সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:
শাক-সবজি ও অন্যান্য খাদ্যশস্যের শতাধিক স্থানীয় জাতের বীজ নিয়ে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে অনুষ্ঠিত হয়েছে ব্যতিক্র মধর্মী এক বীজ মেলা।
উপকূলীয় নারীদের সংরক্ষণ করা প্রায় ৪০ জাতের সবজি বীজ এই মেলায় প্রদর্শন করা হয়।
স্থানীয় জাতের ফসলের বীজ সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণের ল ক্ষ্যে বৃহস্পতিবার উপজলোর ঈশ্ববীপুর ইউনিয়নের ধুমঘাট তেরকাটির চকে সিক্সটিন ডেজ অব গ্লোবাল অ্যাকশন অন অ্যাগ্রোইকোলজি ২০২৪ উপলক্ষে এই বীজ মেলার আয়ো জন করা হয়।
পেস্টিসাইড অ্যাকশন নেটওর্য়াক এশিয়া প্যাসিফিক (প্যানা প), ধুমঘাট শাপলা নারী উন্নয়ন সংগঠন, স্বপ্নচুড়া যুব সংগ ঠন, সবুজ সংহতি, শ্যামনগর উপজেলা যুব সমন্বয় কমিটি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক’র সম্মিলিত এই আয়োজনে ধুম ঘাট গ্রামের ৩টি চকের ১০জন কৃষাণী এই বীজ মেলায়
অংশগ্রহণ করেন।
মেলায় তারা লালশাক, পালনশাক, টকপালন, টমেটো, বে গুন, ঝাল, মুলা, উচ্ছে, কুশি, লাউ, বরবটি, মিষ্টিকুমড়া, পট ল, ঝিঙে, সিম, বরবটি, তরুল, ভুট্টা, চৈতিমুগ, কলুইডাল, ওল, কচুরমুখি, আদা, হলুদ, পেপে, পুইশাক, ডাটাশাক, ধনে, বাতোশাক, চন্দনবাতো, শ্বেতবাতো, চুবড়িআলু, বড়আলু, শসা, ঢেড়স, চালকুমড়া, জালিকুমড়া, সরিষা, পাটসহ শতা ধিক স্থানীয় জাতের বীজ প্রদর্শন করেন।
মেলায় প্রবীণ কৃষা ণীরা নতুন প্রজন্মের কৃষাণীদের সাথে বীজ বিনিময় করেন।
এসময় স্থানীয় জাতের ফসলের বীজ সংরক্ষণ ওসম্প্রসারণে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষাণীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন, বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী রামকৃষ্ণ জোয়ারদার, জাতীয় কৃষি পদ কপ্রাপ্ত কৃষাণী অল্পনা রানী মিস্ত্রি ও বারসিক কর্মকর্তা বা বলু জোয়ারদার প্রমূখ ।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, ইউপি সদস্য শ্যামল মন্ডল, সাবেক ইউপি সদস্য ও কৃষিপ্রতিবেশবিদ্যা শিখন কেন্দ্রের মিতা রানী মন্ডল প্রমুখ। বক্তারা বলেন, নারীর হাত ধরেই কৃষির সূচনা। নারীই কৃষির ধারক।
গ্রামীণ নারীরা নানা ধরনের ফসলের বীজ সংরক্ষণের মা ধ্যমে প্রাচীন সেই প্রথা এখনো টিকিয়ে রেখেছেন।
কৃষক ফসল উৎপাদন করবে এবং বীজ সংরক্ষণ করবে এটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু বর্তমানে কৃষকরা বাজার নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এটা বাংলাদেশের কৃষি ব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ফেলবে। বাজার নির্ভরশীলতা কমানোর জন্য স্থানীয় প্রজাতির বীজ সংরক্ষণ করতে হবে। স্থানীয় জাতের বীজ থেকে হওয়া গাছে যেমন
পোকার আক্রমণ কম হয়, তেমন সার ও কীটনাশক দেওয়ার প্রয়োজন হয় না।
স্থানীয় জাতের বীজ রক্ষার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ ও উদ্যো গী হতে হবে। পরে কৃষাণীদের প্রদর্শিত বীজের সংখ্যা, মান ও বীজ উপস্থাপনের উপর ভিত্তি করে কৃষাণীদের পুরস্কার প্রদা ন করা হয়। এছাড়া বীজমেলা শেষে নিরাপদ খাদ্যের দাবিতে
গণস্বাক্ষর কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।