আলিফ হোসেন,রাজশাহী:
রাজশাহীর বাঘায় একটি শিক্ষা বালিকা উচ্চ বিদ্যা লয়ের সহকারী শিক্ষকেরা প্রধান শিক্ষককে পিটিয়ে বিদ্যালয় থেকে বের করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত ২০ জানুয়ারী সোমবার সকালে  উপজেলার মহদীপুর হিলা লপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে।
এনিয়ে স্কুলে পাঠদান ব্যহত হচ্ছে। একই সঙ্গে শিক্ষ ক-কর্মচারী দের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ ঘটনায় গত ২১ জানুয়ারী প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক বাদি হয়ে সহকারী শিক্ষক জাকির হোসেন কে প্রধান আসামি করে ৭ জনের বিরুদ্ধে বাঘা থানা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএ নও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। 
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এদিন সহকারী শিক্ষক জাকি র হোসেনের নেতৃত্বে রফিকুল ইসলাম, আব্দুল আও য়ালসহ কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মচারী কথিত অভি যোগে প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেককে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করে স্কুল থেকে বের করে দিয়েছেন।
এঘটনায় পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে পাওয়া গেছে ,সহকারী শিক্ষক জাকির হোসেন, রফিকুল ইসলাম, আব্দুল আওয়ালসহ কয়েক জন কর্মচারী জানান, প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক নিয়োগ বাণি জ্যনসহ বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের মোট ২৪ লাখ টাকার কো নো হিসাব কাউকে দেন না।
এ নিয়ে গত সোমবার সকালে তার সঙ্গে আমাদের কথা কাটাকাটি হয়।
এরপর মঙ্গলবার তিনি বহিরা গত লোকজন নিয়ে এসে আমাদের মারধর করেন।
নিরুপায় হয়ে আমরা বিষয়টি মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মক র্তাকে অবগত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউ এনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি।
আর প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক নিয়োগ বাণি জ্যে র ঘটনা সঠিক নয় দাবি করে বলেন, স্থানীয় কিছু মানু ষের প্ররোচনায় কয়েকজন শিক্ষক এবং কর্মচারী আওয়ামী ট্যাগ দিয়ে আমার কাছে প্রায়ই টাকা চান।
আমি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে প্রতিনিয়ত হুমকি-ধমকি দেন। এদিন  স্কুলে এলে তারা আমাকে মারধর করে স্কুল থেকে বের করে দেন।তিনি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভি যোগ করেছেন।
তিনি বলেন, শিক্ষকদের স্কুল ফাঁকি বন্ধে তিনি সক ল শিক্ষকে নিয়মিত স্কুলে উপস্থিত ও ক্লাশ নেয়ার নির্দেশ দেন।
এরপর থেকেই কয়েকজন ফাঁকিবাজ শিক্ষক তার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে এমন ঘটনার জন্ম দিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, স্কুলের  কতিপয় সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে নারী ঘটিত ঘটনা ও মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। তারা এসব ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্তদের দৃষ্টান্তমূ লক শাস্তির দাবি করেছেন।
এদিকে প্রধান শিক্ষককে প্রহারের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে এলাকা য় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে,উঠেছে  সমালো চনার ঝড়,বইছে মুখরুচোক নানা গুঞ্জন, অভিভাবক ও সচেতন মহলে দেখা দিয়েছে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক অভি যোগ করে বলেন,এরা শিক্ষক নামের কলঙ্ক।
