মোঃ হাবিব ওসমান, (ঝিনাইদহ) থেকে:
চায়না দাস একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী। কাক ডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠে শহর পরিস্কার করার কাজে নেমে পড়েন।
শীত বর্ষা উপেক্ষা করে বছরের প্রতিটি দিনই তাকে এ কাজ করতে হয়।
এ কাজ করে পাওয়া সামান্য উপার্জন দিয়েই চলে পরিবা রের দিনাতিপাত।
অনেক সময় খেয়ে না খেয়েও চলে দিন। যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে শহর পরিস্কার থাকে তাদের খোঁজ রাখে না কেউ।
চায়না দাসের বয়স এখন ৬৫ বছর। বয়সের ভারে এখন আর আগের মত কাজ করতে পারেন না।
গতবুধবার চায়না দাস সহ কাজ থেকে বিদায় নিয়েছেন সচি ন্দ্রনাথ দাস, সরেন্দ্রনাথ দাস, তুলি দাস ও কাত্তিক দাসসহ ৬ জন।
তারা সবাই ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করতেন।
তাদের সাবার বসবাস কালীগঞ্জ শহরের ঢাকালে পাড়ায়।
শহরের সবাই পরিচ্ছন্নতার কাজ করা এসব মানুষদের ভুলে গেলেও ভুলে যাননি কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ। বুধবার ২৪ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিক ভাবে তাদের বিদায় দেওয়া হয়।
এদিন পৌরসভা কার্যালয়ে তাদের হাতে ১৫ হাজার টাকা করে প্রত্যেকের চেক তুলে দেন মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, পৌর সচিব আব্দুল্লাহ আল মাসুম, পৌর লাইসেন্স পরিদর্শক সামুদুর রহমান, কাউন্সিলর রুবেল হোসেন, মহিলা কাউন্সিলর শামছুন্নাহার বীনা ও মমতাজ বেগম।
বিদায় বেলায় টাকা পেয়ে খুশি এসব পরিচ্ছন্নতাকর্মী।
এর আগে কখনো বিদায় নেওয়া পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের এককা লীন টাকা দেওয়া হয়নি বলেও জানান তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশ রাফুল আলম আশরাফ দ্বায়িত্ব নেওয়ার পর পরিচ্ছন্ন তাক র্মীদের কথা চিন্তা করে একটি ফান্ড গঠন করে।
এ ফান্ডে প্রতিমাসে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মাচারীদের থেকে ১০০ টাকা এবং পৌর মেয়র ৫০০০ টাকা জামা করেন।
জমাকৃত এসব টাকায় পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের চিকিৎসা ও বিপদ-আপদে দেওয়া হয়ে থাকে।
একই ফান্ড থেকে এবারই প্রথম একসাথে ৬ পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে প্রায় এক লাখ টাকা তুলে দেওয়া হয়।
বিদায় নেওয়া পরিচ্ছন্নতাকর্মী সচিন্দ্রনাথ জানান, ছোট বেলা থেকে শহর পরিচ্ছন্নতার কাজ করছি। কখনো কোন মেয়র বা কোন ব্যক্তি আমাদের কথা ভাবেনি।
আর্থিক সহযোগীতা নিয়ে পাশে দাড়াইনি। এই প্রথম কোন মেয়র আমাদের কল্যাণের কথা চিন্তা করে ফান্ড গঠন করে ছে।
বিদায় বেলায় বৃদ্ধ বয়সে সামান্য কিছু টাকা পেয়েই আমরা খুশি।
কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ জানান, আমি দ্বায়িত্ব নেওয়ার পর বিশেষ করে শহর পরিস্কা র করার কাজে নিয়োজিত মানুষদের কথা সবার আগে মনে পড়ে। তখনই আমি তাদের কল্যাণে একটি ফান্ড গঠন করি।
তখন থেকে প্রতি মাসে পৌর কর্মকর্তা-কর্মাচারী দের থেকে ১০০ টাকা এবং আমি ৫০০০ টাকা জমা শুরু করি।
সেই জমানো টাকা থেকে তাদের বিভিন্ন সময় তাদের প্রয়ো জনে টাকাগুলো ব্যয় করা হয়ে থাকে।
আজ আমি বিদায়ী ৬ জনকে সামান্য কিছু টাকা তাদের হাতে তুলে দিয়েছি। তারা যে সামান্য এ টাকা দিয়ে বাড়ি বসে ছোট কোন ব্যবসা করে বাকি জীবন চালিয়ে যেতে পারে।
০১৭১১-১৫৮৭৭৪

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *