তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর নওহাটা পৌর এলাকায় অবস্থিত সূর্যোদয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র টর্চারসেলে পরিণত হয়েছে।

এদিকে এক ভুক্তভোগীর স্বজন ফারজানা আক্তার বাদী হয়ে পবা থানায় মাদকাসক্তিনিরাময় কেন্দ্রের পরিচালক ফেরদৌস হাসানসহ তিন জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৫ জনের নামে মামলা করেছেন।

এঘটনায় পবা থানা পুলিশ শুভ কুমার বনি (২৯) ও ইমতিয়াজ আহম্মেদ ডালিমকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারপ্রেরণ করেছে। তবে পরিচালক ফেরদৌস হাসান গা-ঢাকা দিয়েছে।

তাকে আটকে পুলিশি অভিযান চলছে। স্থানীয়রা পরিচালক ফের দৌস হাসানসহ আটককৃতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং একই সঙ্গে কথিত মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের নামে টর্চার সেল বন্ধের দাবি করেছেন।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, কথিত সুর্যোদয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে যারা মাদকাসক্ত থেকে মুক্তির জন্য ভর্তি হয়। তাদের উপর চলে অমানবিক নির্যাতন। সেখানে চিকিৎসার নামে চলঅপচিকিৎসা।

নেই কোনো রেজিষ্টার্ড চিকিৎসক। তারা নিজেরাই শুধু ঘুমের ট্যাব লেট ও ইনজেকশন দিয়ে রোগিদের অচেতন করে রাখে। আর মাসে মাসে নেন রোগির অভিভাবকদের নিকট হতে মাসিক টাকা। শুধু ‘তাইনয় বিভিন্ন চিকিৎসার নামে প্রতিমাসে নেন আরো হাজার হাজার টাকা।

এছাড়াও ওই প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ অত্যন্ত খারাপ। নেই খাবারের মান। এমটাই বলছিলেন রাজশাহী জজ কোর্টের শিক্ষানবীশ, আই নজীবী শিরিন সুলতানা মেঘলা। মেঘলা বলেন, তারা দুই বোন ও এক ভাই। ভাই তোফাইরুল ইসলাম রাহাত সবার ছোট।

কোন কারণে তিনি বিপথে চলে গেছেন। তিনি মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন। মাদকাসক্ত থেকে ফিরিয়ে আনতে ছোট ভাইকে নওহাটার সূর্যোদয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে গত ২০ ভর্তি করেন।

সেখানে চলছিলো তার চিকিৎসা। তারা জানেন ওই নিয়াময় কে ন্দ্রে তাদের ভাই ভালো আছেন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু ঘটেছে উল্টো। তাদের ভাইকে অমানবিকভাবে মারপিট করে পা ভেঙ্গে দিয়েছে ওই নিরাময় কেন্দ্রের পরিচালকসহ তার লোকজন।

শুধু পা ভেঙ্গেই দিয়েই তারা ক্ষ্যান্ত হননি বিনা চিকিৎসায় তাঁকে আটক করে রেখেছিলেন। চলতি মাসের ১৪ অক্টোবর শনিবার তা দের কাছে এক লাখ টাকা দাবী করেন পরিচালক।

টাকা না দিতে পারায় তারা তাদের ভাইকে মেরে পা ভেঙ্গে দেন। এ ঘটনা তারা জানেন না বলে জানান শিরিন সুলতানা মেঘলা।

তিনি বলেন, রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানাধীন নিউমার্কেট ষষ্টিতলায় তাদের জায়গায় উপরে বহুতল ভবন করার জন্য ডেভেল পারকে বাড়ি ভিটা দেবেন। এনিয়ে তাদের ছোট ভাই তোফাইরুল ইসলাম রাহাত এর সঙ্গে আলোচনা করার জন্য সাক্ষাত করতে চাইলে তথাকথিত নিরাময় কেন্দ্রের পরিচালক ফেরদৌস হাসান (৩২) ম্যানেজার নওহাটা নতুনপাড়ার রতন কুমারের, পুত্র শুভ কুমার বনি (২৯) ও গোদাগাড়ী থানাধীন কেল্লাবাড়ইপাড়ার মইনুদ্দি ন আহম্মেদ এর পুত্র সূর্যোদয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের স্টাফ ইমতিয়াজ আহম্মেদ ও ডালিম তাদেরকে দেখা করতে দেবেন না বলে জানান। এই আইনজীবী আরো বলেন, গত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখ বেলা অনুমান ১১টার দিকে বসত বাড়ী বন্টন নামা বিষয়ে জরুরী ভিত্তিতে তিনি ও তার ভাবী ফারজানা আক্তার এবং ভাইয়ের শশুর আফান সরকার সূর্যোদয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র গেলে উপরোক্ত বিবাদীগণ প্রথমে রাহাত এর সঙ্গে তাদেরকে দেখা করতে দেবেনা না জানান।

পরবর্তীতে পরিচালক ফেরদৌস এসে তাঁকে নিয়ে উপরে যান। এ সময়ে তিনি তার ভাই তোফাইরুল ইসলামকে আজকের জন্য বাড়ি নিয়ে যেতে চান। এতে বিবাদীরা তাঁর উপর চড়াও হলে তারসন্দেহ আরো প্রকোট হয়। এ সময়ে তিনি তাঁর ভাবীসহ অন্যান্যদেডাকেন। তখন ভবনের দ্বিতীয় তলায় তিনি জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার ভাই ঘটনার বিস্তারিত বলেন।

এঘটনা বিবাদীরা শুনতে পেয়ে তাদেরকে সেখান থেকে চলে যেতেন বলেন।একই সঙ্গে এ নিয়ে বেশী বাড়াবাড়ি করলে তাদেরকে খুন করে গুম করা হবে বলে হুমকি দেন ফেরদৌস বাহিনী।

এ বিষয়ে তিনি তাৎক্ষণিক পবা থানাকে অবহিত করলে থানা পুলিশ এসে সেখান থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।

তিনি আরো বলেন, তার ভাই গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, হাসপাতালে নিয়ে আসলে প্রথমে ডাক্তার তাঁকে ভর্তি নিতে গড়িমসি করেন। পরে এক্সরে রিপোর্ট দেখে তাঁর’ ভাই কে ভর্তি করেন বলে জানান মেঘলা।#