কারণ যারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো পবিত্র স্থানে প্রকাশ্যে প্রধান শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করতে পারে,তারা নৈতিকভাবে শিক্ষকতার যোগ্যতা হারিয়েছে,এদের চিহ্নিত করে চাকরিচ্যুত করা সম য়ের দাবি।
তারা বলেন, প্রধান শিক্ষকের অপরাধ বা অনিয়ম-দুর্নীতি থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যেতেই পারে, কিন্ত্ত কোনো অবস্থাতেই তাকে শারী রিকভাবে লাঞ্ছিত করা যায় না।
এদিকে প্রধান শিক্ষকের করা লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, বিবা দী সহকারী শিক্ষক জাকির হো সেন (৩৭) আব্দুল ওয়াদুদ (৪৪), রফিকুল ইসলাম (৪৭), মকছেদ আলী (৪৮), আলম আলী (৬৫), শাহ আলম (৪৮) ও মোজাম্মেল হক (৩২)। বিবাদীগণ মহদী পুর হিলালপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহাকরী শিক্ষ ক এবং ৪ নম্বর বিবাদী বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী।
গত ২০ জানুয়ারী সোমবার সকালে বিদ্যালয়ে দৈনিক সমাবেশে শিক্ষার্থীদের শপথ বাক্য পাঠ ও জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার সময় ভুল হওয়ায় ক্রীড়া শিক্ষককে উক্ত বিষয়ে আমি প্রতিবাদ জানা য়।
সেই সময় উপস্থিত শিক্ষকগণ আমার প্রতি ক্ষিপ্ত হইয়া উঠে। বিবা দীরা ইতি পূর্বে তাহাদের ক্ষমতার প্রভাব খাটাইয়া বিদ্যালয়ে তাহা দের খেয়াল খুশিমত যাতায়াত করিত এবং স্কুলের নিয়মের বাহিরে চলা ফেরা করিত।
এই বিষয়ে আমি প্রতিবাদ করি একই দিন দুপুরে কয়েকজন শিক্ষা র্থী স্কুল  হইতে বাহিরে যাইতে থাকি লে আমি শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞা  সা করি যে, তোমাদের এখন ক্লাস হবে তোমরা এখন বাহিরে যাচ্ছো কেন ? তখন শিক্ষার্থীরা আমাকে উত্তর দেয় যে, একটা করে ক্লাস হয় স্যার।
সেই সময়  বিদ্যালয়ের ইংরেজী শিক্ষক এক নম্বর বিবাদীকে আমি বলি যে, আপনি ক্লাস নেওয়া বাদ দিয়ে বসিয়া আছেন কেন ? তখনম সে আমার প্রতি ক্ষিপ্ত হইয়া বলে যে, আমি ক্লাস নিতে পারবো না বলিয়া সে আমার সঙ্গে খারাপ ভাষায় কাথাবার্তা বলে।
সেই সময় বিবাদীর সহিত আমার তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে সহকা রী  ধর্মীয় শিক্ষক ২নম্বর বিবাদী ও গণিত শিক্ষক ৩ নম্বর বিবাদী সহ অন্যান্য বিবাদীগণ আমাকে মারপিট করে এবং আমার দাড়ি ধরিয়া টানা হেঁচড়া করিয়া দাড়ি ছিড়িয়া ফেলে।
সেই সময় বিবাদীরা আমার মাথার উপরে এবং বাম চোখের উপরে কিল ঘুষি মারপিট করিয়া ফোলা জখম করে আমাকে স্কুল থেকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে দেয়।
বিবাদীরা ইতি পূর্বে আমার নিকট চাঁদার টাকা দাবী করিয়াছিল। আমি বিবাদীদের চাঁদার টাকা না দেও য়ায় উল্লেখিত বিবাদীগণ পরিকল্পিত ভাবে বর্ণিত ঘটনা ঘটাইয়া এবং আমাকে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করিয়াছে।
পুনরায় আমি উক্ত বিদ্যালয়ে গেলে বিবাদীরা আমা কে মারধর করিবে বলিয়া বিভিন্ন ভাবে ভয়ভী তি ও হুমকি প্রদর্শন করিতেছে।
এ বিষয়ে বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএ নও) শাম্মি আ ক্তার বলেন, উভয় পক্ষের পৃথক অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।#
One thought on “সহকারী শিক্ষকদের হাতে প্রধান শিক্ষক লাঞ্ছিত ”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *