আলিফ হোসেন, তানোরঃ
রাজশাহীর তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম রাব্বানীর মোটরসাইকেল শোডাউন নিয়ে মিশ্রুপ্রতিক্রিয়া ও অংশগ্রহণকারিরা কারা সেটি নিয়েও গুঞ্জন উঠেছে।
জানা গেছে, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-১ ভিআইপি সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ঘোষণা দিয়ে গোলাম রাব্বানী গত ২৬ এপ্রিল বুধবার প্রায় দু’শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে শোডাউন দিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের আয়োজনে শো-ডাউনের কথা বলা হয়। কিন্ত্ত তানোরের দুটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়ন (ইউপি) এবং গোদাগাড়ীর দুটি পৌরসভা ও নয়টি ইউনিয়নের (ইউপি)
আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের দায়িত্বশীল সাংগঠনিক কোনো নেতৃত্ব শোডাউনে ছিলেন না। যেখানে সংঠনের দায়িত্বশীল কোনো নেতৃত্ব নাই, সেখানে সংগঠনের কর্মী আশার তো প্রশ্নই উঠে না, তাহলে তার শোডাউনে ছিলো কারা ?
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এদিন শোডাউনে অংশগ্রহণকারিদের সিংহভাগ ছিল বিএনপি-জামাত মতাদর্শী। এবং জেলা আওয়ামী লীগের পদ হারানো বিপদগামী কতিপয় নৌকাবিরোধী নেতার অনুসারী।
স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের ভাষ্য, উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নে গোলাম রাব্বানী দুবার প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে দুবারই বিএনপির দুর্বল প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছেন। নৌকাবিরোধী অবস্থানের কারণে দলীয় পদ হারিয়েছেন এমনকি মুন্ডুমালা পৌর নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে ব্যর্থ হয়েছেন,
এখন প্রশ্ন তাহলে তিনি এমপির মনোনয়ন কি বিবেচনায় পাবেন। আওয়ামী লীগের প্রায় দু’দশকের অপ্রতিদন্দী ও পরিক্ষীত নেতৃত্ব ফারুক চৌধুরীকে বঞ্চিত করে রাব্বানীকে কেনো নৌকার মনোনয়ন দিবেন, এর বাক্ষ্যা কি কারো কাছে আছে।
এছাড়াও বিভিন্ন নির্বাচনে যারা নৌকার বিরোধীতা করেছে তাদের দলের কোনো দায়িত্বশীল পদে রাখা হবে না, কোনো নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের তো প্রশ্নই ওঠেনা এমন ঘোষণা দেয়া হয়েছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।
আর দুই-একশো মোটরসাইকেলের শোডাউন দিয়ে যদি এমপি মনোনয়ন পাওয়া যায় ? তাহলে তো ফারুক চৌধুরীর দু-চার হাজার কর্মচারী ও হাজার হাজার শুভাকাঙ্খি রয়েছে।
আবার নৌকা প্রতিকে যিনি উপজেলা নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারেন না, দলে নিজের পদ রক্ষা করতে না, পৌর নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পায় না তিনি তানোর – গোদাগাড়ীর মতো জায়গায় এমপি হবেন কি ভাবে।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ দেশের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। দলের যে কেউ মনোনয়ন চাইতে পারে।
কিন্ত্ত মনোনয়ন প্রত্যাশী দাবি করে নির্বাচনী প্রচারণার নামে দলীয় এমপির বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা করা কি একই বিষয়? বিতর্কের খাতিরে যদি ধরেই নেয়া হয় তিনি মনোনয়ন পাবেন, তাহলে তিনি কি ফারুক চৌধুরীকে বাইরে রেখেই নির্বাচনে বিজয়ী হবেন।
যদি সেটা না হয় তাহলে তিনি এমপি ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে কেনো প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছেন। তার প্রধান কাজ হলো নৌকার পক্ষে জনমত গড়ে তোলা, তবে তিনি সেটা না করে দলীয় এমপির বিরুদ্ধে লাগাতার প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছেন। তার এসব দেখে অনেকে বলছে, ‘সুপারি গিলতে পারে না, নারিকেল গেলার সখ’।
আবার অনেকে বলছে তিনি যদি সত্যিই এমপি নির্বাচন করতে চান তাহলে তৃণমূলে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের বর্ধিতসভা বা কর্মীসভা করে নেতাকর্মীদের সক্রিয় করার পাশপাশি আওয়ামী লীগের উন্নয়ন ও অর্জনের চিত্র সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরে নৌকার পক্ষে জনমত গড়তে কাজ করুক। তিনি মমোনয়ন পেলে তো তৃণমূলের এসব নেতাকর্মীরাই ভোট করবেন।
সূত্র জানায়, রাজশাহী-১ আাসনে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সাংসদ আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধূরীর কোনো বিকল্প নাই, তেমন কোনো নেতৃত্ব গড়ে উঠার সেই সম্ভবনাও নাই।
আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশস্ত ও পরীক্ষিত সৈনিক তৃণমূলের আস্থা এবং ভরসার প্রতিক এমপি ফারুক চৌধূরী আবারো আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হচ্ছেন সেটা নিশ্চিত।
অথচ কোনো ভাবেই দলীয় মনোনয়ন পাবেন না এটা নিশ্চিত হয়েও একশ্রেণীর বগী নেতা এমপি ফারুকের মনোনয়ন ঠেকানোর ঘোষণা দিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাশী বলে মাঠে নেমে আওয়ামী লীগের অত্যন্ত সম্ভবনাময় গোছানো মাঠ নস্ট করছে।
এসব দেখে তৃণমূল এদের কুঁয়োর ব্যাঙ হয়ে সমুদ্র জয় বা সুপারি গিলতে পারে না নারিকেল গেলার সখ’ বলে অভিহিত করেছে।
রাজশাহী জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ এবং সহযোগেী সংগঠনের দায়িত্বশীল কোনো নেতাকর্মী তার সঙ্গে না থাকলেও তিনি এমপি মনোনয়ন প্রত্যাশী দাবি করায় তাকে নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে এসব আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে।