আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি ঃ বগুড়ার আদমদীঘিতে ঈদের আগেই পেকেছে, অন্তত ৮০ ভাগ ইরি-বোরো ধান।

কিন্তু রোজ ও ঈদের কারনে শ্রমিক সংকটে পাকা ধান কাটতে না পেরে হতাশ হয়ে পড়ে স্থানীয় কৃষকরা। ঈদের দিন শনিবার ও পর দিন রবিবার থেকে আকাশে মেঘ দেখে আতংকিত হয়ে পড়ে শ’ শ’ কৃষক। তবে রবিবার থেকে হতাশা কাটতে শুরু করেছে ,আগে থেকেই শ্রমিক ঠিক করে রাখা কৃষকদের হতাশা কাটতে শুরু করেছে।

ঈদের পর থেকে উত্তর জনপদের ঠাকুরগাঁ দিনাজপুর, চিলাহাটি, ও নীলফামারী থেকে আসা ট্রেনগুলো থেকে সান্তাহার জংশন স্টেশনে নামছে হাজারো ধানকাটা শ্রমিক। কিন্তু যাদের আগে থেকে শ্রমিক ঠিক করা নেই সে সকল কৃষকদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।

মঙ্গলবার দুপুরে ট্রেন থেকে নেমে কাজের সন্ধানে আসা একটি শ্রমিক দলের দল নেতা ডোমারের পরিদ উদ্দিন (৫৫) বলেন আমরা একদল এসেছি আমার এলাকা থেকে আরোও আসবে এভাবে (শ্রমিক) আসার এঅবস্থা আরো এক/দেড় সপ্তাহ ধরে চলবে।

আবার এসব চুক্তিবদ্ধ শ্রমিকরা ধান কাটা-মাড়াই করে দিয়ে আগাম ফিরেও যাবেন বলে জানান তিনি। ঈদ মেষে কর্মস্থলে ফেরা মানুষ আর ধানকাটা শ্রমিকের ভিরে উত্তরাঞ্চলের ট্রেনগুলোতে উপচেপড়া ভির দেখা যাচ্ছে। ট্রেনে গাদা-গাদি করে প্রায সব ট্রেনেই প্রায় একই পরিমান শ্রমিক নামছে।

এদের মধ্যে প্রায় সকলে আগে থেকে কৃষকের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে থাকা শ্রমিক। জানাযায়, এবার বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার ছয় ইউনিয়ন ও এক পৌরসভা এলাকায় প্রায় সাড়ে ১২ হাজার হেক্টর জমিতে সরু আকারের জিরাশাইল, সম্পাকাটারি, সুবর্ণলতা এবং বিআর-৯০ জাতের ইরি-বোরো ধান চাষাবাদ করা হয়েছে। এসব জাতের ধানের মধ্যে জিরাশাইল এবং সম্পাকাটারি ধানের প্রায় ৮০ ভাগ ধান ঈদের আগেই পেকে গেছে। কিন্তু রোজা এবং ঈদের কারনে শ্রমিক সংকটে প্রায় ৯৫ ভাগ কৃষক ধান কাটা শুরু করতে পারেনি।

ফলন ভাল হলেও ধান কাটা-মাড়াইয়ের খরচও বেশী। ইতি মধ্যে কিছু পরিমান ধান কেটেছে যে সব তাঁরা বলেন, বহু কষ্টে দিন চুক্তিতে মেলানো গেছে স্থানীয় শ্রমিক। তাদের তিন বেলা খাবার ছাড়াও দিতে হয়েছে ৬ থেকে ৭শ’ টাকা। তাতে প্রতি বিঘায় ধান কাটা-মাড়াইয়ের খরচ পড়েছে ৫ থেকে ৬হাজার টাকা। ধান মিলেছে ২৪ মন হারে।

এদিকে একটানা প্রায় ২০ দিন ধরে তাপদাহ চলার পর ঈদের দিন শনিবার সকাল থেকে ও রবিবারও আকাশ মেঘলা দেখে আতংকিত হয়ে পড়েছে কৃষকরা। পাকা ধানের জমির দিকে বিমর্ষ চেহারা নিয়ে তাকিয়ে থাকা আদমদীঘি উপজেলার কায়েতপাড়া গ্রামের কৃষক শফির আলীর সাথে কথা হয়। তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, অনেক খরচ ও কষ্টে চাষাবাদ করা প্রধান ফসল ইরি ধান মানুষ(শ্রমিক) অভাবে কাটতে পারছি না। আকাশের যা অবস্থা তাতে গতবারের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে; অনেক ক্ষতি হবে। পথে। এমন কথা শুধু আলীর নয়, এলাকার সকল কৃষকের। ###

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *