আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি ঃ চলছে জৈষ্ট মাস, আর জৈষ্টের প্রচন্ড গরমে দুর্বিষসহ জনজীবন। হাঁসফাঁস লাগা এই গরম থেকে তাৎক্ষনিক স্বস্তি পাওয়া, শরীরের তাপমাত্রা কমাতে এবং পুষ্টির চাহিদা মেটাতে তালের শাঁস বিক্রেতার দোকানে ভীড় জমাচ্ছেন অগনিত মানুষ। কেউ সেখানে বসেই খাচ্ছেন, কেউ কেউ সপরিবারে খাওয়ার জন্য নিয়ে যাচ্ছেন বাসা-বাড়িতে।
ক্রেতাদের মধ্যে অধিকাংশই কায়িক পরিশ্রমি শ্রমজীবী মানুষ। সান্তাহারসহ উপজেলার শহর-বন্দরের মোড়ে মোড়ে দেখা যাচ্ছে তাল শাঁস বিক্রির অস্থায়ী দোকান।
প্রচুর উপকারি ফল তাল শাঁসের কদর এখন আকাশচুম্বী।
চাহিদার কারণে এবার দামও কিছুটা বেশি। প্রতিটি শাঁস বিক্রি হচ্ছে চার টাকা থেকে পাঁচ টাকা মুল্যে। হালি প্রতি ১৬ টাকা থেকে বিঁশ টাকা হিসাবে বিক্রি হচ্ছে। সান্তাহার শহর পার্শবর্তী খয়ড়াবাদ গ্রমের মৌসুমি তাল শাঁস ব্যবসায়ী আব্দুল জলিল (৫৫), তার মুল পেশা ইট ভাঁটির সর্দারী করা। বর্তমানে ইট বানানো বন্ধ, এই বেকার সময়ে বসে না থেকে করছেন তাল শাঁস বিক্রির ব্যবসা।
তিনি সান্তাহার শহরের রেলওয়ে লেভেলক্রসিং (রেলগেটের ভিতর) দুই লাইনের মাঝে বসে প্রতিদিন এব্যবসা করে আসছেন। তিনি জানান, প্রায় ২৫ বছর ধরে এমৌসুমী ব্যবসা করে আসছেন।
স্থানীয় হাট-বাজারের বিক্রির পাশাপাশি সৈয়দপুর,রংপুর ঢাকা,চট্রগ্রামসহ দেমের বিভিন্ন জেলা শহরে এই শাঁস প্রাইকারী ভাবে বিক্রি করা হয়। আব্দুল জলিল ছারাও অন্যসব ব্যবসায়ীরা গ্রামে গ্রামে ঘুড়ে গাছে থাকা তালের কাঁদি কেনেন।
কাঁদিতে তালের পরিমান ও আকার অনুমান করে সর্বোচ্চ পাঁচশ’ থেকে সাতশ’ টাকায় কেনেন একেকটা গাছ। গাছ থেকে কাঁদি কেটে নিতে খরচ পড়ে পাঁচশ’। দুরত্ব ভেদে পরিবহন খরচ হয় দুইশ’টাকা। তাল কেটে শাঁস বিক্রি
হয় কমপক্ষে আড়াই হাজার টাকা।
মুনাফার পরিমান বিনিয়োগের সমানপ্রায়। দাম যেমন বেশী তেমনি লাভও বেশী করছেন ক্রেতাদের এমন অভিযোগে জবাবে তাল শাঁস ব্যবসায়ীরা প্রশ্নের সুরে বলেন শুধু লাভের পরিমান দেখলে হবে, আমাদের পরিশ্রম ও কষ্টটাও দেখতে হবে। সান্তাহার পৌর শহরের পৌঁওতা গ্রামের মনছুর আলী নামের এক ক্রেতা বলেন, আমি নিজে এবং বাড়ির সকলে কচি তালের সুস্বাদু শাঁস খুব পছন্দ। এজন্য দামের দিকে নজর দেই না।
তাল শাঁস খাওয়া বিষয়ে চিকিৎসক ডা. মোঃ মোস্তাফিজার রহমান বলেন, কচি তাল শাঁসের রয়েছে অনেক উপকারিতা। কচি তাল শাঁসের পানি খনিজ পানির চেয়ে অনেক বেশী উপকারি এবং এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ ভিটামিন। পানি সমৃদ্ধ কচি তাল শাঁস খাওয়া মানুষেরকোলন ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা কম থাকে।
তিনি আরো বলেন, তাল শাঁস পরিষ্কার পরিছন্ন ভাবে না খেলে ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হবার ঝুঁকি থাকে। পাশাপাশি শাঁস কচি না হলে পেট কামড়ানো ব্যথা হয়। সে কারনে শক্ত হয়ে যাওয়া শাঁস না খাওয়াই ভাল।