Related Articles
প্রভাষক জাহাঙ্গীর আলম :
মানবজীবন একটি পরীক্ষার ময়দান। এই জীবনে মানুষ যেভাবে কাজ করে, তেমনি তার পুরস্কার লাভ করে।
ইসলাম ধর্মের অধিকাংশ পুরস্কার ঈমানের সহিত সম্পর্ক। কেননা ঈমান না থাকলে আল্লাহ তায়ালার কাছে পরকা লের জন্য কোন পুরস্কার নেই।
তবে ঈমানহীন লোকদের জন্য ভালো কাজের বিনিময় আল্লাহর পক্ষ থেকে দুনি য়ায় দিয়ে দেওয়া হয়।
কিন্তু এমন একটি বিষয়ে আলো চনা করব যা কেবল ঈমানের সাথে সম্পর্কিত নয়।
এই সুবিধা দুনিয়াতেই নগতে সবাই পাবে। আর এই কা রণেই ইসলাম এমন একটি পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা। যা শুধু পরকালের নয়, দুনিয়ার কল্যাণকেও গুরুত্ব দিয়েছে।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, এমন তিনটি কাজ আছে যার প্রতিদান মানুষ দুনিয়াতেই পেয়ে যায় — হোক সে মুসলিম বা অমুসলিম।
১️. যে দান করবে, সে দুনিয়ায় সম্মান পাবে।
দান বা সদকা এমন একটি কাজ যা মানুষের অন্তরকে প্রশান্ত করে এবং সমাজে সম্মান এনে দেয়।
দান বা সদকা এমন একটি কাজ যা মানুষের অন্তরকে প্রশান্ত করে এবং সমাজে সম্মান এনে দেয়।
আল্লাহ তায়ালা বলেন- يَمْحَقُ اللَّهُ الرِّبَا وَيُرْبِي الصَّدَقَاتِ “আ ল্লাহ সুদ ধ্বংস করেন এবং দান-সদকা বৃদ্ধি করেন।” সূরা বাকারা ( আয়াত নং ২৭৬) রাসূল ﷺ আরও বলেন—“সদ কা সম্পদ কমায় না; বরং আল্লাহ তাতে বরকত বৃদ্ধি করে ন।” (সহীহ মুসলিম, হাদীস: ২৫৮৮) দান শুধু দরিদ্রকে সাহায্য নয়, এটি আত্মার পরিশুদ্ধি এবং সমাজে ভালো বাসা সৃষ্টির মাধ্যম। দানশীল মানুষ সর্বত্র সম্মানিত হয়; এমনকি অমুসলিম সমাজেও দানশীলদের মর্যাদা অপ রিসীম।
২️. যে মানুষের সেবা করবে, সে নেতৃত্ব পাবে। মানুষের সেবা করা ইসলামি চরিত্রের মূল বৈশিষ্ট্য।
রাসূল ﷺ বলেছেন—“সৃষ্টিকুলের মধ্যে উত্তম সে ব্যক্তি, যে মানুষের জন্য অধিক উপকারী।” (আল-মুজামুল আ ওসাত, তাবারানী)
আরও বলা হয়েছে— “মানুষের নেতা সে-ই, যে তাদের সেবা করে।” (কানযুল উম্মাল, হাদীস: ৯৪৩০) যে ব্যক্তি নিঃস্বার্থভাবে মানুষের সেবা করে, সমাজ তাকে ভালো বাসে, তার পরামর্শ গ্রহণ করে, এবং একসময় সে নেতৃ ত্বের আসনে আসীন হয়। নেতৃত্ব আসলে সেবারই পুর স্কার।
৩️ যে ক্ষমা করবে, সে দুনিয়ায় প্রশান্তি পাবে ক্ষমা এমন এক গুণ যা শুধু অন্যকে নয়, নিজেকেও মুক্ত করে।
আল্লাহ তায়ালা বলেন— فَمَنْ عَفَا وَأَصْلَحَ فَأَجْرُهُ عَلَى اللَّهِ
“যে ক্ষমা করে ও সংশোধনের চেষ্টা করে, তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে।”
“যে ক্ষমা করে ও সংশোধনের চেষ্টা করে, তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে।”
সূরা আশ-শূরা (আয়াত নং ৪০) রাসূল ﷺ বলেছেন—“যে ক্ষমা করে, আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করেন।”(সহীহ মুসলিম, হাদীস: ২৫৮৮) যে মানুষ প্রতিহিংসা নয়, বরং ক্ষমার মাধ্যমে সম্পর্ক মেরামত করে, তার হৃদয় শান্তিতে ভরে যায়।
দান, সেবা ও ক্ষমা—এই তিনটি গুণই মানবতার ভিত্তি।
যে ব্যক্তি এগুলোকে জীবনে ধারণ করবে, সে দুনিয়ায় সম্মান, নেতৃত্ব ও প্রশান্তি লাভ করবে, আর পরকালে পাবে জান্নাতের প্রতিদান।
যে ব্যক্তি এগুলোকে জীবনে ধারণ করবে, সে দুনিয়ায় সম্মান, নেতৃত্ব ও প্রশান্তি লাভ করবে, আর পরকালে পাবে জান্নাতের প্রতিদান।
রাসূল ﷺ বলেন: দুনিয়ায় দয়া করো, আকাশের অধি পতি তোমার প্রতি দয়া করবেন।” (সুনান আত-তিরমিযী, হাদীস নং : ১৯২৪ )
অতএব, আসুন আমরা দানশীল হই, মানুষের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করি, এবং অন্যকে ক্ষমা করতে শিখি। এই তিনটি কাজেই নিহিত আছে দুনিয়ার কল্যাণ ও আ খেরাতে মুক্তির সাফল্য। তবে আখেরাতের সাফল্যের জন্য ঈমান থাকা শর্ত। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবা ইকে কবুল করুন।
লেখক : প্রভাষক জাহাঙ্গীর আলম, সাংবাদিক, কলামিস্ট ও মানবাধিকার কর্মী। ০১৯১১৬০৪৪৫৫
Bartabd24.com সব খবর সবার আগে