ক্রীড়া ডেস্ক:মিরপুরে তাইজুল-মিরাজদের ঘূর্ণি জালে এবার আটকে গেলেন আইরিশ ব্যাটাররা। তাদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ২১৪ রানের বেশি করতে পারেনি আয়ারল্যান্ড। অল্প রানের মধ্যে সফরকারীদের আটকে রেখে হাসিমুখেই ব্যাটিংয়ে নেমেছিল বাংলাদেশ।
কিন্তু সেটা ম্লান করে দিয়েছেন দুই ওপেনার। প্রথম দিনে বাংলাদেশের চোখে চোখ রেখেই লড়াই করেছে আইরিশরা।
ঢাকা টেস্টের প্রথম দিনে নিজেদের প্রথম ইনিংসে তাইজুলের স্পিন বিষে ২১৪ রানে অলআউট হয়েছে আইরিশরা। এই স্পিনার ৫৮ রানে শিকার করেছেন ৫ উইকেট। আর দুটি করে উইকেট পেয়েছেন মিরাজ এবং এবাদত।
শেষ বিকেলে ব্যাটিংয়ে নেমে ২ উইকেট হারিয়ে ৩৪ রান তুলে দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে এখনও ৮ উইকেট হাতে নিয়ে ১৮০ রানে পিছিয়ে আছে স্বাগতিকরা।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শেষ বিকেলে নিজেদের প্রথম ইনিংসের ব্যাটিং নামে বাংলাদেশ। গোধূলি বেলায় বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে শুরুটা হয়েছে অন্ধকারে! তামিম ইকবালের সঙ্গে ইনিংস ওপেন করতে নেমে প্রথম ওভারেই গোল্ডেন ডাক খেয়ে ফিরেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
মার্ক অ্যাডায়ারের করা পঞ্চম বলটি ছিল লেন্থ ডেলিভারী, অফ স্টাম্পের বাইরের এই বলে কাট করতে গিয়ে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি এই ওপেনার। ফলে বল তার বেলস উড়িয়ে নেয়। আর তাতে দলী ২ রানেই প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
এরপর দ্বিতীয় উইকেটে দলের দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার তামিম এবং মুমিনুল হক মিলে চেষ্টা করেছেন শুরুর ধাক্কা সামাল দেওয়ার। কিন্তু ২১ রানের বেশি করতে পারেননি তামিম। দিনের শেষ ওভারের শেষ বলটি ওভার পিচড ধরনের ছিল। তবে টার্ন আর বাউন্সে পরাস্ত তামিম। ডিফেন্স করতে গিয়ে ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে বল চলে যায় দ্বিতীয় স্লিপে, সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা অ্যাডায়ার কোনো ভুল করেননি। এই ওপেনারের বিদায়ে ২ উইকেট হারিয়ে ৩৪ রান তোলে দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি আয়ারল্যান্ডের। দলীয় ১১ রানের মাথায় ওপেনার মারে কামিন্স সাজঘরে ফিরে যান। শরিফুল ইসলামের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন এই ওপেনার।
এই ধাক্কা সামলানোর আগেই সফরকারী শিবিরে আঘাত হানেন এবাদত হোসেন। দলীয় ২৭ রানের মাথায় জেমস ম্যাককালামকে বিদায় করেন এই পেসার।
দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় আয়ারল্যান্ড। সেই চাপ থেকে দলকে মুক্ত করতে ব্যাট হাতে লড়াই করেছেন অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবার্নি ও হ্যারি টেক্টর। তবে এই জুটিও বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। দলীয় ৪৮ রানে তৃতীয়বারের মতো আইরিশ শিবিরে ধাক্কা দেয় টাইগাররা। স্পিনার তাইজুল ইসলাম ফেরান বালবার্নিকে। আউট হওয়ার আগে তিনি ১৬ রান করেন।
এরপর চতুর্থ উইকেটে ৭৪ রানের জুটি গড়েন ক্যাস্পার এবং টেক্টর। তবে ব্যক্তিগত ৫০ রান মেহেদী মিরাজের বলে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান টেক্টর। পরবর্তীতে ক্যাস্পারকেও ফিরিয়ে দেন দেন তাইজুল। ৩৪ রানে থাকা অবস্থায় এই ব্যাটার লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন। এরপর আবারো আইরিশ শিবিরে আঘাত হানেন এই স্পিনার। পিটার মুরকে ১ রানে থাকা অবস্থায় প্যাভিলিয়নের পথ ধরান তিনি।
১৪৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে চা পানের বিরতিতে গিয়েছিল আয়ারল্যান্ড। কিন্তু চা পানের বিরতি থেকে ফিরে আইরিশরা আর ৬৯ রান যোগ করতেই হারিয়েছে বাকি ৪ উইকেট। ফলে ২১৪ রানের বেশি করতে পারেনি সফরকারীরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর- (১ম দিন শেষে)
আয়ারল্যান্ড (প্রথম ইনিংস)- ২১৪/১০ (৭৭.২ ওভার) (ট্যাক্টর ৫০, টাকার ৩৭; তাইজুল ৫/৫৮)
বাংলাদেশ (প্রথম ইনিংস)- ৩৪/২ (১০ ওভার) (মুমিনুল ১২*, তামিম ২১; ম্যাকব্রাইন ১/১৩)