রহমত আরিফ ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতাঃ ঈদের আগে গরিবের ভিজিএফের চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জনপ্রতি দশ কেজির পরিবর্তে ৭ থেকে ৯ কেজি করে চাল দেয়া হচ্ছে। তবে চাল কম দেওয়ায় কথা চেয়ারম্যানকে বলতে গেলে উল্টো বলেন- ফ্রি চাল পাও এই তো, বেশি আবার অভিযোগ। এতে ক্ষুদ্ধ ওই ইউনিয়নের সুবিধাভোগীরা।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার দেবীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ওঠে। দরিদ্র ও অস্বচ্ছলদের ভিজিএফ কার্ড না দিয়ে না দিয়ে স্বচ্ছলদের কার্ডের মাধ্যমে চাল দেয়ার অভিযোগও তোলেন ভুক্তভোগীরা। বুধবার (১৯ এপ্রিল) সদরের বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে হত-দরিদ্রদের মাঝে ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হয়।
দেবীপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা বৃদ্ধ জয়নুল আবেদীনসহ আরো দু’জন টিপ সই দিয়ে ভিজিএফের ত্রিশ কেজি ওজনের একটি খোলা চালের বস্তা নেন। দোকানে ওজন দিয়েন দেখেন চাল ত্রিশ কেজি নেই, ছাব্বিশ কেজি- বাকি চাল উধাও। এ কথা চেয়ারম্যানকে বলতে গেলে চেয়ারম্যান রেগে গিয়ে বলেন ফ্রি চাল পাচ্ছেন এটাই বেশি।
একই ইউনিয়নের তরিকুল ইসলাম সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অপেক্ষার পর তিনজন মিলে ৩০ কেজি চাল পান। তিনিও বাইরে এক দোকানে চালের বস্তাটি ওজন দিয়ে দেখেন বস্তায় চাল আছে সাতাশ কেজি। তরিকুল চেয়ারম্যানকে এ কথা বলতে যাবে- এমন সময় রাস্তায় থাকা পরিষদের দু’জন সদস্য থামিয়ে দিয়ে বলেন, চেয়ারম্যান অনেক রেগে আছেন, চাল যা পাইছেন তা নিয়ে চলে যান। পরে সমস্যা হতে পারে।
তরিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের অভিযোগ করে বলেন, প্রায় ২৫ জন চাল ওজন দিলো কিন্তু কেউ সঠিক ভাবে চাল পায়নি। কেউ পেয়েছে সাত-আট কেজি আবার কেউ নয় কেজি। কিছু বললেই চেয়ারম্যান রাগ করে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন।
অভিযোগ রয়েছে, ওই ইউনিয়নে অস্বচ্ছলদের ভিজিএফ কার্ড না দিয়ে স্বচ্ছলদের কার্ড দেয়া হয়েছে। স্বচ্ছল ব্যক্তিরা সেই চাল গরিবদের কাছে বিক্রি করে দেয়।
চাল কিনতে আসা এক বৃদ্ধের সাথে কথা হয়। নামপ্রকাশ না করার শর্তে তিনি জানান, মুই গরিব মানুষ। মুই কোন চাউনের কার্ড পাওনি। কাহোও মোক কিছু দেনা। আজি শুনিনু বোডড (পরিষদ) নাকি চাউল দিবে। আসেহেনে শুনুনু লোকলা চাউল পাহেনে বিকাছে (বিক্রি)। মুইহো মাইছের কাছত ৩০০ টাকা ধার করে দশ কেজি কিনিনু এলা দেখেছু আট কেজি। মোক গরিব লোকটাক ঠকাবা নাগিবে। কি লাভ মোক ঠকাহেনে।