রাকিব হাসান,মাদারীপুর

আগামীতে কালবৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টিতে জমির পাকা ধান নষ্ট হয়ে যাবে এমন দুশ্চিন্তায় কপালে ভাজ পরেছিল মাদারীপুরের রাজৈর পৌরসভার মোল্লা কান্দির গ্রামের কৃষক শহিদুল শেখের। বিষয়টি জানতে পেরে প্রায় ৫০ শতাংশ জমির ইরি ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিলেন মাদারীপুর জেলা ছাত্রলীগের নেতারা।

শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) সকালে মাদারীপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হাসান অনিক ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ বায়েজিদ হাওলাদারের নেতৃত্বে রাজৈর উপজেলা ছাত্র লীগের নেতাকর্মীরা কৃষক শহিদুল শেখ জমির পাকা ধান কেটে বাড়িতে পৌঁছে দেন।

ধান কাটা ও বাড়ি পৌঁছে দেওয়ায় জেলা ছাত্রলীগ নেতাদের পাশাপাশি অংশ নেন
রাজৈর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ মুকিম,সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সবুজ আকন,পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আকন,ঢাকা বিশ্বিদ্যালয়ের মুক্তিযাদ্ধা হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হোসেন শান্ত,জগন্নাথ হলের গনেশ,ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক শেখ মিথুনসহ অন্তত ২৫ জন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।

এবিষয়ে কৃষক মো. শহিদুল শেখ বলেন, আমি হতদরিদ্র কৃষক। আমার ধান পাকা ধান ক্ষেতে নষ্ট হচ্ছিল। কিন্তু শ্রমিক ও আর্থিক সঙ্কের কারণে ধান কাটতে পারছিলাম না। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আমাদের মাদারীপুরের সন্তান। সে আমার বিষয়টি জানতে পেরে আজ সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ধান কেটে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন। আমি দোয়া করি, আল্লাহ যেন তাকে আরও অনেক বড় মনের মানুষ তৈরী করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নির্দেশে এ কর্মসূচি পালন করেছেন তারা

মাদারীপুর ছাত্রলীগের নেতারা জানান,করোনাকালীন থেকে শুরু করে আমরা প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ছাত্রলীগ এই কার্যক্রম হাতে নেয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্র লীগের ঘোষণা অনুযায়ী আমরা কৃষকদের পাশে থেকে এভাবে কাজ করে যাবো।

আর এদিকে প্রচুর গরমের সাধারণ কৃষকরা কাজতে পারে না।এছাড়া সংকট দেখা দিয়েছে শ্রমিকদের এ অবস্থায় যখন কৃষকরা তাদের সোনালী স্বপ্ন ঘরে তুলতে পারছিলেন না, তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সারাদেশে তাদের পাশে দাঁড়ায়। এরই ধারাবাহিকতায় এবছরেও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ প্রেস বিজ্ঞপ্তির মধ্যমে ধান কাটা কর্মসূচি ঘোষণা করে।

সেই কর্মসূচির অংশ হিসেবে মাদারীপুর জেলা ছাত্রলীগ এই উদ্যোগ নেয় এবং তা বাস্তবায়ন করে।

রাজৈর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ মুকিম বলেন, দেশবাসীর দুঃখ কষ্টে, বিভিন্ন দুর্যোগে সব সময় ছাত্রলীগ সাধারণ মানুষের পাশে দাড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নির্দেশে আমরা কৃষকের ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছি। আমাদের এই কাজ অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বায়েজিদ হাওলাদার জানান, কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী এবারের বোরো মৌসুমেও কৃষকের ঘরে সম্পূর্ণ ধান না উঠা পর্যন্ত জেলা ছাত্রলীগের আওতাধীন সব উপজেলা ছাত্রলীগ এই কর্মসূচি পালন করবে।

মাদারীপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জাহিদ হাসান অনিক বলেন, কৃষক বাঁচলে বাঁচবে দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ এই শ্লোগানকে মনে প্রাণে ধারণ করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নির্দেশে কৃষকের ধান কেটে বাড়িতে পৌছে দেয়া শুরু করেছি। আমি খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি যে, রাজৈর উপজেলার মো্লার কান্দির গ্রামের হতদরিদ্র কৃষক মো.শহিদুল শেখের ৫০ শতাংশ ধান শ্রমিক ও আর্থিক সঙ্কটের জন্য ধান কাটতে পারছিল না। বিষয়টি জানার পর ধান কেটে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছি।

এদিকে দরিদ্র কৃষকের জন্য এমন তৎপরতায় প্রশংসা ভাসছেন জেলা ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ। বিশেষ করে রাজৈর উপজেলাজুড়ে সাধারণ মানুষ, কৃষকসহ সচেতন মহল তাদের ধন্যবাদ অভিনন্দন এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। আগামীতেও অসহায় মানুষের পাশে তারা এমন নির্ভরশীলতার প্রতীক হয়ে দাঁড়াবেন বলেই তারা প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *