Related Articles
রকিবুল হাসান রকি,রাজশাহী:
দরিদ্র কৃষকের সন্তান মো. আবুল (৫৫)। শিক্ষাগত যোগ্য তা সীমিত। স্বাক্ষর করতে গেলেও বেগ পেতে হয়।
কখনো ভ্যান, কখনো রিক্সা চালিয়ে সংসার চালাতেন তিনি। কয়েক বছর আগেও রাজশাহী শহরের রাস্তায় রিক্সা চালাতে দেখা যেতো তাকে। কিন্তু হঠাৎ করেই বদলে যায় তার ভাগ্য।
রিক্সাচালক থেকে পরিণত হন কোটিপতিতে। নির্মাণ করে ন বিলাসবহুল বাড়ি, কিনেছেন দামি মোটরসাইকেল, নিয়েছেন একাধিক পুকুর ও কৃষিজমি লিজে-যা দেখে হতবাক প্রতিবেশীরা।
রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার পালোপাড়া গ্রামের মৃত শলেমানের ছেলে আবুলকে এলাকায় অনেকেই চেনেন ‘ভেড়া আবুল’ নামে।
তার দুই ভাই- আইনাল ও ভোলা, তারাও জীবিকার তাগি দে ভ্যান চালানো বা মাছ ধরে দিন চালাতো। তবে আবু লের ভাই আইনাল একটি দুর্ঘটনায় মারা যায়।
আবুলের পরিবারে রাজনীতির আগ্রহও দেখা গেছে: স্থানী য় ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছার কথাও জানিয়েছেন আবুল।
এত অল্প সময়ে তার এই আর্থিক উত্থানের কারণ খুঁজতে গিয়ে প্রথমে এলাকায় ছড়ায় গুজব-‘জিনের ধনরত্ন’ পেয়ে ছেন তিনি।
কেউ বলছেন, শামসুল নামের এক ব্যক্তির পুকুর খননের সময় নাকি অলৌকিকভাবে সোনা-রুপা পাওয়া যায়। সেই ধন বিক্রিই তার সাফল্যের চাবিকাঠি!
কিন্তু অনুসন্ধানে এই রহস্যের পেছনে বেরিয়ে আসে ভিন্ন কাহিনি-প্রতারণা ও ব্ল্যাকমেইল।
রাজশাহী শহরের এক ব্যক্তির পরিবার অভিযোগ করে ছে-বিশ্বস্ততার সুযোগ নিয়ে আবুল হাতিয়ে নিয়েছেন তা দের কাছ থেকে অর্ধকোটি টাকারও বেশি।
ভুক্তভোগীর পরিবারের একজন বলেন, “প্রথমে পেয়াজ-রসুন পৌঁছে দিতে যেত। ধীরে ধীরে পারিবারিক সম্পর্ক তৈরি করে। আমার চাচি সরকারি চাকরি করেন-তার সরলতার সুযোগেই প্রতারণা শুরু।”
তাদের দাবি- আবুল ভয় দেখাতেন যে তিনি নাকি দু’টি হত্যাকাণ্ডে জড়িত। টাকা না দিলে পুলিশকে বলে তাদের জড়িয়ে ফাঁসিয়ে দেবেন।
এই ভয়েই কয়েক দফায় নগদ ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা দিতে বাধ্য হন ভুক্তভোগী।
অভিযোগ আরও রয়েছে-শেষ পর্যন্ত টাকা না দিতে চাইলে একদিন ফোনে জানানো হয় আবুল মারা গেছেন! আরে কজন পরিচয় দিয়ে বলেন- “আমি তার ছেলে, বাবার চি কিৎসা-দাফনের জন্য টাকা লাগবে।”
অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে আবুল বলেন- “এসব মিথ্যা। আমি কাউকে চিনি না।”
এসময় তিনি সাংবাদিককে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন। এমনকি সংবাদ প্রকাশ করলে শারীরিক ক্ষতি করার কথাও বলেন।
পরদিন আবুলের প্রতিনিধি হিসেবে শাহেদ ড্রাইভার, পি এস কালামসহ ৭-৮ জন এসে সাংবাদিককে ‘ম্যানেজ’ করার চেষ্টা করেন। তাতে রাজি না হলে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে চলে যান।
স্থানীয়রা বলছেন-অল্প সময়ে বিপুল সম্পদের উৎস স্পষ্ট নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্ত প্রয়োজন।
হঠাৎ ধনী হওয়া এই রিক্সাচালকের গল্প-সিনেমাকেও হার মানায়। তবে সিনেমাতে নায়ক শেষ পর্যন্ত ধরা পড়ে; বাস্ত বে কি হবে আবুলের?
Bartabd24.com সব খবর সবার আগে