বিশেষ প্রতিবেদক,ঢাকা:যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রধান তুলসী গ্যাবা র্ড একজন আমেরিকান রাজনীতিবিদ,সামরিক কর্মকর্তা এবং প্রাক্তন কংগ্রেস ম্যান।
এখন যুক্তরাষ্ট্রের তুলসী গ্যাবার্ড বিশ্বজুড়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে কঠিন ভূমিকা রেখে চলেছেন।
বর্তমানে তিনি মিডিয়াতে কাজ করছেন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক বিষয়ে মতামত প্রকাশ করে যাচ্ছেন।
তিনি বাংলাদেশ নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করছেন। এর প্রতিবাদে সরকার ও দেশের বিশিষ্টজনেরা প্রতিবাদের ঝড় তুলে ছেন।
আজ ২৫ মার্চ সকাল ১০টায় ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে বর্ণাঢ্য আয়োজনে ষড়যন্ত্র তথ্য ও তুলসী গ্যাবার্ডকে নিয়ে একটি সেমি নারের আয়োজন করা হয়।
এতে ঢাবি শিক্ষক সেনা অফিসাররা এবং দেশের বিশিষ্ট জনের উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারে প্রফেসর দেলোরা বেগম,বার্তা বিডি ২৪ডট কমের সম্পাদক মন্ডলী প্রধান ডঃ হুমায়ুন কবিরসহ বিশিষ্ট জনেরা সেমিনারে আলোচনা করেন। এ সময় বক্তারা তার কর্মকা ন্ডের নানা দিক তুলে ধরেছেন।
বাংলাদেশকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রধান বর্তমান দেশকে অস্থিতিশীল করতে গভীর ষড়যন্ত্র করছেন এর তীব্র নিন্দা ও প্রতি বাদ জানিয়ে বক্তারা বলেছেন এ দেশে সংখ্যালঘুদের উপরে কোন হামলা করা হয় না। সেটা ধর্মীয় ভিত্তিক না। বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটতে পারে তবে সেটা রাজনৈতিক।
বক্তারা আরও বলেন তিনি সম্প্রতিকালে বহির্বিশ্বে যুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিলেন এবং মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির কঠোর সমালোচনা করেছেন।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সঙ্গে তার বৈঠক বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল।
তিনি জলবায়ু পরিবর্তন, স্বাস্থ্যসেবা, এবং নাগরিক স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলেছেন।
ইতোমধ্যে,বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন এবং ইসলামিক খিলা ফতকে কেন্দ্র করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রধান তুলসী গ্যাবার্ড যে মন্তব্য করেছেন,তার প্রতিবাদ জানি য়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
সরকার গত সোমবার রাতে এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা গভীর উদ্বেগ ও হতাশার সঙ্গে তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্য লক্ষ করেছি, যেখা নে তিনি বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের “নিপীড়ন ও হত্যা” করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে বলেছেন, ইসলাম পন্থী সন্ত্রাসীদের হুম কি এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বৈশ্বিক তৎপরতা একই আদর্শ ও লক্ষ্য দ্বারা পরিচা লিত হয়। সেই আদর্শ ও লক্ষ্য হলো ইসলামপন্থী খিলাফতের মাধ্যমে শাসন করা।’
তুলসী গ্যাবার্ডের এই মন্তব্য বিভ্রান্তিকর এবং বাংলাদেশের ভাব মূর্তি ও সুনামের জন্য ক্ষতিকর উল্লেখ করে অন্তর্বর্তীকালীন সর কার বলেছে, ‘বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবে শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তি মূলক ইসলাম চর্চার জন্য সুপরিচিত এবং চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অসাধারণ অগ্র গতি অর্জন করেছে।’
গ্যাবার্ডের মন্তব্য কোনো নির্দিষ্ট প্রমাণ বা অভি যোগে র ওপরভিত্তি করে করা হয়নি বলে বাংলাদেশ সর কার ওই বিবৃতিতে দাবি করে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিবৃতিতে উল্লেখ করে, তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্যে পুরো বাংলাদেশকে অন্যায় ও অতিরঞ্জিত ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
বাংলাদেশে ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের মূল জায়গা হলো তুলসী গ্যাবার্ড।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো বিবৃতিতে সরকার দাবি করেছে, বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশও চরমপন্থার চ্যা লেঞ্জের মুখোমুখি হয়ে ছে।
তবে এটি ধারাবাহিকভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অংশীদারত্বে আইন শৃঙ্খলা, সামাজিক সংস্কার এবং অন্যান্য সন্ত্রাস বিরোধী তৎপরতার মাধ্যমে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবি লা করে আসছে।
বাংলাদেশকে ভিত্তিহীনভাবে ‘ইসলামিক খিলাফত’–এর সঙ্গে যুক্ত করার অর্থ হলো বাংলাদেশের জনগ ণ এবং আন্তর্জাতিক সহযো গীদের কঠোর পরিশ্রম কে খাটো করে দেখা; যারা শান্তি, স্থিতি শীলতা ও উন্নয়নে র জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইসলামিক খিলাফত’ ধারণার সঙ্গে যুক্ত করার প্রচেষ্টাকে বাংলাদেশ কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করে।
বিবৃতিতে বাংলাদেশ সরকার উল্লেখ করে, রাজ নৈতিক নেতাদের ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের উচিত সংবেদনশীল বিষয়ে মন্তব্য করার আগে সে বিষয়ে সম্যক ধারণা রাখা এবং ক্ষতিকর গৎবাঁধা ধারণা ও ভীতি ছড়ানো বা সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা উসকে দেও য়ার মতো কোনো কিছু বলা থেকে বিরত থাকা।
সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে যৌথ বৈশ্বিক প্রচেষ্টাকে বাংলা দেশ সমর্থন করে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাস্তব তথ্য ও সব দেশের সার্বভৌমত্ব এবং নিরাপত্তার প্রতি শ্রদ্ধার ভিত্তিতে গঠনমূলক সংলাপ অংশগ্রহণে প্রতিশ্রুত।
,তুলসী গ্যাবার্ড ২০১৩ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত হাওয়া ইয়ের ২য় কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্টের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
গ্যাবার্ড ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্য ছিলেন, তবে ২০২২ সালে তিনি দল ত্যাগ করেন।
উল্লেখ্য তুলসী গ্যাবার্ড ১৯৮১ সালের ১২ এপ্রিল লেলিহুয়া, হাওয়াই যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম গ্রহন করেন।
তার জাতীয়তা আমেরিকান ও হিন্দু ধর্ম অনুসরণ করা প্রথম কং গ্রেস সদস্য এবং রাজনীতিবিদ ও সামরিক কর্মকর্তা।
২০১৩ সালে তিনি হাওয়াই থেকে ২০১৩ সালে মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য হন।
২০২০ সালে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন, তবে জো বাইডেনের পক্ষে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন।
২০২২ সালে তিনি ডেমোক্রেটিক পার্টি ত্যাগ করেন এবং পরে স্বাধীন রাজনীতিবিদ হিসেবে কাজ শুরু করেন।
তিনি হাওয়াই আর্মি ন্যাশনাল গার্ডের সদস্য, এবং ইরাক ও কুয়েতে সামরিক দায়িত্ব পালন করেছেন।