আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রেলপথে ইরানে জ্বালানি রফতানি শুরু করেছে রাশিয়া। ইউক্রেনে আক্রমণের কারণে দেশটির পশ্চিমা ক্রেতারা মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার পর তেল ও গ্যাসের জন্য নতুন বাজার খুঁজতে থাকা রাশিয়া প্রথমবারের মতো রেলপথে ইরানে জ্বালানি সরবরাহ করছে। সংশ্লিষ্ট তিনটি সূত্রের বরাতে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে রাশিয়া ও ইরান। উভয় দেশ একে অপরের অর্থনীতিকে সহযোগিতা করে আসছে। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার প্রভাব দুর্বল করতে তেহরান ও মস্কো ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। উভয় দেশই পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাকে অযৌক্তিক বলে দাবি করে আসছে।
ইউক্রেনে মস্কো নিজেদের তথাকথিত বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর পর রুশ তেল পণ্যের ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারকে নতুন রূপ দিয়েছে। এখন দূর পথে ট্যাংকার ব্যবহার করে জ্বালানি রফতানি করা হচ্ছে। একই সঙ্গে জ্বালানি পরিবহনের নতুন নতুন উপায়ও কাজে লাগানো হচ্ছে।
কয়েক বছর ধরে ইরানের ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এবং বিশ্ব বাজারে দেশটির প্রবেশাধিকার সীমিত।
রেলপথে জ্বালানি সরবরাহের বিষয়ে রাশিয়া ও ইরানের তেল মন্ত্রণালয় রয়টার্সের পক্ষ থেকে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।
গত বছর রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাক ইরানের সঙ্গে তেল পণ্যের বিনিময় সরবরাহ শুরু করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সূত্র জানিয়েছে, বাস্তবে এমন বিনিময় সরবরাহ শুরু হয়েছে চলতি বছর।
দুটি সূত্র রয়টার্স জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে ইরানকে ৩০ হাজার টন পেট্রোল ও ডিজেল সরবরাহ করেছে।
তৃতীয় আরেকটি সূত্রও এই সরবরাহের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। কিন্তু পরিমাণ সম্পর্কে নিশ্চিত করতে পারেনি। এই জ্বালানি রাশিয়া থেকে কাজাখস্তান এবং তুর্কমেনিস্তান হয়ে রেলপথে সরবরাহ করা হয়।
একটি সূত্র জানিয়েছে, ইরান থেকে কিছু পেট্রল কার্গো ট্রাকে করে ইরাকসহ প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোতে পাঠানো হয়েছিল।
মধ্য এশিয়ার একজন তেল ব্যবসায়ী বলেছেন, ইরান একটি তেল উৎপাদনকারী দেশ এবং নিজস্ব শোধনাগার রয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি দেশটিতে জ্বালানির অভ্যন্তরীণ চাহিদা উৎপাদনকে ছাড়িয়ে গেছে।
বিষয়টি সম্পর্কে জ্ঞাত দুই ব্যবসায়ী বলেছেন, ২০১৮ কাস্পিয়ান সাগর দিয়ে ট্যাংকারের মাধ্যমে ইরানকে অল্প পরিমাণ জ্বালানি সরবরাহ করেছিল রাশিয়া। কিন্তু এখন রুশ তেল কোম্পানিগুলো রেলপথে ইরানে ডিজেল ও পেট্রোল রফতানিতে আগ্রহী। কারণ সমুদ্রপথে রফতানির ব্যয় অনেক বেশি এবং শিল্পোন্নত দেশগুলোর পক্ষ থেকে রুশ জ্বালানির সর্বোচ্চ মূল্য বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
তবে সূত্রগুলো বলছে, রেলপথে রফতানি বরবার বাধার সম্মুখীন হয়। এক সূত্রের মতে, চলতি বছরে ইরানে জ্বালানি সরবরাহ বাড়বে বলে আমরা আশা করছি। কিন্তু রেলপথে ইতোমধ্যে আমরা লজিস্টিকস নিয়ে বেশ কিছু সমস্যা দেখতে পাচ্ছি। এসব সমস্যা ক্রমবর্ধমান রফতানিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।