ঃ শাহানুর আলম উজ্জলঃ
একঝাক সাহসের শতদল ফুটে দুঃসাহসের অভিযাত্রা-
হঠাৎ বিষন্নরা জেগে ওঠে, জেগে ওঠে কষ্টেরা, অভিমানীরা।
স্বাধীনতার ডাক এসেছে বলেই,
ঝমঝম বৃষ্টিরা থেমে যায়, মেঘেরা নিয়েছে ছুটি।
পোয়াতি বউরা সন্তান প্রসবের কথা ভুলে গেছে।
বন্ধ হয়েছে পা পাড়ানোর মাঝে ঢেঁকি নাঁচার তাল।
মায়েরা বোনেরা, শালিরা কোমর বাঁধে,
সজোরে শাড়ী পেচিয়ে এক শক্তি সাহসের নেশায়।
কাঁনামাছি, গাদি খেলা সাঙ্গ করে বালক বালিকারা ছুটে আসে।
শিশুদের চোখে অগ্নি জ্বলে, তাদের কান্না পায়না ক্ষুধায়,
লুকাইনা মায়ের আঁচলে।
স্বাধীনতার ডাক এসেছে বলেই-
রুপভান ভাবি আর সলেমান ভায়ের ঝগড়া থেমে যায়।
থেমে যায় দাদীর পানের বাটার শব্দ,
কৃষকেরা মাঠ ছেড়ে চলে আসে স্বাধীনতার ডাকে।
কামার, কুমোর, শিক্ষক, সাংবাদিক, পেশাজীবিরা
এক কাতারে। যেন জায়নামাজের সারি।
অগ্নি উনোন জ্বলেনা, হাঁশ, মুরগি আর পায়রার ঘরের কপাট খোলা।
দুঃসাহসের এক আকাশে অগ্নির মিছিলে।
দা, শাবল, খুন্তা, কুদাল, কাঁচি, হাসুয়া নিয়ে-
ঢাল সড়কি, বল্লম, টেটা হাতে যুবক যুবতীরা।
এই মাটিতে হঠাৎ থরকম্প, সাহসের সাহসিকা-
এখানে দুঃখরা আত্মহত্যা করেছে, ভালোবাসা এখন অসাড়, মৃত।
শুধু একটাই ভালোবাসা, প্রেম এ মাটি, মায়ের ছায়াতল।
এখানে বৃদ্ধরা বজ্রনিনাদ হুংকারে যুবকের বেশে
রুগ্ন রোগীরা তীব্র যন্ত্রনা ভুলে আজ সহযাত্রি।
চোর, ডাকাত আর বেশ্যার দল ঘুমঘোরে হঠাৎ জেগে ওঠে
মাতৃকার টানে, মাটির ভালোবাসায়।
এখানে মসজিদের ঈমাম, ডাক পিয়ন, চোরাকারবারি,
বড় হুজুর, ছোট হুজুর সকলের চোখে-মুখে শৃংখল ভাঙ্গার গান।
স্বাধীনতার ডাক এসেছে বলেই-
স্বমুস্বরে ঝাক বাঁধা দামালেরা, নতুন স্বপ্নের স্বপ্নীল ছবি আঁকে।
দিন রাতের নয় মাস, বন বাঁদাড়ে, হাটে, মাঠে, কোনায় কানায়,
নদীতে, সাগরে, গলিতে, রাস্তায় বারুদের মিছিল।
বোবা মানুষেরা চিৎকার প্রতিবাদের জনারন্যে-
দগদগে রক্তে, বিভৎস চেহারায়, বিক্ষুব্ধ নিশানাবাজের মত
যুদ্ধের হলি খেলা অবিরত।
ভয়ে লেজ গুটিয়ে, বিশ্বাস বিসর্জন দিয়ে, শিয়াল শাবকের বাচ্চারা-
কেঁন্নোর মত গোটো-মোটো হয়ে পালিয়ে যায়, বাপের নাম বলে বলে
কুর্নিশে দু’হাত তুলে মাফ চাই শালার পাকেরা।
লেখক: শাহানুর আলম উজ্জল,সাধারন সম্পাদক,প্রেস ক্লাব,চৌগাছা,যশোর।
One thought on “সাহসের অভিযাত্রার নাম স্বাধীনতা’”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *