রহমত আরিফ ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতাঃ ঠাকুরগাঁওয়ে লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলার বাজারগুলোতে লিচু বিক্রি শুরু হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় লিচুর গ্রাম নামে পরিচিত পৌর শহরের মুন্সিরহাটে বড়-ছোট বাগানগুলি থেকে লিচু পারার কাজ চলছে। এছাড়াও মহাসড়কের ধারে অস্থায়ী ভিত্তিতে হাট বসেছে। হাটে ছোট নারী-শিশু, যুবক, বৃদ্ধ বিভিন্ন বয়সীরা লিচুর পসরা নিয়ে বসেছেন।
বিভিন্ন দামে বিক্রি করছেন লিচু। গতকাল শনিবার বাগানগুলিতে গিয়ে দেখা যায় শ্রমিক লাগিয়ে গাছ থেকে লিচু পারার পর সেগুলো থোকায় থোকায় বাধা হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ব্যবসায়িরা আসছেন লিচু কিনতে।
পৌর শহরের বিভিন্ন স্থান ও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ইতিমধ্যে বাজারে উঠতে শুরু করেছে লিচু। এর মধ্যে পৌর শহরের কালিবাড়ী বাজার, বাসস্ট্যান্ড, ঠাকুরগাঁও রোড, মুন্সিরহাট, গোধুরী বাজারসহ জেলার অন্যান্য বাজারে আপাতত গোলাপী জাতের লিচু বিক্রি করতে দেখা যায়। খোলা বাজারে প্রতি ১শ গোলাপী জাতের লিচু বিক্রি হচ্ছে ২শ থেকে আড়াইশ টাকায়।
পৌর শহরের মুন্সিরহাট এলাকায় রুবেল ইসলাম, রাজা, বাদশাসহ বেশ কয়েকটি লিচুর বাগান রয়েছে। বাগানগুলো দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মৌসমী ফল ব্যবসায়ীরা চুক্তিভিত্তিক কিনে থাকেন।
বগুড়া জেলার বড়–য়া এলাকার মৌসুমী ফল ব্যবসায়ি গোপাল চন্দ্র মুন্সিরহাটে ৯টি বাগান কিনেছেন। বর্তমানে গোলাপী জাতের লিচু ভাঙ্গার কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়াও চায়না-৩, মাদ্রাজী ও বোম্বে জাতের লিচু আর কিছুদিন পর গাছ থেকে পারা শুরু হবে।
আর বাগানের চারপাশের এলাকার নারী-পুরুষেলা বাগানে লিচু পেরে ও গুছিয়ে দিয়ে ৫-৭শ টাকা আয় করছেন। পাশাপাশি লিচু কুড়িয়ে ৫-৭শ লিচু সংগ্রহ করে বাড়ির পাশেই মহাসড়কের ধারে বিক্রি করছেন বিভিন্ন দামে। এতে করে নারী, শিশু, যুবক, বৃদ্ধরা লিচুর মৌসুমী ব্যবসা করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
বাগানে লিচু তুলা ও গোছানো কাজে নিয়োজিত নারী শ্রমিক নুরী, হেনা, ময়না জানান, বাগানে লিচুর ডাল থেকে লিচুর থোকা গুছিয়ে দিয়ে দিনপ্রতি ৫-৭শ টাকা আয় করছেন তারা।
এ কাজে আশপাশের এলাকার অনেক নারী,পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধরাও যোগ দিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
বাগানের মালিক রুবেল ইসলাম বলেন, বেশ কয়েকদিন থেকে লিচু পারার কাজ চলছে। বর্তমানে শুধু গোলাপী জাতের লিচু ভাঙ্গা হচ্ছে।
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়িরা বাগান থেকে প্রতি হাজার লিচু ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২শ টাকায় কিনে নিয়ে যান। গত বছরের চেয়ে এ বছর দাম কিছুটা বেশি পাচ্ছি।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ সিরাজুল ইসলাম ভোরের ডাককে জানান, ইতিমধ্যে কৃষি বিভাগ থেকে বাগান মালিকদের যাবতীয় পরামর্শ ও সেবা প্রদান করা হয়। এ বছর লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। গত বছর বসতবাড়িসহ ২৫৬টি ছোট-বড় বাগান ছিল।
এতে ৯০৫ হেক্টর জমিতে মোট ৫ হাজার ৯৯৮ মেট্রিক টন লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধাররিত ছিল। তবে এ বছর লিচুর আবাদ কিছুটা বেড়েছে এবং বাগানীরা লিচুর ন্যার্য্য মূল্য পাবেন বলে ধারনা করা হচ্ছে।