স্টাফ রিপোর্টার, পুঠিয়া (রাজশাহী)ঃ পুঠিয়ার ঝলমলিয়া হাট ইজারাকে কেন্দ্র করে পাঁচ লক্ষ টাকা চাঁদারদাবিতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা (অবঃ) সেনা সদস্য নাজমুল ইসলাম সুমনকে (৪৫) কুপিয়ে নুশংসভাবে রগকেটে শরীরের ২৪ স্থানে গুরুতর জখম করা হয়েছে।
তবে এ ঘটনায় পুলিশ মামলার প্রধান আসামী আহসানুল হক মাসুদকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি। নৃশংস রগকাটা রক্তাক্ত জখমের ৯ দিন অতিবাহিত হলেও মামলার এজারহারভুক্ত প্রধান আসামী আহসানুল হক মাসুদগণ
সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজির নিমিত্তে গড়া পেটুয়াবাহিনীকে গেফ তারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তেমকোনো পদক্ষেপ নেই বলে অভিযোগ উঠেছে।
বরং ঘটনার পর থেকেই রাজনৈতিভাবে একটি মহলের চাপে
মামলা তুলে নিতে আসামিদের পরিবারের পক্ষ থেকে ভুক্ত ভোগীর পরিবারকে নানা হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় রাজশাহী নগরীর একটি কনভেনশন সেন্টারে নৃশংস নির্যাতনের শিকার সুমনের বাবা পুঠিয়া পৌর আ’লীগের সহসভাপতি নজরুল ইসলাম এহিয়া সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগ করেন। সুমনের উপর নৃশংস ঘটনার সঠিক বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি রদাবী করে নজরুল ইসলাম এহিয়া বলেন, ঝলমলিয়া হাটের ইজারা নেয়াকে কেন্দ্র করে ও পূর্বশত্রুতার জের ধরিয়া মাসুদের সন্ত্রাসীর রাজনীতি প্রতিষ্ঠায় মাদক কার বারি, চাঁদাবাজ, দালালি নিয়ন্ত্রণে সাকিবুর রহমান মিঠু নামের কুলাঙ্গারসহ তার সহজাত অনুসারী ক্যাডাররা বিভিন্ন সময় ৫ লক্ষ টাকা চাঁদাদাবি করে আসছিল।
তাদের চাহিদা মতো ওই টাকা দিতে অস্বীকার করায় সুমন কে নৃশংসভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়।
তাই আমিসহ আমার পরিবার বর্তমান অবস্থায় হতাশায় পরি বারিক জীবন-যাপনে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
মামলার এজাহার ও সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্ত ব্যে সুমনের বাবা এহিয়া বলেন, উপজেলার স্থানীয় রাজ নৈতিক অঙ্গনকে সন্ত্রাসী কায়দায় অস্থিতিশীল করে খুন চাঁদাবাজি, ধর্ষন ও মাদককারবারীদের নিয়ে রাজনৈতিক একটি মহল গড়ে তুলেছে বিশৃঙ্খলার সর্গরাজ্য।
এরা আ’লীগের দলীয় নীতি আদর্শের বাহিরে থেকে অবৈধ ভাবে ক্ষমতা ও দলীয় পদের লোভে স্থানীয় এলাকায় সন্ত্রাসী কায়দায় অধিপত্য বিস্তার করছে। এজাহার মতে, পাঁচ লক্ষ টাকাচাঁদার দাবিতে সুমনের উপর অতর্কিত সন্ত্রাসী কায়দায় নৃশংস হামলা চালিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে সুমনের দুই হাত ও দুই পায়ে ধাড়ালো অস্ত্র চাইনিচ কুড়াল, চাপাতি, রামদা ও ছোরা দ্বারা শরিলের ২৪ জায়গায় রগকাটা গুরুত্বরো জখম করা হয়েছে। বর্তমানে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে হাসপাতালের আইসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন বলেন, ‘আমার পরিবারে একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তি সুমন, তার যদি কিছু হয় তাহলে আমার পরিবারটির কী হবে? সুমনের স্ত্রী ও দুইটা নাবালক সন্তান রয়েছে তাদের ভবিষ্যৎ কী হবে? আমার এই নাবালক বাচ্চারা পর্যন্ত স্কুলে যেতে ভয় পায়।
কী অপরাধ করেছিলো আমার সন্তান সুমন? আমার সন্তান সুমনের উপর যে, নিমর্ম হামলা হয়েছে তা যেন আর কারও উপর না হয় আমি আপনাদের মাধ্যমে তার জোর দাবি জানাচ্ছি।
মামলার এজাহারভুক্ত আসামীগণ এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী এবং তারা ঝলমলিয়াসহ পুরো পুঠিয়া উপজেলায় হামলা, চাদাবাজী, মাদক ব্যাবসা, ছিনতাইসহ নানা অপকর্মে জড়িত।
তাদের অত্যাচারে পুরো পুঠিয়ার মানুষ অতিষ্ট। আমিসহ পুঠিয়ার সকল স্তরের মানুষ এদের হাত থেকে মুক্তি চাই।
এই ঘটনায় জড়িত সকল আসামীদের গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে হামলার শিকার সুমনের মা নাদিরা চৌধুরী বেবীসহ তার চতুর্থ শ্রেনীর পড়ুয়া কন্যা নাফিজা ইসলাম তাহা উপস্থি ত থেকে এ সময় সাংবাদিকদের বলেন, আমার বাবা এক জন ভাল মানুষ ছিলেন। সন্ত্রাসীদের চাঁদা না দেয়ায় আজ আমার বাবাকে নৃশংসভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।
আমি বিচার চায় এবং শান্তিতে বসবাস করার অধিকার চাই। এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে সুমনের চাচাতো ভাই কাওসার সরদারসহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সুমনের উপর নৃশংস হামলা র বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে রাজশাহী জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুল হাই বলেন, ‘মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তরের পর থেকে আসামিদের গ্রেফপ্তারে অভিযান অব্যা হত রয়েছে। এমনকি প্রধান আসামিসহ বাকিদের গ্রেপ্তারে ঢাকাতেও তিন দিন অভিযান চালানো হয়েছে। আমরা আসামিদের গ্রেপ্তারের সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।
জানা যায়, সাবেক ছাত্রনেতা সুমনের উপর হামলাকারীদের শাস্তির দাবিতে ইতোমধ্যে পুঠিয়া উপজেলা আ’লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম ও সম্পাদক শাহরিয়ার রহিম কনক স্বাক্ষরিত দলীয় প্যাডে প্রেস বিজ্ঞপ্তি ও প্রতি বাদলিপি দিয়েছেন।
এতে সুমনের উপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান। এ নৃশংসঘ টনায় ১০ জুলাই বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্যদেন, পুঠিয়া পরিষদের চেয়াম্যান জি এম হিরা বাচ্চু, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মৌসুমীর হমান,রাজশাহী জেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বানেশ্বরইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাড. আব্দুস সামাদ, জেলা আ’লীগে রসদস্য অধ্যক্ষ গোলাম ফারুক,পুঠিয়ার সাবেক পৌর মেয়র ও যুবলীগেরসভাপতি রবিউল ইসলাম রবি, পুঠিয়া সদর ইউনিয়ান আওয়ামী লীগেরসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম জুয়েল, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণসম্পাদক শরিফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ।
এছাড়াও সুমনের নৃশংস হামলারপ্রতিবাদে বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধনকরেছেন উপজেলা আ’লীগের নেতা-কর্মী এবং শান্তিকামিউ পজেলাবাসীসহ সর্বস্তরের জনগণ।