বিশেষ প্রতিনিধি:আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর দেশের নতুন রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন আশা-ভরসায় অন্তর্বর্তী সরকার পথ চলা শুরু করে।
একটি যৌক্তিক সংস্কার শেষে নির্বাচনের ঘোষণা দেয়া হবে বলে জানান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ হউনুচ ।
তবে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পাঁচ মাস কাটতে না কাটতেই রাজনৈতিক দলগুলো তাদের ভোল পাল্টে নির্বাচনের দাবি জানাতে শুরু করেছে।
দেশজুড়ে রাজনীতির মাঠে বেশি চোখে পড়ছে তাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি ও ভোটের মাঠে মিত্র খোঁজার চেষ্টা করছে।
দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি ও ইসলামি মূল্যবোধে বিশ্বাসী দলগুলোর সঙ্গে নিয়মি ত যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে।
দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী ইসলামপন্থি দলগুলো নিয়ে বৃহত্তর নির্বাচনি ঐক্য গঠনের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে। তারা এক ছাতার নিচে আসার চেষ্টায় তৎপর রয়েছে।
সব মিলিয়ে নির্বাচন সামনে রেখে শুরু হয়েছে মিত্র খোঁজার রাজনীতি।
জামায়াতের আমির ডাঃ মোঃ শফিকুল ইসলাম জনমত বাড়াতে দেশের সকল জেলায় জেলায় কর্মী সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন। একই সাথে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে অংশ নিচ্ছেন তিনি।
জামায়াতের অনুষ্ঠিত ওই সব সম্মেলনে চোখে পড়ার মত দলীয় নেতা-কর্মী ও সাধারন মানুষের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে।
ইতোমধ্যে সাতক্ষিরা ,যশোর, বরিশাল, রাজশাহী, ঠাকুরগাঁও সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সফর কাজ শেষ করেছেন তিনি। আগের থেকে ভোটের মাঠে জামায়াত বেশ সংগঠিত।দলীয় কর্মকান্ত বেড়েছে।
বিএনপির একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, তাদের সব কার্যক্রম এখন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে।
যৌক্তিক সময়ে নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে তাগিদ দেওয়ার পাশাপাশি মিত্রদ ল খোঁজার বিষয়টি জোরদার করছে বিএন পি।
ইসলামি মূল্যবোধে বিশ্বাসী দলগুলোকে এক প্ল্যাটফ রমে আনতে চায় বিএনপি।তারা বলছে, বিএনপির সঙ্গে আনুষ্ঠানি কভাবে সমমনা দলগুলোর বর্তমানে কোনো জোট নেই।
কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের পতন আন্দোলনে ইসলামি মূল্যবোধে বিশ্বাসী সব দল নিয়ে আগামীতে জোটবদ্ধ নির্বাচন করতে চায়।
এজন্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সমমনা দলগুলোর সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করছেন।লিয়াজোঁ কমিটির মাধ্যমে অন্তত ৪০টি দল ও সংগঠনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে।
অতীতে বিএনপির জোটবদ্ধ ছিল না কিন্তু ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায়ে রাজপথে সোচ্চার ছিল এমন দলের সঙ্গেও যোগাযোগের চেষ্টা করছে বিএনপি।
ইতোমধ্যে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষণা দিয়েছেন নির্বাচনে বিজয়ী হলে সমমনা দল গুলো নিয়ে ‘জাতীয় সরকার’ এবং ‘দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট’ গঠনের।
ইতোমধ্যে খেলাফত মজলিসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার বিদায়ের আন্দোলনে যেসব দল রাজপথে ছিল আমরা সবাইকে নিয়ে আগামীতে নির্বাচন করতে চাই। সে লক্ষ্যে আমরা দলগুলোর সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করে চলেছি।
জোট গড়ার চেষ্টায় জামায়াত ইসলামীও। দলটি আনু ষ্ঠানিক জোট গঠনের ঘোষণা না দিলেও নির্বাচন সামনে রেখে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো এক প্ল্যাটফর্মে আনার চেষ্টা করছে।
এ লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের সঙ্গেে থাকা দলগুলোর বাইরের ইসলামি দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করছেন দলটির নেতারা।
ইসলামভিত্তিক রাজনৈতিক দল ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় শুরু করেছেন নেতারা। জামায়াতে ইসলা মীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি হামিদুর রহমান আযাদ জানায়, ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তাদের সৌজন্য সাক্ষাৎ, মত বিনিময় হচ্ছে।
নির্বাচন কেন্দ্র করে অনেক দলই যোগাযোগ করছে। সব দলই আগামী নির্বাচন ঘিরে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে।
জামায়াতে ইসলামীও নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দল সংগ ঠিত করছে।
অন্যদিকে নির্বাচনে জোট করার ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে এক ছাতার নীচে আসতে শুরু করেছে দেশের বামধারার দলগুলো।
এর মধ্যেই নানা দাবিতে তারা একই প্ল্যাটফর্মে থেকে কাজ শুরু করছেন।
এদিকে বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি, বাসদ, জাসদ, সমাজতান্ত্রিক পার্টি, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ প্রভৃতি দল গণতান্ত্রিক জোট ও অন্যান্য প্ল্যটফর্ম থেকে অভিন্নভাবে নির্বাচন লড়াই করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
অন্যদিকে দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ভোটের হিসাব যাই হোক,সব মিলিয়ে দেশ মূলত:এই তিনটি ধারার জোটের মধ্যেই ভোটের মূল লড়াই হবে।
তারা সবাই আশা করছেন ফলাফল যাই হোক, সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। এ দেশের মানুষ আর রাতের ভোট চাই না।
ভোটের মাঠে বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতি