মফিজুল ইসলাম শৈলকুপা (ঝিনাইদহ): ঝিনাইদহসহ দক্ষি ণ-পশ্চিমাঞ্চলের চার জেলায় আমন চাষে পানির ঘাটতি মেটাতে চালু করা হয় দেশের বৃহত্তম গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জি কে) সেচ প্রকল্প। চাষাবাদ বাড়ানোই ছিল প্রকল্পটির লক্ষ্য। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ঝিনাইদহ,কুষ্টিয়া,চুয়াডাঙ্গা ও মাগুরা জেলায় সেচ খাল খনন করা হয়। যার প্রথম কাজ শুরু হয় ১৯৫৫-৫৬ অর্থবছরে। ১৯৫১ সালে প্রাথমিক জরিপের পর ১৯৫৪ সালে প্রকল্পটি অনুমোদন পায়।
তবে চালু হয় ১৯৬২ -৬৩ সালে। শুরুতে বছরের ১০ মাস (১ ৫ জানুয়ারি থেকে ১৫ অক্টোবর) দিনরাত ২৪ ঘণ্টা তিনটি পাম্পের মাধ্যমে পানি তোলা হতো। বাকি দুই মাস চলত রক্ষ ণাবেক্ষণ। ১৯৩ কিলো মিটার প্রধান খাল, ৪৬৭ কিলোমি টা র শাখা খাল ও ৯৯৫ কি লোমিটার প্রশাখা খালের মাধ্যমে সেচ প্রকল্পের পানি কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলার ১৩টি উপজেলায় সর বরাহ করা হয়। প্রকল্পের আও তায় সেচযোগ্য এলাকা রয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ১০৭ হেক্ট র। তবে দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় এই সেচ খালটিই ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ঝিনা ইদহের শৈলকুপার প্রায় ২০ গ্রামের কৃষকদের। খালের পানি নিষ্কাশনের স্লুইচগেটের মুখ সরু হওয়ায় ঠিকমতো পানি বের হতে পারছে না। ফলে ডুবে যাচ্ছে ফসলি জমি।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার দুধসর, নিত্যানন্দপুর ও উমেদপুর ইউনিয়নের দুধসর,মলমলি,পুকুরপাড়,ত্রিপুরাকা ন্দি,টংবিলা,বোয়ালিয়া,আগবয়ালিয়া,কচুয়া,ভিক্ষাকর,ফলিয়া, খড়িবাড়িয়া,খালফলিয়া,বরইচারা,দক্ষি মনোহ রপু র,সা বাশপুর,আশুরহাট,শেখরা, গোপালপুরসহ ২০ গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে জিকে সেচ খাল। এলাকায় এটি ‘বড় খাল’ নামে পরিচিত। এসব গ্রামের ফসলি জমির পানি জিকে সেচ খালের শেখড়া গ্রামের স্লুইসগেট দিয়ে বের হয়ে চলে যায় নবগঙ্গা নদীতে। তবে এ স্থানটির স্লুইচ গেটটি সংকুচিত হও য়ায় বৃষ্টিতে এলাকার ফসলি জমি ডুবে গেছে। এমনকি দুধ সর ইউনিয়নের টংবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বো য়ালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে পানি ঢুকে যাও য়ায় বন্ধ হয়ে যায় স্কুল ।
খালফলিয়া গ্রামের স্কুল শিক্ষক স্বপন কুমার অধিকারী বলে ন,‘শেখড়া গ্রামের স্লুইচ গেটটি সংকুচিত হয়ে গেছে ও দীর্ঘদি ন ধরে সেচ খাল সংস্কার না হওয়ায় ফসলি জমি ডুবে গিয়ে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।’
টংবিলা গ্রামের কৃষক। রথীন্দ্র মন্ডল বলেন,‘আমার ৭ বিঘা জমিতে ধান ও পেঁয়াজ ছিল। এবারের বৃষ্টিতে সব ডুবে গে ছে।
শেখড়া এলাকার স্লুইচ গেটটি সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত আমা দের এ দুঃখ যাবে না।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান খান বলেন,‘নতুন প্রকল্প গ্রহণ করে শেখড়ায় চওড়া স্লুইচ গেট স্থাপন না করা পর্যন্ত এ সমস্যার সমাধান হবে না। কৃষকদের হাজার হাজার বিঘা জমির ফসল বাঁচাতে ও দুঃখ লাঘব করতে এ উদ্যোগ নেওয়া দরকার।’
 শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্নিগ্ধা দাস বলে ,‘ জি কে সেচ খাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন।
শেখড়া না মক স্থানের স্লুইচগেটটি ভেঙে সংস্কার করে পানি প্রবাহ স্বাভা বিক করতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলবো।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *