মামুন পারভেজ হিরা,নওগাঁ ঃ নওগাঁয় পাওনা ৭ লক্ষ টাকা দেয়ার নাম করে ডেকে এনে গায়ে আগুন লাগিয়ে দিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের হওয়ার ৯ দিন অতিবাহিত হলেও মুল আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এ ব্যাপারে হত্যার সুবিচার পাওয়া নিয়ে হত্যার শিকার ব্যক্তির পরিবারের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। নওগাঁ সদর মডেল থানার পুলিশ বলছে আসামী গ্রেফতারের জোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, নীলফামারী জেলাধীন কিশোরগঞ্জ উপজেলার মোঃ হারুন মিয়ার পুত্র বুলবুল আহম্মেদ-এর চাচাতো ভাই হাবিবুর রহমান ওরফে হাবিব হোসেন দীর্ঘদিন ধরে নওগাঁ শহরের চকমুক্তার মন্ডলপাড়ায় স্বপরিবারে বসবাস করে আসছে। নানা কারনে প্রয়োজন দেখিয়ে উক্ত হাবিবুর রহমান ও তার স্ত্রী মোসলেমা খাতুন বুলবুল আহম্মেদের নিকট থেকে ৭ লক্ষ টাকা ধার নেয়। কিন্তু সে টাকা আর পরিশোধ করেনা। টাকা পরিশোধে নানা টালবাহানা করতে থাকে।

অবশেষে টাকা দেয়ার নাম করে ভাবি মোসলেমা খাতুন ও ভাই  হাবিবুর রহমান উক্ত হারুন মিয়াকে নওগাঁ ডেকে পাঠায়। টাকা নেয়ার জন্য হারুন মিয়া নওগাঁয় হাবিবুর রহমানের বাসায় আসেন।  রাতে পরিকল্পিত ভাবে উক্ত মোসলেমা খাতুন, হাবিবুর রহমান আরও ৩/৪ জনকে সাথে নিয়ে হারুন মিয়ার হাত পা ও মুখ বেঁধে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এক পর্যায় মুখের বাঁধন খুলে গেলে তার চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে নওগাঁ হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেন। ইতিমধ্যে তার শরীরের প্রায় ৮০ ভাগ পুড়ে যায়।

অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ঐ রাতেই তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরদিন ১৪ মার্চ সেখানে অবস্থার আরও অবনতি হলে ঢাকায় রেফার্ট করা হয়। রংপুর থেকে  ঢাকা নেয়ার পথে অবস্থার বেশী অবনতি হলে বগুড়া জিয়াউর রহমান হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় উক্ত হারুন মিয়া স্বজনদের নিকট ঘটনার বিবরন দিয়ে গেছেন যার একটি ভিডিও ফুটেজ স্বজনদের কাছে রয়েছে।

গত ১৬ মার্চ মৃত হারুন মিয়ার স্ত্রী মোছাঃ লিপি বেগম নওগাঁ সদর মডেল থানায় তার চাচাতো জা উক্ত মোসলেমা খাতুনকে ১ নম্বর ও মোসলেমার স্বামী হাবিবুর রহমান ওরফে হাবিব হোসেনকে ২ নম্বর আসামী উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাতনামা ২/৩ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়েরা করেন।

প্রেক্ষিতে পুলিশ মামলার ২ নম্বর আসামী হাবিবুর রহমান ওরফে হাবিব হোসেনকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু ঘটনার ৯ দিন আতিবাহিত হয়ে গেলেও মুল আসামী মোসলেমা খাতুনকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। এর ফলে নির্মমতার শিকার উক্ত হারুন মিয়ার পরিবারে হতাশা দেখা দিয়েছে বিচার পাওয়া নিয়ে।

নওগাঁ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাঃ ফায়সাল বিন আহসান বলেছেন পুলিশ এর ব্যপারে তৎপর রয়েছে। মুল আসামীকে গ্রেফতারের জোর চেষ্টা অব্যাহত আছে।#

 

One thought on “নওগাঁয় পাওনা ৭ লক্ষ টাকা দেয়ার নাম করে ডেকে এনে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা”
  1. নওগাঁয় পাওনা ৭ লক্ষ টাকা দেয়ার নাম করে ডেকে এনে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *