ডেস্ক নিউজ: বজ্রপাতে সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নেত্রকোনা ও সিলেট জেলায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৯ জনই কৃষক। রবিবার (২৩ এপ্রিল) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত বজ্রপাতে নিহত ১০ জনের মধ্যে রয়েছেন সুনামগঞ্জে ৬, মৌলভীবাজারে ২, সিলেটে ও নেত্রকোনা জেলায় একজন করে।

বিস্তারিত প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে:
সুনামগঞ্জ: কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে সুনামগঞ্জের তিন উপজেলায় হাওরে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে ৬ কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (২৩ এপ্রিল) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার ও ছাতক উপজেলায় বজ্রপাতে তাদের মৃত্যু হয়।

পুলিশ জানায়, দুপুরে ছাতক উপজেলার দেবেরগাঁও গ্রামের কৃষক মহিম মিয়া, বড়কাপন এলাকার কৃষক আরশ আলী ও চরমহল্লা গ্রামের কৃষক আব্দুস সামাদ সকালে ধান কাটতে হাওরে যান। এ সময় বজ্রপাতে তিনজনই মারা যান। ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মোহাম্মদ মঈনুল জাকির জানান, উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের তিন কৃষক ধান কাটার সময় বজ্রপাতে মারা যান।

অন্যদিকে দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষীপুর এলাকার চৌদ্দকুড়ি হাওর ও কালাদেউরা হাওরে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে আরও দুই কৃষকের মৃত্যু হয়। নিহত দুই কৃষক হলেন- দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়নের রনভুমি গ্রামের তারা মিয়া ও মিলন মিয়া। দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেব দুলাল ধর জানান, হাওরে ধান কাটতে গিয়ে তাদের মৃত্যু হয়।

এছাড়া সকালে তাহিরপুর উপলেজায় বজ্রপাতে একজনের প্রাণহানির খবর এসেছে। সেখানে হাওরে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়েছেন রমজান মিয়া নামে এক কৃষক। এ সময় আহত হয়েছেন আরেক কৃষক। নিহত রমজান মিয়া উপজেলার দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়ন কুকুর কান্দি গ্রামের হাছন আলীর ছেলে।

তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ ইফতেখার জানান, বজ্রপাতে এই উপজেলায় এক কৃষক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন একজন। নিহতের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

মৌলভীবাজার: জেলার শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলায় রবিবার (২৩ এপ্রিল) সকালে বজ্রপাতে দুজন নিহত হয়েছেন। কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের উত্তর তিলকপুর গ্রামের বাসিন্দা শম শব্দকর (৪২) সকাল ১০টার দিকে ফসলের মাঠ থেকে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে প্রাণ হারান। এ সময় তার সঙ্গে থাকা গরুটিও মরে যায়।

অন্যদিকে শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের লালবাগ এলাকার বাসিন্দা রিয়াজ উদ্দিন (৩২) বজ্রপাতে মারা গেছেন। একই ঘটনায় হায়দর মিয়া নামের আরেকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তারা হাইল হাওরে ধান কাটতে গিয়েছিলেন।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রাজিব মিঠুন ও কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত উদ্দিন বলেছেন, বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সরকার সহযোগিতা করবে।

নেত্রকোনা : নেত্রকোনার দুর্গাপুরে জমির ধান কাটার সময় বজ্রপাতে রবিকুল হাসান (৩০) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে ও হাবুল্লাহ হাসান (২৫) নামের এক কৃষক আহত হয়েছেন।

রবিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের বন্দউষান গ্রামের এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত রবিকুল হাসান ও আহত হাবুল্লাহ হাসান আপন দুই ভাই এবং একই গ্রামের আব্দুস কুদ্দুসের ছেলে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, সকালে বৃষ্টির মধ্যেই বাড়ির পাশে বিলে জমিতে ধান কাটার কাজ করছিলেন রবিকুল ও হাবুল্লাহ। এ সময় বজ্রপাতে আহত হন দুজন। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রবিকুল হাসানকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরে তার মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। দুর্গাপুর থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ নুরুল আলম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

সিলেট: বর্ষা মৌসুম শুরুতেই সিলেটে বজ্রপাতে প্রাণহানির ঘটনা বেড়েছে। রবিবার বেলা ১১টার দিকে সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার দেওয়ান বাজার মোহাম্মদপুর এলাকার বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিহত ব্যক্তি বালাগঞ্জ উপজেলার দেওয়ান বাজার মোহাম্মদপুর এলাকার আনছার আলী (৭০)।

স্থানীয়রা জানান, সকালে জমিতে ধান কাটতে যান আনছার আলী। এ সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে স্থানীয়রা তার মরদেহ উদ্ধার করে। বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যুর ঘটনাটি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল আলম সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *