মোঃ হাবিব ওসমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার এলাকা থেকে মারামারির কাজে ব্যবহৃত সদ্য তৈরী করা ১০টি ঢাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় ঢাল তৈরির সরঞ্জামাদিও জব্দ করা হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাতে বারবাজার ইউনিয়নের সাদিকপুর গ্রামের রেনু দাসের বাড়ি থেকে এগুলো উদ্ধার করা হয়।

পুলিশের ধারনা মারামারির প্রস্ততি হিসেবে কোন প্রভাবশালী মহল এগুলো তৈরী করাচ্ছিল। তবে সংখ্যালঘু পরিবারের একটি বাড়িতে কেবা কারা এগুলো তৈরী করাচ্ছিল তা এখনও স্পষ্ট হয়নি এবং এ ঘটনায় এখনও কেউ আটক হয়নি।

স্থানীয়রা জানায়, গত কয়েকদিন ধরে সাদিকপুর গ্রামের রেনু দাসের বাড়িতে অপরিচিত কয় ব্যক্তি মারামারিতে আত্মরক্ষার জন্য ব্যবহার হওয়া ঢাল তৈরির কাজ করছিল। তারা কি তৈরী করছে কে তাদের দিয়ে তৈরী করাচ্ছে এবং তাদের পরিচয়ও লোকজনের কাছে বলতে চায়নি তারা। এরপর এলাকার লোকজন বিষয়টি প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর করলে পুলিশ এগুলো অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করে।

রেনু দাসের ভাই ভক্ত দাস জানান, তাদের বাড়িতে গত ৩ দিন ধরে কয়েকজন অপরিচিত লোক ঢাল তৈরি করতে আসতো। সকালে এসে সারাদিন ঢাল তৈরী করে তাদের বাড়িতে রেখে বিকেলে চলে যেত। তাদেরকে এর আগে এ এলাকায় দেখেননি। তাদের বাড়ি কুষ্টিয়া বা শৈলকুপা এলাকায় বলে শুনেছেন। তবে কেবা কারা এগুলো তৈরী করাচ্ছে সে ব্যপারে তিনি মুখ খোলেননি।

তবে এলাকার একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দক্ষিণাঞ্চালের মধ্যে বারবাজার হাট অন্যতম। এখানে রয়েছে বৃহদ গরু ছাগলের হাট, সবজি ও মাছের পাইকারী এবং খুচরা বাজার। হাট ইজারা সূত্রে দীর্ঘদিন ধরে এ বাজারে আশপাশের গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের জীবিকা আসে। কিন্ত চলতি বছর হাটের দরপত্র আহবানের পর থেকে এ হাটকে ঘিরে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা বারোবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ ও পাশর্^বর্তী কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেন খাঁর অনুসারীরা বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। সম্প্রতি হাটের ইজারা আয়ূব খাঁর পক্ষে সম্পন্ন হওয়ার পর কর্ম হারাচ্ছেন কালামপন্থীরা।

ফলে এ হাটকে কেন্দ্র করেই বিস্তর এলাকায় গত কিছুদিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রতিনিয়ত চলছে উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি শোডাউন ও উত্তেজনা।

সম্প্রতি উদ্ধার হওয়া ঢাল সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাতে কালামপন্থী সন্ত্রাসী মনির হোসেন তৈরী করাচ্ছিল এমন অভিযোগ এনে রোববার সন্ধ্যায় গ্রেফতারের দাবিতে বারোবাজারে সমাবেশ করেছে আ্য়ুব পন্থীরা। সাধারন মানুষেরও ধারনা এ হাটকে কেন্দ্র করেই কোন গ্রুপ মারামারির প্রস্ততি হিসেবে এ ঢাল তৈরী করতে পারে। তবে উভয়গ্রুপ প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে এলাকার কেউ মুখতে সাহস পাচ্ছেন না। এলাকাবাসী বলছে,এখনই প্রশাসন হস্তক্ষেপ না করলে যে কোন সময় বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে।

কালীগঞ্জ থানার ওসি আব্দুর রহিম মোল্ল্যা জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার গভীর রাতে সাদিকপুর গ্রামের রেনু দাসের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মারামারির কাজে ব্যবহৃত ১০টি ঢাল এবং এ তৈরির কাজে ব্যবহৃত জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ঢাল তৈরির কাজে জড়িত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন,এলাকায় এখন পুলিশী নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *