মোঃ ফজলুল হক,পাবনা প্রতিনিধিঃ পাবনার চাটমোহর উপজেলায় বড় ভাইয়ের বিক্রি করা জমি দখল নিতে বিষ প্রয়োগ করে ধান নষ্ট ও ফসল কেটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। জমির ক্রেতাদের ওপর হামলা-মারধর এবং হুমকি-ধামকি দিয়ে জমি দখলেরও চেষ্টাও করছে অভিযুক্তরা। এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার চেয়ে ক্ষতিগ্রস্থরা পাবনার চাটমোহর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থরা বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাচ্ছেন না।
বিভিন্ন সময় বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে এসে হামলা এবং মারধর করা হচ্ছে জমি ক্রেতাদের। অভিযুক্তরা হলেন- পাবনার চাটমোর উপজেলার পার্শ্বডাঙ্গা ইউনিয়নের আলম নগরের মৃত গহের আলী সরকারের দুই ছেলে গোলাম মোস্তফা বকুল ও গোলাম কিবরিয়া। স্থানীয়রা জানান, গোলাম কিবরিয়া পাবনার শহরের আর এম একাডেমির প্রধান শিক্ষক ছিলেন এক সময়। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মৃত গহের আলী সরকারের বড় ছেলে গোলাম মওলার সন্তানরা বিদেশে এবং তিনি স্থায়ী ভাবে ঢাকায় বসবাস করায় এলাকার জমি গুলো দেখ ভাল করে ভোগ দখল করে আসছিলেন দুই ভাই গোলাম মোস্তফা বকুল ও গোলাম কিবরিয়া। কিন্তু সম্প্রতি গোলাম মওলা উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া জমিগুলো প্রতিবেশীদের কাছে বিক্রি করে দেন। এ নিয়েই ক্ষুব্দ হোন জমির উপকার ভোগী দুই ভাই।
তারা ক্রেতাদের কাছ থেকে তাদের বড় ভাইয়ের জমি দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠেন এবং হুমকি দিতে থাকেন। সর্বশেষ গত ১১ মার্চ কোনো এক সময়ে জমির ক্রেতা একই গ্রামের মোঃ আঃ সোবাহান সরকারে ছেলে মোঃ সানিউল সরকারের গ্রামের জমিতে রোপণ কৃত ধান ক্ষেতে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে রাতের আধারে বিষ প্রয়োগ করে ফসল নষ্ট করা হয় বলে জানান সানিউল সরকার।এর আগে জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে সোবহান সরকারের বাড়িতে হামলা করে তার স্ত্রী মোছা শাহেনা খাতুনকে মারধর করা হয়।
এছাড়াও একই এলাকার একাধিক জনকে হুমকি-ধামকি দিয়ে জমির দখল নেয়ার চেষ্টা করছেন অভিযুক্তরা। ইতোমধ্যে আব্দুল জলিলসহ কয়েক জনের জমি দখলও নিয়েছেন তারা। এলাকাবাসীরা জানান, গোলাম মওলা সাদা মনের মানুষ। তার সন্তানরা স্থায়ী ভাবে বিদেশে বসবাস করেন। তিনিও ঢাকা থেকে বিদেশে চলে যাবেন। এজন্য গ্রামের জমিগুলো বিক্রি করতে চেয়ে ছিলেন। কিন্তু তার ভাইয়েরা জমিগুলো নিজেরাও কেনেন না এবং বাহিরেও বিক্রি করতে দেন না। গোলাম মওলা স্বপরিবারে বিদেশে স্থায়ী হলে এই জমিগুলো বিনা টাকা-পয়সায় ভোগ দখলের সুযোগ পাবেন তার ভাইয়েরা এজন্য এলাকা বাসীদের জমি কিনতে নিষেধ করেন তারা। কিন্তু সম্প্রতি গোলাম মওলার অনুরোধে তার জমি কেনেন এলাকাবাসী এবং জমিগুলো ক্রেতাদের দখলে দিয়ে তিনি ঢাকায় চলে যান। এরপর থেকেই তার ভাইয়ের ক্রেতাদের ওপর জুলুম-নির্যাতন করছেন। এ বিষয়ে অভিযোগ করে জলিল প্রামানিক জানান, আমিও মওলার কাছ থেকে জমি কিনেছিলাম আমার সেই জমি আমাকে দখল দিচ্ছেনা গোলাম মোস্তফা বকুল ও গোলাম কিবরিয়া।
এ বিষয়ে সানিউল সরকার আরো জানান, আমাদের এলাকায় কোন ঝামেলা নেই। দীর্ঘদিন যাবদ এলাকায় গোলাম মোস্তফা বকুল ও গোলাম কিবরিয়ার ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছেন এলাকার অনেকেই। তারা পাবনা শহরে থেকে অনেক ক্ষমতা দেখায় শহরে গেলে পিটাবে বলে হুমকিও দেয়। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত গোলাম মোস্তফা বকুল ও গোলাম কিবরিয়া। তাদের দাবি- ১৯৯৫ সালে বাবা মারা যাওয়ার পরই বড় কাগজ পত্র নিয়ে ঢাকায় চলে গেছেন। কিন্তু এইসব জমির কোনও বাটোয়ারি তিনি করেননি। বাটোয়ারা না করেই তিনি এখন ভালো ভালো অংশটুকু অন্যদের কাছে বিক্রি করছেন।
আমরা বার বার বলার পরও তিনি আমাদের সঙ্গে বসেন না, কথাও বলেন না। আর জমিতে বিষ দিয়ে কে বা কারা ফসল নষ্ট করেছে সেবিষয়ে আমরা কিছু জানি না। এ বিষয়ে চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দিন বলেন, জমিতে বিষ প্রয়োগ করে ক্ষেত নষ্ট করার বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।