আফজাল হোসেন চাঁদ, ঝিকরগাছা : যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার আসন্ন ঈদ উল আযহা উপলক্ষে গরিব অসহায় হতদরিদ্র পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ভিজিএফ (ভায়া বিলিটি গ্যাপ ফান্ডিং) এর উপকারভোগীর তালিকা প্রণয়নের উপর উপজেলার খাদ্য গুদাম থেকে ইউপি চেয়ারম্যানরা চাউল বুঝে নেওয়ার পর ৫নং পানিসারা ইউনিয়নের কিছু চাউল উধাও।
এছাড়াও ৫নং পানিসারা ও ০৯ হাজিরবাগ ইউনিয়ন পরিষ দে চাউল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
তথ্য অনুসন্ধ্যানে দেখা যায়, দেশে আগামী ১৭জুন ত্যাগের মহিমায় উদযাপিত হবে ঈদ উল আযহা। এ উপলক্ষে গরিব অসহায় হতদরিদ্র পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ভিজি এফ এর উপকারভোগীর ইউনিয়নের ওয়ার্ড ভিত্তিক তালিকা প্রণয়নের পর জন প্রতি ভিজিএফ এর ১০ কেজি করে চাল বিতরণের কথা থাকলেও উপজেলা পরিষদের পক্ষে বলে দেওয়া হয়েছে জন প্রতি ০৯ কেজি ৭শত গ্রাম করে চাউল বিতরণ করতে।
এ বিষয়ে সকাল ১১টার সময় ৫নং পানি সারা ইউনিয়ন পরি ষদের চাউল উধাও হওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, পূর্বের দিন ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও ইউপি সদস্যদের নিয়ে মিটিং করে বলেন আগামীকাল (শনিবার) সকাল সাড়ে ৯টার সময় পরিষদ থেকে চাউল বিতরণ করা হবে। যথারীতি ট্যাগ অফিসার, সচিব ও ইউপি সদস্যরা পরি ষদের আসার পূর্বে সকাল সাড়ে ৬টার সময় থেকে ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন পিপুল নিজ ক্ষমতার ব্যবহার করে তার সাথের ইউপি সদস্য সেলিম হোসেন সহ ব্যক্তিগত ৫জন কর্মী নিয়ে চাউল দেওয়া শুরু করেন।
পরবর্তীতে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পরিষদে সবাই হাজির হয়ে দেখছেন জনবল দাড়িয়ে আছে কিন্তু চাউলের বস্তা খালি, চাউল উধাও। এবারের এই ইউনিয়ন থেকে গরিব অসহায় হতদরিদ্র পরিবারের ১২শত ৫১ জনের চাউলের বরাদ্দ থাকলেও বরাদ্দকৃত ব্যক্তিদের বাড়িতে কার্ড পৌছে দেওয়ার পরও চাউল বিতরণের সময় প্রায় ৫০জনের চাউল না দেওয়া পরিকল্পনা তৈরী করা হয় বলে ইউপি সদস্যরা বলেন। তাৎক্ষনিক ইউনিয়নের দায়িত্বরত ট্যাগ অফিসারের প্রতিনিধি ও সংবাদকর্মীদের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি সামাল দিতে ইউপি চেয়ারম্যান নিজ অর্থ হতে বাজার থেকে তড়িঘ ড়ি করে ২৫ কেজির ১২বস্তা মোটা চাউল ক্রয় করে ৩০জ নের মধ্যে বিতরণ করে ঘটনা সামাল দেন এবং খাদ্য গুদাম থেকে চাউল কম দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন।
এছাড়াও পশ্ববর্তী ০৯ হাজিরবাগ ইউনিয়ন পরিষদে গরিব অসহায় হতদরিদ্র পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ভিজি এফ এর উপকারভোগীর জন প্রতি ভিজিএফ এর ১০ কেজি করে চাল বিতরণের কথা থাকলেও দেওয়া হয়েছে ০৯কেজি ৩—৪শত গ্রাম চাউল। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সরকা রি কর্মকান্ডের বিষয়ে পূর্বেও অনেক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক পানিসারা ইউপি সদস্যরা জানান, ১২ শত ৫১ জনের চাউলের বরাদ্দের চাউল নিয়ে আসা হয়ে ছে কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে চাউল কম।
তাহলে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চাউল উধাও হয়ে কোথায় গেল ? এছাড়াও আমাদের অনুস্থিতিতে কি করে একা একা চাউল বিতরণ করল ? উক্ত বিষয়ে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহ ণের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন।
পানিসারা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ফরহাদ হোসেন বলেন, আমার আশার পূর্বেই চেয়ারম্যান সাহেব চাউল বিতরণ করে ছেন।
পানিসারার ট্যাগ অফিসার প্রতিনিধি উপ সহকারী প্রকৌশলী মামুনুর রশীদ বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে আমার আসার পূর্বে ই চাউল বিতরণ করা হয়ে গেছে। কিছু লোকের বাকি আছে।
আমি আমার উর্দ্ধতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। যাদের বাকি আছে তাদেরকে চাউল দেওয়া জন্য বলা হয়েছে।
পানিসারা ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন পিপুল বলেন, আমি খাদ্য গুদামে গাড়ি পাঠিয়ে চাউল এনেছি। আমি তো আর মেপে আনিনি।
কি ভাবে কম পড়েছে আমি বলতে পারবো না। যা কম পড়ে ছে আমি বাজার থেকে কিনে এনে তাদরেকে দিয়েছি।
হাজিরবাগ ইউপি চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিন্টু বলেন, বালতি ধরে দেওয়া হচ্ছে যার কারণে দুই এক টাই একটু কম হতে পারে।
উপজেলা খাদ্য গুদাম অফিসার পলাশ আহমেদের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার লাল্টু মিয়া ১০ কেজি করে চাল বিতরণের স্থলে কম দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাও য়া হলে তিনি বলেন, এখানে কিছু শুভংকরের ফাকি রয়েছে।
যেমন একটা ৫০কেজি চাউলের বস্তাসহ না পরিমাপ করলে আপনি বুঝতে পারবেন না। এক বস্তা চাউলের বস্তা সহ যদি ৫ কেজি হয় তাহলে বস্তার ওজন মনে হয় ৫০০গ্রাম বাদ যা বে।
তাহলে এই ৫০০গ্রাম চাউল তো সবার মাঝে পড়বে উপ জেলা নির্বাহী অফিসার নারায়ণ চন্দ্র পালের সাথে একা ধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
—