মোঃ হাবিব ওসমান, ঝিনাইদহ প্রতিবেদক॥
ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ শহরের থানা রোড পৌরসভার একটি ব্যস্ততম সড়ক। বর্তমানে এই সড়কটি যেন এক মরন ফাঁদে পরিনত হয়েছে। এই সড়কটিতে যেন সাধারণ মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই।
এই অবস্থা কালীগঞ্জ শহরের নিমতলা বাসষ্ট্যান্ড থেকে বাজার অভিমুখে সড়কটি মাত্র ৪শ ৫০ মিটার পাঁকা সড়ক মেরামতের জন্য বরাদ্ধ ৭৬ লাখ টাকা।
এই বিপুল অর্থ ব্যয় করে শুধুমাত্র সংষ্কার করা সড়কটি দুই বছরেই পিচ, পাথর ও খোয়া উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ অবস্থা সড়কের কমপক্ষে ১০ টি
স্থানে।
স্থানীয়রা বলছেন, কালীগঞ্জ বাজার থেকে মেইন বাসষ্ট্যান্ড অভিমুখে সড়কের পুরাতন সেতুটি মেরা মতের কাজ চলছে।
যে কারনে ওই সড়ক বন্ধ রয়েছে। ফলে মূল বাজার থেকে নিমতলা বাসষ্টান্ডটি বর্তমানে যানচলাচলে একমাত্র সড়ক হয়ে দাড়িয়েছে।
আর সেই সড়কটির এই অবস্থায় সাধারণের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, কালীগঞ্জ পৌরসভার মূল বাজারের প্রবেশে চারটি প্রধান সড়ক রয়েছে।
আর এই মূল বাজার এলাকায় বেশিরভাগ সড়ক গুলো সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধিনে।
মুল বাজার থেকে একটি সড়ক দক্ষিনে বেরিয়ে গেছে মেইন বাসষ্টান্ডের দিকে, যেটি সড়ক বিভাগের।
আরেকটি সড়ক পূর্বে বেরিয়ে মাগুরার আড়পাড়া অভিমুখে চলে গেছে। উত্তরে মুরগীহাটা হয়ে কলেজ রোডে গিয়ে মিশেছে।
এগুলো সবই সড়ক বিভাগের এবং তারা গত ৩ বছ র পূর্বে এগুলো সংষ্কার করে চলাচলের উপযোগী করে তুলেছেন। এখনও সড়কগুলো ব্যবহার উপ যোগী ও দৃষ্টিনন্দন হয়ে রয়েছে।
শহরের নিমতলা থেকে থানার সামনে দিয়ে মুরগী হাটা মোট পর্যন্ত সড়কটি পৌরসভার। এটি মাত্র সাড়ে ৪ শত মিটার।
যে সড়ক গত ২ বছর পূর্বে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সংষ্কা র করেন কিন্তু ভেঙ্গেচুরে আবারও চলাচলের অনুপ যোগী হয়ে পড়েছে।
কালীগঞ্জ পৌরসভার প্রকৌশল বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, সড়কটি মেরামতের জন্য ৭৬ লাখ টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে দরপত্র আহবান করা হয়েছিল।
১৫ দিনের মধ্যে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছিল, কাজটি পেয়েছিলেন ঝিনাইদহের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স শহর এন্টার প্রাইজ। কিন্তু কাজটি করেন ঝিনাইদ হের ঠিকাদার আতিয়ার রহমান।
২০১৯ সালে কার্যাদেশ দেওয়া হলেও করোনার কারনে কাজ করা সম্ভব হয়নি। পরে ২০২০ সালের শেষ সময়ে কাজটি শেষ করা হয়েছে।
সড়কের দুই পাশে কিছুটা বৃদ্ধি করে ১ ইঞ্চি পাথর দিয়ে কার্পেটিং করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তারা।
কালীগঞ্জ শহরের বাসিন্দা ফেরদৌস জানান, সড়কের কাজটি ভালো ভাবেই শেষ হয়। কিন্তু
কাজ শেষ হওয়ার কয়েকদিন পরই সড়কের বিভিন্ন স্থানে পিচ-পাথর উঠতে শুরু করে।
গত দুই বছরে এখন বড় বড় গর্তে পরিনত হয়েছে। এই সড়কের পশ্চিম মাথায় সড়ক বিভাগ কাজ
করেছেন, তাদের রাস্তা আর এই রাস্তা দেখলে বোঝা যায় এই কাজে কতটুকু অনিয়ম করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন সড়কটির উপরের অংশ খুড়ে ফেলে পুন রায় ১ ইঞ্চি কার্পেটিং করার কথা ছিল।
কিন্তু ঠিকাদার সেভাবে করেনি, নাম মাত্র কার্পেটিং করে চলে গেছেন। যে কারনে অল্প দিনেই উঠে যেতে শুরু করে।
এখন যা বৃহৎ আকার ধারন করেছে। এভাবে সড়ক সংষ্কার করে জনগনের টাকা অপচয় করা হচ্ছে।
ওই সড়কে চলাচলকারি ইজিবাইক চালক আরিফ জানান, শহরের মাঝ দিয়ে যাওয়া প্রধান সড়কটির উপর সেতু সংষ্কারের কাজ চলছে।
এতে ওই সড়কটি বন্ধ রয়েছে। এই নিমতলা অভি মূখের সড়ক দিয়েই তাদের চলতে হচ্ছে।
কিন্তু সড়কের অবস্থা এতোটা খারাপ হওয়ায় চলা চল করা খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, প্রতি নিয়ত সড়কে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। মাঝে মধ্যে পথচারীরা যানবাহনকে পাশ কাটাতে গিয়ে গর্তে পড়তে হচ্ছে।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ পৌরসভার প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তা সহকারী প্রকৌশলীর দায়িত্বে থাকা মনিরু জ্জামান জানান, কাজটি করেছেন ঠিকাদার আতি য়ার রহমান।
তিনি জানান, বর্ষা শেষ হলে রাস্তা মেরামত করে দিবে। ঠিকাদারের বিল এখনও পরিশোধ হয়নি। রাস্তা পুনরায় সংস্কার করে দিলে বিল পরিশোধ করা হবে।
ঠিকাদার আতিয়ার রহমান জানান, কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়রের সাথে কথা হয়েছে বৃষ্টির
কারনে রাস্তার কাজে হাত দেওয়া যাচ্ছেনা।
বৃষ্টি থামলেই রাস্তার কাজে হাত দেওয়া হবে।
কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ জানান,
বৃষ্টির কারনে রাস্তাটির কাজ শুরু করা যাচ্ছেনা বৃষ্টির মধ্যে রাস্তার কাজ করলে পিচ উঠে যাবে।
পুরাতন ব্রীজ ভেঙ্গে ফেলার কারনে ওই রাস্তার উপর বেশি চাপ বেড়ে গেছে যে কারনে রাস্তাটি দ্রুত নষ্ট হয়ে গেছে।