মুহা: জিললুর রহমান,সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গাছ কেটে পাঁচ লাখ টাকার আসবাবপত্র বানিয়ে ঢাকার আগরগাঁও জামাতার বাসায় পাঠানো সেই উপপরিচালক ড. জামালউদ্দিন পাবনায় স্ট্যান্ড রিলিজ হওয়ার আগের দিন চারজনকে সুবিধাজনক বদলী করেছেন। তড়িঘড়ি করে এ বদলীতে ড. জামালউদ্দিন সুবিধা নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বদলীকৃতদের মধ্যে খামার বাড়ির করণিক শাহাদাৎ হোসেনকে সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসে, উপসহকারি উদ্ভিদ সংরক্ষন কর্মকর্তা বেল¬াল হোসেনকে শ্যামনগর থেকে আশাশুনিতে, উচ্চমান সহকারি আমিনুর হোসেনকে কলারোয়া থেকে শ্যামনগর ও অফিস সহকারি মাকসুদুর রহমানকে কালিগঞ্জ থেকে আশাশুনিতে বদলী করা হয়েছে।
শাহাদাৎ হোসেন বলেন, তিনি বুধবার নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেছেন। ২৮ মার্চ তাকে সদর কৃষি অফিসে বদলী আদেশে সাক্ষর করেছেন বিদায়ী উপপরিচালক ড. জামালউদ্দিন।
শ্যামনগর থেকে আশাশুনিতে বদলী হওয়া উপসহকারি উদ্ভিদ সংরক্ষন কর্মকর্তা বেল¬াল হোসেন জানান, তিনি বাইরের জেলায় হওয়ায় কয়েক মাস আগের বদলী আবেদন ২৮ মার্চ সাক্ষর করেছেন উপপরিচালক ড. জামালউদ্দিন।
কলারোয়া থেকে শ্যামনগরে বদলী হওয়া উচ্চমান সহকারি আমিনুর হোসেন বলেন, চার মাস আগে তিনি বদলীর আবেদন করেছিলেন। ২৮ তারিখে তার বদলীর আদেশে সাক্ষর করেছেন উপপরিচালক ড. জামালউদ্দিন। সোমবার পর্যন্ত তিনি নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেননি।
তবে চারজনকে বদলীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাতক্ষীরা খামার বাড়ির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা।
কালিগঞ্জ অফিস সহকারি মাকসুদুর রহমান জানান, আশাশুনিতে নতুন দুইজন যোগদান করায় গত ২৮ মার্চ তার বদলী আদেশ স্থগিত করা হয়েছে। খামারবাড়ির উপপরিচালক ড. জামালউদ্দিন তাকে ২৮ মার্চ বদলী করেছেন। আবার তিনিই একই দিনে বদলী আদেশ স্থগিত করেছেন।
তবে উপপরিচালক ড. জামালউদ্দিনকে বদলীর ব্যাপারে কোন সুবিধা দেয়ার কথা অস্বীকার করেছেন ওই চারজন কৃষি কর্মকর্তা কর্মচারি।
এ ব্যাপারে পাবনায় সদ্য যোগদানকারি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. জামালউদ্দিনের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা খামারবাড়ির ভারপ্রাপ্ত ডিডি, খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, যেহেতু তিনি কয়েকদিনের দায়িত্বে ছিলেন তাই বিষয়টি তার জানা নেই। মঙ্গলবার নতুন উপপপরিচালক সাইফুল ইসলাম সাতক্ষীরায় যোগদান করার পর তিনিই ভাল বলতে পারবেন।
প্রসঙ্গত, সাতক্ষীরা খামার বাড়ির গাছ কেটে তা থেকে আসবাবপত্র বানিয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি বৃহষ্পতিবার তিনি প্রথম পর্যায়ে একটি খাট, একটি সোফাসেট, একটি সাইড বক্স, একটি টি টেবিল সুরত আলীর মাধ্যমে ভ্যানযোগে সুন্দরবন ক্যুরিয়ার সার্ভিসে সাইফুল ইসলাম, আগরগাঁও বিএনপি বাজার, শ্যামলী, ঢাকা তার জামাতার বাসার ঠিকানায় পাঠান। এ নিয়ে গণমাধ্যমে তার বিরুদ্ধে খবর প্রকাশ হওয়ায় তদন্তে আসেন নড়াইল, খুলনা ও বাগেরহাটের উপপরিচালক। তদন্তে ঘটনার সত্যতা মেলায় ২৫ মার্চ তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়। ফলে ২৮ তারিখ গভীর রাত পর্যন্ত অফিসে ব্যক্তিগত সহকারি বিকাশ দেবনাথকে দিয়ে চারজনকে বদলীর আদেশসহ বিভিন্ন কাগজপত্র টাইপ করিয়ে তাতে স্বাক্ষর করার পর ২৯ মার্চ সকালে তিনি সাতক্ষীরা থেকে পাবনার উদ্দেশ্যে রওনা হন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *