তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর তানোরে এলাকাবাসীর বাধা উপেক্ষা, পরিবেশ দুষণ ও জীববৈচিত্র্য হুমকিতে ফেলে  বহিরাগত লাঠিয়াল বাহিনীর পাহারা বসিয়ে পুকুর ভরাটের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার চাঁন্দুড়িয়া ইউনিয়নের (ইউপি) হাড়দহ মাঠে নাইস গার্ডেন সংলগ্ন প্রায় শতবিঘা আয়তনের এসব পুকুর ভরাট করা হচ্ছে। এদিকে পুকুর ভরাটে আঞ্চলিক সড়কে চলাচল নিষিদ্ধ ১০ চাকার ড্রাম ট্রাক ব্যবহার করা হচ্ছে। মাটি ভর্তি এসব ট্রাকের ওজন প্রায় ৪০ টন। অতিরিক্ত ওজনের কারণে প্রায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত তানোর-বায়া আঞ্চলিক সড়কের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। প্রতি ট্রাক মাটির দাম নেয়া হচ্ছে ৩ হাজার টাকা। অথচ সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সাধারণ নির্বাচনের বছরে এভাবে কাঁচা-পাকা রাস্তা নষ্ট হওয়ায় ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের মাঝেও ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। কিন্ত্ত অজ্ঞাত কারণে প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বহিরাগত লাঠিয়াল বাহিনীর পাহারা বসিয়ে প্রতিদিন রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত পুকুর
ভরাট করা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা অবৈধ পুকুর ভরাট বন্ধের জন্য প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে অভিযোগ করেও প্রতিকার পাচ্ছেন না। এমনকি অভিযোগকারীকে নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে।
এদিকে মাটি ভরাটের দায়িত্বে থাকা আলিমের (০১৭৬৩-৩৫৬৭০৬) সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জায়গার মালিক অনেক বড় মাপের ব্যক্তি রাজশাহী শাহমখদুম কলেজের জুয়েল, সে সবাইকে ম্যানেজ করেই কাজ করছেন, তাছাড়া প্রকাশ্যে এভাবে কাজ করা যাবে না। কোন দপ্তর থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি জানান, সেটা আমাদের বিষয়, যখন কাজ করবো তখন কথা হবে, কারো ক্ষমতা নেই বন্ধ করার, আমাদের পুকুর ভরাটের কথা প্রশাসন জানে, দু চার টাকার পত্রিকায় খবর করে আমাদের কিছুই হবে না।
স্থানীয়রা জরুরী ভিত্তিতে প্রশাসনের ভ্রাম্যমান অভিযান পরিচালনা করে পুকুর ভরাট বন্ধের দাবী করেছেন।
রাজশাহী পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক কবির হোসেন জানান, জমির শ্রেণী কি সেটা না দেখে কিছু বলা যাবে না। তবে পুকুর হলে সেটা ভরাটের কোনো সুযোগ নাই, কেউ আইনের উর্ধে নয়। তিনি বলেন, সরেজমিন তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
স্থানীয়রা বলেন, প্রতিদিন রাতে লাঠি-সোঁটা হাতে লাঠিয়াল বাহিনীর পাহারা বসিয়ে ভিতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে
পুকুর ভরাট করা হচ্ছে।
গত ২৭ মার্চ রাতে সরেজমিন দেখা যায়, চাঁন্দুড়িয়া হাড়দহ মাঠে  পুকুর ভরাট কাজ চলছে।সেখানে রয়েছে মাটি টেনে সমান করার মেশিন, ফেলা হয়েছে ইট। তানোর-বায়া আঞ্চলিক সড়কে মাটির স্তুপ দেখে বোঝার উপায় নাই এটা পাকা সড়ক, একটু বৃষ্টি হলেই তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়বে।
স্থানীয়রা জানান, দেশের সরকার প্রধান এবং উচ্চ আদালতের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে কৃষি জমি নস্ট ও পুকুর ভরাট করা যাবে না। অথচ তার পরেও কিভাবে প্রকাশ্যে দিবালোকে এভাবে পুকুর ভরাট করা হচ্ছে। তবে কি এরা সরকার প্রধান ও উচ্চ আদালতের থেকে বেশী শক্তিশালী বা ক্ষমতাবান। এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পঙ্কজ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, দিনের বেলা খোঁজখবর নিয়ে দেখা হবে। #
 তানোর প্রতিনিধি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *