মোঃ হাবিব ওসমান, ঝিনাইদহ প্রতিবেদকঃ
রডের কেজি ২শ ৪৫ টাকা দরে ক্রয় করেছেন ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরপুর-দূর্গাপুর ইউনিয়নের বেজপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক শিপ্রা রাণী সাহা।
স্কুলের ফ্যান ক্রয়, ফুলের বাগান করা, রং ক্রয় ও লেবার বিলের ভাউচারে রয়েছে অসংগতি ও টাকার বিনিময়ে বানি য়েছেন ভুযা দাতা সদস্য।
এসব ভুয়া বাজেট দেখিয়ে ও ভুয়া দাতা সদস্য বানিয়ে তিনি লাখ লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন উক্ত বিদ্যালয়ের জমি দানকারী পরিবারের সদস্য রবিউল ইসলাম।
অনুলিপি প্রেরণ করেছেন মহা-পরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, উপ-পরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহ।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, কালীগঞ্জ উপজেলার ৬৩নং বেজপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রবিউল ইসলামের পরিবারের পক্ষ থেকে  জমি দান করেন।
কিন্তু তার পরিবারের কাউকে কখনোই দাতা সদস্য হিসাবে অনÍর্ভুক্ত করা হয়নি। বরং বেজপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক শিপ্রা রাণী সাহা নগদ অর্থের বিনিময়ে জীবন কুমার ঘোষকে বারবার দাতা সদস্য হিসেবে নির্বাচিত করে স্কুলের সভাপতি করেছেন।
বর্তমানে প্রধান শিক্ষক শিপ্রা রাণী সাহা ডুমুরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িবÍ পালন করছেন। লিখিত অভিযোগে আরও জানা যায়, জীবন কুমার ঘোষের কোন জমি ওই বিদ্যালয়ে কখনও ছিল না।
তার অভিযোগের পেক্ষিতে জীবন কুমার ঘোষকে ২২ আগষ্ট ২০২২ তারিখে বাদ দিয়ে অন্য আর একজনকে ৮৭ শতাংশ জমির দলিল দেখিয়ে দাতা সদস্য হিসাবে নির্বাচিত করেছেন সাবেক প্রধান শিক্ষক শিপ্রা রাণী সাহা।
কাগজ পত্রে দেখা গেছে  স্কুলটি ২৬ শতাংশ রেকর্ডকৃত জমির উপর অবস্থিত। ওই ৮৭ শতাংশ দলিলটির সাথে স্কুলের জমির দাগ, খতিয়ান ও জমির অংশের কোন মিল নেই। এমনকি রেকর্ড বা স্কুলের নামে নামজারিও করা নেই।
সেক্ষেত্রে তার সন্দেহ বর্তমান দলিলটিতেইও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন প্রধান শিক্ষক।
ওই স্কুলে বিভিন্ন সময়ে তার নিজের লোকদের অবৈধভাবে দাতা ও সভাপতি নির্বাচিত করে প্রধান শিক্ষক।
তারা যোগসাজশে সরকারি বরাদ্ধকৃত টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
বিদ্যালয়ে প্রতি বছর সরকারি অনুদান ¯িøপ, রুটিন মেইনটেইন্স ও প্রাক-প্রাথমিকের জন্য বরাদ্ধ দেওয়া হয়, কিন্তু প্রধান শিক্ষক সরকারি অর্থের কোন কাজ না করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
২০২১-২০২২ অর্থ বছরের ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য দুই লক্ষ টাকা বরাদ্ধ আসে ওই স্কুলে, সেই টাকার ক্ষুদ্র মেরামতের কাজের জন্য ২৪৫ টাকা দরে রড ক্রয় করে ভাউচার দাখিল করেছেন। রং ক্রয় ও লেবার বিল, নামে-বেনামে দেখিয়ে ভাউচার দাখিল করেছেন।
তিনি ¯িøপ এর বাজেটে প্রতি বছর ২ টা করে সিলিং ফ্যান, ১ম থেকে ৫ম শ্রেণীর ছাত্র/ছাত্রীদের খাতা, কলম, টিফিন বাটি, জ্যামিতি বক্স, এলইডি লাইট ক্রয় ও বাগান তৈরি দেখি য়েছেন।
স্কুলের টিউবওয়েল মেরামত বাবদ দেখিয়েছেন প্রতিবছর ২ হাজার টাকা কিন্তু ওই স্কুলে কোন টিউবওয়েল নেই। স্কুলের আলমারি মেরামত বাবদ দেখিয়েছেন ১২ হাজার ৫০০ টাকা ।
এছাড়া স্কুলে আনুষাঙ্গিক ক্রয় বাবদ যে ভাউচার দাখিল করেছেন আদৌও তিনি ওই বাজেট গুলোর কিছুই ছাত্র-ছাত্রীদের দেননি বা ক্রয়ও করেননি।
ভুয়া বিল ভাউচার দেখিয়ে তিনি সরকারি সমুদয় অর্থ আত্ম সাৎ করেছেন। প্রধান শিক্ষক শিপ্রা রাণী সাহা আত্বসা তকৃত সরকারি অর্থ উপজেলা থেকে জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ভাগ দেন বলে প্রচার করেন তিনি।
একারণে তার কিছুই হবেনা বলে দাম্ভিকতা দেখান। প্রধান শিক্ষকের অবৈধ কাজের সহযোগিতা করেন সহকারি শিক্ষ ক সেলিম উদ্দিন। তিনি প্রধান শিক্ষকের আস্থা ভাজন শিক্ষ ক হিসেবেও পরিচিত।
একারণেই সাবেক প্রধান শিক্ষক শিপ্রা রাণী সাহা বার বার অবৈধ ভাবে নিজের স্বার্থে বিভিন্ন ব্যক্তিকে দাতা সদস্য করেছেন।
প্রধান শিক্ষক শিপ্রা রাণী সাহা জানান, আমরা কন্ট্রাক দিয়ে ছিলাম এটার তৈরির খরচ রড আনার খরচসহ দাম ধরা হয়েছে। আমি স্কুলের যে কাগজ পেয়েছিলাম সেই অনুযায়ি তাকে দাতা সদস্য বানানো হয়েছে।
জীবন কুমার ঘোষকে কেন বার বার দাতা সদস্য করে সভাপতি বানানো হয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি এড়িয়ে যান।
কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদ হাসান  বলেন, সকল অসংগতি তুলে ধরে রবিউল ইসলাম আমাদের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন । তার প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আনন্দ কিশোর সাহা জানা ন. আমাদের কাছে একটি অভিযোগ এসেছে আমরা তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছি।
যদি অভিযোগ প্রমানিত হয় তাহলে প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা গ্রহন করব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *