রহমত আরিফ ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতাঃ তীব্র তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ জনজীবন। এমন গরমের মাঝে ঘন ঘন লোডশেডিং য়ে কদর বেড়েছে হাতপাখার। ব্যস্ততা বেড়েছে এ শিল্পের সাথে জড়িত কারিগরদেরও।

কয়েক বছর আগেও গরমের দিনে হাতপাখাই ছিল সহায়।

ঘরে ঘরে ছিল এর কদর। এখন বৈদ্যুতিক পাখা আর এয়ার কন্ডিশনের দাপটে কমেছে হাতপাখার ব্যবহার।

তবে, এবারের টানা তাপপ্রবাহ আর ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে চাহিদা বেড়েছে হাতে তৈরি পাখার। ব্যস্ততাও বেড়েছে ঠাকুর গাঁও জেলার কারু শিল্পীদের।

ঠাকুরগাঁওয়ের সদর উপজেলার গড়েয়া লস্করা গ্রামটি হাত পাখার গ্রাম বলে পরিচিত। গ্রামের প্রতিটি বাড়ির ছোট বড় সকলেই এ পেশার সাথে জড়িত। লস্করা গ্রামে এখন হাত পাখা তৈরির মহাকর্মযজ্ঞ।

কেউ বাঁশ আনছেন, কেউ বুনছেন, কেউ করছেন রং, আর নারীরা তাতে ফুটিয়ে তুলছেন বাহারি রকমের ডিজাইন।

তালপাখা, বাঁশের পাখা ও সুতার পাখা তৈরি করেন তারা।

হাতপাখা তৈরি করেই স্বাবলম্বী গ্রামটির অধিকাংশ পরিবার। বাড়ির কাজের পাশাপাশি হাতপাখা তৈরি করে থাকেন গ্রামে র নারীরা। স্কুলের অবসরে শিশু-কিশোররাও কাজ করে।

বাজারে নিয়ে বিক্রি করেন পুরুষরা। পাইকারি দরে একটি পাখা বিক্রি হয় ২৫ থেকে ৩০ টাকায়।

গরমের দিনে অল্প দামের এই পাখাতেই গ্রামীণ মানুষের আস্থা।

তবে বাঁশ, সুতাসহ প্রয়োজনীয় উপকরণের দাম বেড়ে যাও য়ায় তেমন লাভের মুখ দেখছে না পরিবারগুলো।

দোকান ব্যবসায়ী সোহরাওয়ার্দী খোকন বলেন, একদিকে গরম অন্যদিকে ঘন ঘন লোডশেডিং জীবন অতিষ্ঠ।

হাতপাখার দাম কিছুটা বেড়েছে। আগে ৩০ থেকে ৪০ টাকায় পাওয়া যেত। এখন ৮০ থেকে ১০০ টাকায় কিনতে হয়। তবে হাতপাখায় স্বস্তি পাওয়া যায়।

দিল মোহাম্মদ বলেন, আমরা বাপ-দাদার আমল থেকে হাতপাখা তৈরির কাজ করছি। গরম কম হোক আর বেশি হোক এটা আমাদের পেশা।

ব্যবসা আর টুকটাক কৃষির পাশাপাশি আমাদের গ্রামের সবাই এ পেশার জড়িত।

সকলে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। দেশের বিভিন্ন জায় গায় আমরা পাখাগুলো পাঠাই। তবে আমাদের স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করে দিলে এর পরিধি আরো বাড়ানো যাবে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসে ন বলেন, তাপপ্রবাহ বেশি হওয়ায় হাতপাখার চাহিদা বেড়ে ছে। এ শিল্পকে ধরে রাখতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।

 

One thought on “গড়েয়ার টুপপি মেলা যেন হাতপাখার মেলা  ”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *