চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি: যশোরের চৌগাছা উপজেলার স্বরুপদাহ ইউনিয়নের খড়িঞ্চা গ্রামের বিধবা নারী রোকেয়া খাতুন (৬৭)। প্রায় মাঝেমধ্যে আসেন চৌগাছা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ইরূফা সুলতানার অফিসে।
রোকেয়া প্রায়ই চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানার দপ্তরে আসেন। আজ ৯ মে (মঙ্গলবার) সকালে অফিসে আসেন এবং ইউএনওর গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দোয়া করেন। ইউএনওকে তিনি সম্বোধন করেন ‘আমার সন্তান, আমার মেয়ে।’
গত রমজান মাসে তিনি একটি বেল নিয়ে আসেন ইউএনওর জন্য। ইউএনও বেল না নিতে চাইলে তিনি বলেন আমি আমার সন্তানের জন্য এনেছি, তুমি নিবা না কেন?
গ্রামের মৃত মতি বিশ্বাসের মেয়ে রোকেয়া খাতুনের বড় ছেলে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ছোট বেলাতেই। ব্রেনস্ট্রোক বা এজাতীয় কোন রোগের কারনে বৃদ্ধা রোকেয়ার কথা স্পষ্ট বোঝা যায় না। অস্পষ্ট শব্দে তিনি বলেন সন্তানের জন্য মায়া করে, তাই প্রতিদিন (প্রায়ই) দেখতে আসি।’
বৃদ্ধা বয়স্ক ভাতা পান। গত সেপ্টেম্বরে তিনি ভাতার টাকা তুলেছেন। এরপর গ্রামের কিছু ব্যক্তি তার বাড়িতে গিয়ে (তার কাছে) টাকা দাবি করেছেন বলে তিনি আর ভাতার টাকা তুলতে পারেন নি বলে অভিযোগ করলেন।
বললেন আমি বলেছি কোন টাকা দিতে পারবোনা। আমার সন্তানের কাছে যাবো। সে ঠিক করে দেবে। তখন টাকা তুলবো।
ইউএনও পরম মমতায় তার ভাতা তোলার বইটি নিয়ে ছবি তুলে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে পাঠিয়ে সেটি দেখতে বললেন। বৃদ্ধাকেও সেখানে পাঠালেন।
কিছুক্ষণ পর সমাজসেবা কর্মকর্তা ফোন করে জানালেন তার টাকা আছে, ব্যাংকে গেলেই পাবেন। ইউএনও যেন স্বস্তি পেলেন।
এ সময় বিধবা রোকেয়া খাতুন দাবি করেন, বৃদ্ধার দাবি তাকে একটি ঘর (আশ্রয়ণের ঘর ও জমি) দিতে হবে। ইউএনও আস্বস্ত করলেন, এবার ঘর আসলে আপনাকে দেয়া হবে। বৃদ্ধার সে কি খুশি।
আরও বললেন, ইউএনও কে আমার সন্তান, তোমার মা’ কে লিখে দাও। তোমার নাম বাবার নাম ঠিকানা।
নির্বাহী কর্মকর্তা ইরূফা সুলতানা বলেন, এমন অসহায় সহজ সরল মানুষ পাশে থাকুন, নিজের অন্তরটাতেও ভালো লাগবে।