রহমত আরিফ ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতাঃ দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে প্রায় দুই যুগ পর চালু হতে যাচ্ছে ঠাকুরগাঁ ওয়ের রেশম কারখানা। কারখানাটি চালু হওয়ার মাধ্যমে রেশমশিল্পে সুদিন ফিরবে বলে আশা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।

রেশম বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বেসরকারি সংস্থা আরডিআর এস স্থানীয় বেকার নারী-পুরুষদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে ঠাকুরগাঁও শহরের গোবিন্দনগর এলাকায় ৩ দশমিক ৩৪ একর জমির ওপর রেশম কারখানাটি স্থাপন করে।

পরে ১৯৮১ সালের ৩০ জুন সরকারি সিদ্ধান্তে ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানাটি রেশম বোর্ডের নিকট হস্তান্তরিত হয়। কারখানাটিতে ২০টি রিলিং বেসিন, ৩টি শক্তিচালিত তাঁত, ১৯টি হস্তচালিত তাঁত ও আনুষাঙ্গিক যন্ত্রপাতি সংস্থাপিত ছিল।

কারখানাটির চলতি মুলধন না থাকায় কারখানা পরিচালনার যাবতীয় অর্থ বোর্ডের উন্নয়ন তহবিল থেকে ঋণ হিসেবে প্রদান করা হয়েছে।

১৯৯৬ হতে ১৯৯৯ সালে ১৬৩.৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে বিএমআ রই প্রকল্পের অধীনে কারখানাটির ভবন বর্ধিতক রণসহ অতিরিক্ত ২০টি শক্তিচালিত তাঁতসহ কিছু আনুষাঙ্গিক যন্ত্রপাতি সংস্থাপিত হয়।

কিন্তু আবর্তক তহবিলের অভাবসহ নানাবিধ কারণে কারখানাটি পরিচালনা সম্ভব হয়নি।

২০০২ সালের ৩০ নভেম্বর কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করে কর্মরত ৮৬ জন জনবলকে গোল্ডেন হ্যান্ডসেকের মাধ্যমে চাকরি হতে অব্যাহতি প্রদান করা হয়।

ফেব্রয়ারি’ ২০০২ হতে নভেম্বর’ ২০০২ পর্যন্ত ১০ মাস শ্রমিক রে মজুরি প্রদান করাও সম্ভব হয়নি। এ পর্যায়ে সরকা রি সিদ্ধান্তে কারখানাটি বন্ধ ঘোষিত হয়।

কারখানাটিতে দীর্ঘদিন কাজ করে আসা আলেয়া বেগম বলেন, আমি প্রায় দীর্ঘ ২৪ বছর যাবত চাকরি করছি এই রেশম কারখানায়, আমার অভিজ্ঞতা অনেক বেশি।

২০০২ সালে কোম্পানি বন্ধ হয়ে যায় তারপর থেকে আমি বেকার, এই কারখানাটি চালু হলে আমিও কর্মসংস্থান ফিরে পাবো।

এ বিষয়ে রেশম শ্রমিক সাইদুর রহমান বাবু বলেন, আরডি আরএস এর আমরা বিভিন্ন আন্দোলন করে ১৯৮১ সালে সরকারিভাবে জাতীয়করণ করি।

মাঝে একটু অনিয়মের কারণে কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়, পরবর্তীতে সরকার আবারও জাতীয়করণ করলেও ২০ ০২ সালে আবারও বন্ধ হয়ে যায়। এখন আবারও নতুন করে চালু হবে শুনে আমরা সবাই আনন্দিত।

বাবলু ট্রেডার্সের জিএম মেহেদী হাসান বলেন, গত মে মাসে আমরা এই রেশম কারখানাটি লিজ নিয়েছি।

এই মাসের মধ্যেই কারখানাটি আমরা চালু করতে পারবো বলে আশা করি। এমডি মহোদয় হজ পালনে জন্য বাহিরে আছেন, তিনি দেশে ফিরলেই কারখানাটি চালু হবে।

রংপুর অঞ্চলের উৎপাদন কর্মকতা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ৫ বছরের জন্য সুপ্রিয় এন্টারপ্রাইজকে ৮ লাখ ১০ হাজার টাকা চুক্তিতে কারখানাটি দেওয়া হয়েছে। তারা শুধু ভবন এবং যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে পারবে।

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, রেশম কারখানার কর্মকতারা এসেছিলেন, তারা আমাকে বিষয়টি মৌখিকভাবে জানিয়েছেন।

কারখানাটি চালুর বিষয়ে আমি অবগত আছি। কারখানা চালু হলে জেলার অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। রেশমের সু:দিন ফিরে আসবে এই কারখানার মাধ্যমে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *