ডেস্ক নিউজ ॥ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় চারটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৪ হাজার ২৫২ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৩ হাজার ৬৪৫ কোটি ২১ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক অর্থায়ন থেকে ৬০৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা পাওয়া যাবে।

মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।

সভা শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। এসময় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা বিভাগের সচিব সত্যজিৎ কর্মকারসহ কমিশনের সচিবরা।

ঢাকা সিএমএইচ এ ক্যানসার সেন্টার নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪৬ কোটি টাকা। ঢাকা শহর সন্নিকটবর্তী এলাকায় ১০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।

ঢাকা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩১ কোটি ৯১ লাখ টাকা। বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২১১ কোটি ৩২ লাখ টাকা। ফ্লাড রিকনস্ট্রাকশন ইমারজেন্সি অ্যাসিসটেন্স প্রজেক্ট প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০০ কোটি টাকা।

জামালপুর জেলার পল্লি অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ১২৫ কোটি টাকা। ওয়াশ সেক্টর স্ট্রেনদেনিং অ্যান্ড স্যানিটেশন (সানমাকর্স) ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট ইন বাংলাদেশ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা। ক্লাইমেট রেজিলেন্ট সাসটেইনেবল ওয়াটার সাপ্লাই, স্যানিটেশন অ্যান্ড হাইজিন প্রজেক্ট ইন বাংলাদেশ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।

মোংলা বন্দর চ্যানেলের ইনার বারে ড্রেজিং প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এছাড়া অনুমোদিত হয়েছে, ভুলতা-আড়াইহাজার-বাঞ্ছারামপুর-নবীনগর-শিবপুর-রাধিকা আঞ্চলিক মহাসড়ক ও সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন প্রকল্প এবং সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রকল্প।

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নির্দেশনা একনেক সভায় বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশেষ করে দেশের আঞ্চলিক সড়কে টোল আদায় করতে নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী আঞ্চলিক মহাসড়কে টোল আদায় করতে বলেছেন। এটার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও বলেছেন তিনি।

বিষয়টি নিয়ে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব সত্যজিত কর্মকার বলেন, মুখ্য সচিব বিষয়টি একনেক সভায় তোলেন, যে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সড়ক করে দিচ্ছি। এরপর প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছুটা হলেও আঞ্চলিক মহাসড়কে ন্যূনতম হারে হলেও টোল আদায়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

পিএম অনুশাসন তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, নারীদের কাজের হিসেব নেই। এটা যোগ করলে প্রবৃদ্ধি বাড়বে। নারীরা অনেক অবদান রাখে। কেউ কেউ মনে করে নারীর কাজের আবার মূল্য কী? তবে নারীদের কাজের স্বীকৃতি দিতে হবে।

একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, গ্রামের স্কুলে টয়লেট ও স্যানিটেশনের ব্যবস্থা করতে হবে। স্যানিটেশনবিহীন কোনো স্কুল চলবে না। এনজিও অনেক প্রকল্পে কাজ করে। তবে সাইন বোর্ডে দেখা যায় এনজিওর নাম থাকে অথচ আমাদের থাকে না। তবে এনজিওর পাশাপাশি আমাদের নামও রাখতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, প্রকল্পে ফসলি জমি যতটা পারা যায় এড়িয়ে যেতে হবে। হাওরে সড়ক নির্মাণ নয়, বরং উড়াল সড়ক নির্মাণ করতে হবে বলে মত দেন প্রধানমন্ত্রী। ব্রুনাই, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর সবজি নিতে চায়, এ বিষয়ে খোঁজ নিতে বলেন প্রধানমন্ত্রী। ঈদের আগে যেন স্বল্প মূল্যে দ্বিতীয় কিস্তিতে এক কোটি পরিবার খাবার পায়, সে বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *