মামুন পারভেজ হিরা,নওগাঁ ঃ নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডর অধিগ্রহণ করা সম্পত্তিতে একের পর এক পাকা স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে।

এসব স্থাপনার নির্মাণ কাজ বন্ধের জন্য নোটিশও দিচ্ছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। কিছুদিন বন্ধ রাখার পর রহস্যজনক ভাবে ওইসব স্থাপনার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করছেন দখলদারেরা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, অভিযোগ দেওয়া হলেও আর আমলে নেন না পাউবোর কর্মকর্তারা। পাউবোর কর্তাদের ম্যানেজ করে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়।

বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তারা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন পাউবোর কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, গত ৫ বছরে মান্দা, আত্রাই ও রাণীনগর উপজে লায় আত্রাই নদ ও ফকিন্নি নদীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পাউবোর অধিগ্রহণ করা সম্পত্তিতে অন্তত পাঁচশ’র বেশি পাকা নির্মাণ করা হয়েছে।

এসব নির্মাণের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হলে প্রাথমিক ভাবে নোটিশ দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এরপর কিছুদিন নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখেন দখলদারেরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মান্দা পাঁজরভাঙ্গা বাজারের একাধিক বাসিন্দা জানান, পাঁজরভাঙ্গা বাজার এলাকায় নতুন করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছেন ফজলুল করিম বাবু ও বুলবুল হোসেন।

অভিযোগ দেয়ার পর স্থাপনা দুটির নির্মাণ কাজ বন্ধের জন্য নোটিশ দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড।

কিছুদিন বন্ধ রাখার পর ফজলুর করিম বাবু সম্প্রতি ওই স্থাপনার ছাদ ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন করেন।

অভিযোগ উঠেছে দেড় লাখ টাকায় পাউবোর কয়েকজন
কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে এই কাজ সম্পন্ন করেন তিনি। এরই মধ্যে এই বাজারে আলাউদ্দিন প্রামাণিক, আতাউর রহমান, গৌড় চন্দ্র প্রামাণিক, জালাল হোসেন একইভাবে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করেন। আতাউর রহমান নির্মাণ করছেন বহুতল ভবন।

এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত ফজলুল করিম বাবু বলেন, ‘স্থাপনা নির্মাণের সময় নোটিশ দিয়ে কাজ করে দেওয়া হয়েছিল।

পরবর্তীতে পাউবো অফিসে যোগাযোগ করে ছাদ ঢালাইয়ের কাজ শেষ করেছি। কীভাবে ম্যানেজ করলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব বিষয়ে বলা যাবে না।’

আত্রাই উপজেলা বাজারের স্থানীয় করিম উদ্দিন ও মহসিন আলী জানান, আত্রাই নদের দুই পাশে নদের সরকারি জায় গা দখল করে অর্ধশতাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তিরাবাড়িঘর নির্মণ করলেও পাউবো’র কর্তারা অবৈধ্য সুযোগ-সুবিধা নেয়ায় তারা এগুলো উচ্ছেদ করেন না।

মান্দা জোতবাজার বণিক সমবায় সমিতির সভাপতি ফজলুল বারী সাফি বলেন,জোতবাজার চৌরাস্তা মোড়ের অদুরে পানি নিষ্কাশনের ড্রেন বন্ধ করেপাউবোর সম্পত্তিতে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের জন্য এলাকাবাসি মানববন্ধন ও প্রতি বাদ সমাবেশ করেছে। পত্রপত্রিকায় বহু লেখালেখি হয়েছে। পাউবোর সকল দপ্তরে অভিযোগও দিয়েছি। কিন্তু স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ হয়নি।

তবে পকেট ভারী হয়েছে পাউবোর কর্মকর্তাদের। দ্রুত অবৈ ধ্য সুযোগ-সুবিধা নেয়ায় পাউবো’র কর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

এ ব্যাপারে পাউবো নওগাঁর সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মহসীন রেজা বলেন,‘পাউবোর সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করে ঘর নির্মাণ কাজে এ দপ্তরের কেউ জড়িত আছে কি না আমার জানা নেই। তবে আমি জড়িত নই।’

পাউবো নওগাঁর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী পবিত্র কুমার পাল এ বিষয়ে মোবাইলফোনে কথা বলতে রাজি হননি।

নওগাঁ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী ফইজুর রহমান বলেন, এটা দীর্ঘদিনের সমস্যা। এভাবে মোবাইলে কথা হবে না। অফিসে আসেন বলে সংযোগ কেটে দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *