পাশে উচু নারিকেল গাছ যেমন সৌন্দর্য বহন করছে, সেই সন্দর্য আরও বিকোশিত করে তুলেছে সড়কের ধার দিয়ে রোপন করা বোরো ধানের সোনালী শীর্ষ। গোধুলী লগ্নে মৃদু বাতাসে ধানের শীষ একটি আর একটির উপর আলত ভাবে পরশ বুলিয়ে যাচ্ছে যা আগত সকলকেই মুগ্ধ করছে।

সড়কে ঘুরতে আসা চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার শুটিয়া গ্রামের কবির হোসেন নয়ন বলেন, ঈদে চৌগাছার খালা বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলাম। লোকমুখে শুনে এই স্থানটিতে ঘূরতে এসেছি। অসাধারণ ভালো লাগার বিষয়, আমি মুগ্ধ।

চৌগাছার কৃতিসন্তান লন্ডন প্রবাসী হাসান মাহমুদ রাজ পবিত্র ঈদুল ফিতরের একদিন আগে বাড়িতে এসেছেন বাবা মায়ের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগির জন্য।

তিনি বলেন. প্রায় ১৫ বছর যাবত লন্ডনে অবস্থান করছি, সে ভাবে বাড়িতে আসা হয়না, যাই আসি ব্যস্তায় সময় পার হয়ে যায়। এবার ঈদে বাড়িতে এসে বন্ধুদের সাথে স্থানটিতে ঘুরতে এসেছি। এতো ভালো একটি পরিবেশ যা ভাষায় বোঝানো কষ্টসাধ্য। ফাকা মাঠ, মাঠের মাঝ দিয়ে সড়ক সেই সড়কের পাশে উচু উচু নারিকেলের সারি, আবার পাশেই সোনালী ধানের শীষ অপরুপ সৌন্দর্য।

প্রতিটি নারিকেল গাছ সংরক্ষনের পাশাপাশি ফাকাস্থান গুলোতে আরও গাছ রোপন করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। ঢাকার মধ্যবাড্ডা হতে মিজানুর রহমান হৃদয় এসেছেন চৌগাছায় নিকট আত্মীয় বাড়িতে। তিনিও লোকমুখে শুনে এসেছেন এই স্থানটিতে। তিনি বলেন, শহরের ইট সুরকির বড়বড় দালান আর যানবাহনের শব্দ ও ধোয়ায় যারা অতিষ্ঠ তারা এই স্থানটিতে এলে সহজে আর বাড়িতে ফিরবেনা। ভিষন ভালো একটি জায়গা।

ঘুরতে আসা কামরুজ্জামন, ইমাম হোসেন, মেহেদী হাসানসহ অনেকে বলেন, টাকা খরচ করে দেশের বিভিন্ন এলাকা এমনকি বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। বাড়ির কাছে এই সড়কটিতে এলে সকলের ক্লান্তি দুর হবে।

সিংহঝুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ মল্লিক বলেন, মল্লিকবাড়ি-গরীবপুর সড়কটির দৈর্ঘ দেড় থেকে দুই কিলোমিটার।

এই সড়কের ফাকাস্থানে মাঠের মধ্যে নারিকেল গাছ রোপনের কারনে সবার কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রতি দিনই সময় পেলে অনেকে এখানে ঘুরতে আসেন। প্রতিটি গাছ সংরক্ষনের পাশাপাশি ফাকাস্থান গুলোতে নতুন ভাবে গাছ রোপনের পরিকল্পনা আছে।

 

 

 

 

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *