সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:
বাকপ্রতিবন্ধী সুমাইয়া পারভীন (১৬) পরিবারের সাথে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ী ইউনিয়নের ঝাপালী গ্রামে বসবাস করে। তার বাবা জাহাঙ্গীর আলম একজন দিনমজুর। সুমাইয়ারা ৫ ভাই- বোনের মধ্যে আরও দুই ভাই প্রতিবন্ধী। এ কারণে তাদের সংসারে সমস্যার অন্ত নেই।
পারিবারিক আর্থিক সংকটের কারণে সুমাইয়া তৃতীয় শ্রেণি
পর্যন্ত লেখাপড়া করলেও তার অন্য ভাই বোনেরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চৌকাঠ পার হতে পারেনি। সংসারের তাগিদে ছোট বেলা থেকেই বাকপ্রতিবন্ধী সুমাইয়াকে অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করতে হচ্ছে।
সুমাইয়ার বাবা জাহাঙ্গীর আলম জানান, লেখাপড়া করতে খুব ভালো লাগে সুমাইয়ার। উত্তরণ যখন তাদের এলাকায় স্কুল থেকে ঝরেপড়া ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজের সাথে যুক্ত শিশুদের নিয়ে ব্রীজ স্কুল শুরু করে তখন সুমাইয়া সেখানে ভর্তি হয়। সে অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে প্রতিমাসে ১ হাজার টাকা আয় করে যা আমার হাতে তুলে দেয়।
সুমাইয়া এখন কাজ করার পাশাপশি নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, স্থানীয় শিশুসুরক্ষা কমিটির সদস্যরা সুমাইয়ার
কর্মমালিকের সাথে কথা বলে তাকে কাজের ফাঁকে ব্রীজ স্কুলে লেখাপড়া চালিয়ে যাবার সুযোগ করে দিয়েছেন।
সুমাইয়া বাকপ্রতিবন্ধী হওয়ায় সব পড়া মুখে বলতে না পারলেও লিখে দেখাতে পারে।সে লিখে বোঝায়, আমি কখনও ভাবতে পারিনি যে, এই বয়সে এভাবে লেখাপড়ার সুযোগ পাবো। আমি আগামীতে ভকেশনাল ট্রেনিং করতে
চাই, যাতে স্বাধীনভাবে কোন কাজ করতে পারি এবং আমার পরিবারকে সহযোগিতা করতে পারি।
সুমাইয়ার মা তারামনি বেগম চান তার মেয়ে অন্য সকল স্বাভাবিক মেয়েদের মত জীবন যাপন করুক। সে এখন কাজের মধ্য দিয়ে ব্রীজ স্কুলে লেখাপড়া করছে।
সেখান থেকে খাতা কলমসহ বিভিন্ন উপকরণ পাবার
পাশাপাশি লেখাপড়ার ভালোভাবে সুযোগ পাচ্ছে।
এজন্য তিনি উত্তরণ ও এডুকোকে ধন্যবাদ জানান।