আলিফ হোসেন,তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলা  আওয়ামী লীগ নেতার ফেসবুকে
কমেন্টে সমালোচনার ঝড়! Dear ভালোবাসা Harami, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্ট করেন “সামনে বিয়ে করবো কি গাছের খাট বানালে ভালো হবে অভিজ্ঞদের পরামর্শ চাচ্ছি..!” ফেসবুকের এমন পোস্টে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম (Adv Abdus Salam) তার ফেসবুক আইডি থেকে কমেন্ট করেন “ডুমুর গাছের কাঠ দিয়ে খাট বানালে বাসর রাতে, বউ শান্তি পাবে। জয় বাংলা”। তিনি তার কমেন্টে “জয় বাংলা”শ্লোগানটি ব্যবহার করায় পর থেকে বিভিন্ন ব্যক্তি তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক আইডি থেকে নানা ভাবে মন্তব্য করতে থাকেন। এর পর থেকে শুরু হয় ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও আলোচনা সমালোচনা ঝড়।
মোহনপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আহসান হাবিব রনি (Ahosan Habib Rony) তার ফেসবুক আইডি লিখেছেন “জয় বাংলার সাথে ডুমুর কাঠের খাঠের সম্পর্ক কি….জয় বাংলা জাতীয় স্লোগান যেখানে সেখানে ব্যবহার করেন”। Anonno Masud তার আইডিতে কমেন্টে করেছেন, এরায় মোহনপুর টা চিবিয়ে খাচ্ছে, জয় বাংলার লেবাস নিয়ে, যোগ্য মানুষ কে মূল্যয়ন করতেও চাই না বা করতেই দেয় না, মামলা হামলার ভয় দেখায়, মোহনপুর টা তামা তামা করে ফেলছে, এই পরিবারকে না সরালে মোহনপুর এর যা আছে সেটাও শেষ হয়ে যাবে। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু। Md Sanowar Khan কমেন্টে লিখেছেন, হায়রে আওয়ামী লীগ।
আজ পর্যন্ত জয় বাংলা কোথায় বলা লাগবে আর কোথায় লেখা লাগবে জানলাম না। মোহনপুর উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি বিন বিল্লাহ ( Md Binbillah Binbillah) তার ফেসবুক আইডি থেকে কমেন্ট করেছেন, জয় বাংলা জাতীয় শ্লোগান, এর ব্যবহারে সংযত হওয়া দরকার। মানষিক ভারসাম্য হীন মানুষ ছাড়া এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধীরা ছাড়া এ সমস্ত জায়গায় জয় বাংলা ব্যবহার করতে পারে না।
এটি রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল, এদের বিচার হওয়া দরকার। Md Wasim Akram নামের একজন কমেন্ট করেন, এরা কারা ? একাত্তরে যে পরিবারের স্লোগান ছিল পাকিস্তান জিন্দাবাদ তার মুখে জয়বাংলা স্লোগান তুচ্ছ তাচ্ছিল্য হতে পারে এটা স্বাভাবিক কিন্তু আমাদের কাছে এই স্লোগানের তাৎপর্য অপরিসীম।
এই স্লোগান সেই স্লোগান যা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে শক্তি যুগিয়েছিল, দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ৩০ লক্ষ শহীদ আর ২ লক্ষ মা বোনের ইজ্জত সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল স্বাধীনতা। যত সম্ভব নব্বই এরপরে স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী দলে এদের অনুপ্রবেশ ঘটে বড় বড় নেতা বনে যাই। ইতিহাস সাক্ষী এরাই হতে পারে খুনি খন্দকার মোস্তাকের অনুসারী, বিশ্বাসঘাতক। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের দল থেকে এদেরকে বহিষ্কার করা হোক।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, জয়তু শেখ হাসিনা।রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সুরজিৎ সরকার (Suronjit Sorkar) তার কমেন্টে লিখেছেন, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সালাম সাহেবের পরিবার ৭১ সালে জয়বাংলা শ্লোগানের বিপক্ষে ছিল তাই উনার পক্ষেই এমন স্বাধীনতা বিরোধী কাজ সম্ভব।
এছাড়াও তিনি তার কমেন্টের নিচে একাত্তরে মোহনপুর একটি বইয়ের পাতা সংযুক্ত করেছেন, তাতে লিখা রয়েছে, এমপি আয়েন উদ্দিনের ভগ্নিপতি মোহনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুস সালামের বাবার নাম রাজাকার পিচ কমিটির তালিকায় ৯ নাম্বারে আব্দুর রহমান মন্ডল। একাত্তরে মোহনপুর মোঃ বাবলুর রহমান। এছাড়াও আরও অনেকে কমেন্টের বিপরীতে নানা মন্তব্য করে কমেন্ট করতে থাকেন।
রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য  আয়েন উদ্দিনের আপন ভগ্নীপতি মোহনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আব্দুস সালামের “জয় বাংলা” এমন কমেন্টের বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুকসহ এলাকায় জুড়ে হাট বাজার রাস্তার মোড়ে মোড়ে চায়ের দোকানে দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারন মানুষের মাঝে চলছে আলোচনা সমালোচনা ঝড়।
এ বিষয়ে মোহনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আব্দুস সালামের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে,তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি অনিল কুমার সরকারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, জয় বাংলা সরকারি শ্লোগান, কেউ যদি লিখে থাকেন, এটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। দলের বিরুদ্ধে কিছু লিখলে তখন সাংগঠনিক ভাবে তার ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সভাপতি জিমি কাটার রনি বলেন, জয়বাংলা জাতীয় স্লোগান, আওয়ামী লীগের আদর্শিক কোনো নেতাকর্মী এই স্লোগান নিয়ে হাসি-তামাশা করতে পারে না। তিনি বলেন, এ্যাডঃ আব্দুস সালাম উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও চেয়ারম্যান  তার মতো মানুষের এমন স্ট্যাটাস দেয়া উচিৎ হয়নি, আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দলের নীতিনির্ধারণী মহলের কাছে অনুরোধ করবো। তিনি বলেন, এরা আওয়ামী লীগের বিঁষ ফোঁড়া।#

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *