মামুন পারভেজ হিরা,নওগাঁ ঃ নওগাঁর রাণীনগর উপজে লার আবাসিক এলাকায় নিজ বাড়িতে বিভিন্ন বয়সীর যৌন কর্মী দিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে নিজের বাড়িতে এমন অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে আসছে জুলেখা নামের এক প্রভাবশালী নারীর বিরুদ্ধে। এমন কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

উপজেলার সুনামধন্য মাস্টারপাড়ার বাসিন্দারা। বর্তমানে স্বামীর সহযোগীতা পেয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে সে পশ্চিম বালুভরা এলাকার মাস্টারপাড়ায় নিজ বাড়িতে যেন গড়ে
তুলেছে পারিবারিক যৌনখানা (মিনি পতিতালয়)।

এছাড়া সেই যৌনখানায় ব্লাকমেইল করে টাকা আদায়েরও অভি যোগ আছে জুলেখার বিরুদ্ধে। একসময় লোক চক্ষুর আড়ালে এই অনৈতিক কাজ করলেও এখন প্রায় ওপেন সিক্রেট। এমনটিই বলছেন স্থানীয়রা।

তাই দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চায় এলাকাবাসী। রক্ষা করতে চায় এলাকার পরিবেশ।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাস্টারপাড়ার মৃত-জিন্নাহ শেখের ছেলে মোজাম্মেল হক মুজার স্ত্রী হচ্ছে জুলেখা। একসময় মুজা ফিটিংসের কাজ করতো। প্রায় ২৫বছর আগে জুলে খাকে বিয়ে করে মুজা।

বিয়ে হওয়ার পর থেকে জুলেখা শুরু করে বেপরোয়া চলা ফেরা। মুজা কখনোই তার স্ত্রীকে নিজের আয়ত্তের মধ্যে রাখতে পারেনি। যার কারণে তার বেপোরোয়া চলাফেরার লাগাম টানতে না পারায় মুজার পরিবার মুজা-জুলেখাকে আলাদা করে দেয়।

আলাদা হবার পর থেকে জুলেখা শুরু করে তার অনৈতিক কর্মকান্ড। মুজা কাজের সুবাধে বাহিরে গেলে জুলেখা তার বাড়িতে আত্মীয়প রিচয়ে যৌনকর্মী নিয়ে আসা শুরু করে। চলতে থাকে অসামাজিক কার্যক্রম।

একসময় অবৈধ টাকার লোভে পড়ে মুজাও তার স্ত্রীকে এই
অনৈতিক কাজে সহযোগিতা করতে শুরু করে। আগে সে একাই করলেও স্বামীর সহযোগীতা পেয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে তার অনৈতিক কাজের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দালালের মাধ্যমে বিভিন্ন বয়সের যৌনক র্মী তার কাছে আসে। আর জুলেখা ওই সকল যৌনকর্মীদের নিজের স্বজন পরিচয়ে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। এরপর এক শ্রেণির দালাল তার বাসাতে চুক্তিভিত্তিক খদ্দেরকে নিয়ে যায়। এভাবেই চাহিদা অনুযায়ী তার বাসায় দিনের পর দিন চালানো হচ্ছে দেহ ব্যবসার কার্যক্রম।

আর তার অনৈতিক কাজে অতিষ্ঠ হলেও সম্মানের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে পারছে না। এসকল অপকর্মের প্রতি বাদ ও বাধা প্রদান করলে এলাকার শান্তিকামী মানুষকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে থাকে দজ্জাল চরিত্রের জুলেখা।

তিনি কোন আইনের তোয়াক্কা না করেই দিনের পর দিন অসামাজিক কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও যেন কারো কোনো মাথা ব্যাথা নেই। এখন প্রায় প্রতিদিনই জুলেখার বাড়িতে চেনা-অচেনা খদ্দেরদের আসা-যাওয়ায় চরম নিরাপত্তা হীনতায় বসবাস করছেন স্থানীয়রা।

বর্তমানে জুলেখার বাড়িটি একটি অসামাজিক কার্যক্রমের
আশ্রয়স্থল হিসেবে গড়ে তুলে নিজেকে তাদের সর্দারানী
হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

আর এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে এলাকার যুবক ছেলে-মেয়েরা ও স্কুল-কলে জের শিক্ষার্থীদের বিপথে যাওয়ার পা শাপাশি এলাকার পরিবেশ একেবারে নষ্টের শেষ সীমানায় পৌঁছে যাবে। আর বছরের পর বছর ধরে রাখা অভিজাতপূর্ণ ওই এলাকাটির সুনাম জুলেখার যৌনখানার কারণে হারাতে বসেছে।

অতিষ্ঠ হয়ে জুলেখার শ^শুর মৃত-জিন্নাহ শেখের পরিবারের অন্য সদস্যরা ক্ষোভের সহিত বলেন, জুলেখার এমন কর্ম কান্ডের কারণে নিজেদের মেয়ে-ভাতিজীসহ স্থানীয়রা তাদের ছেলে-মেয়েদের ভালো পরিবারের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া নিয়ে পড়েছে চরম বিপাকে।

জুলেখার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছি আমরা। আমরা সবাই জুলেখার এমন অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে চাই।

এই মাস্টারপাড়ার সম্মান আমরা রক্ষাকরতে চাই। তাই এলাকার সকল বাসিন্দা জুলেখার এমন কর্মকান্ড
বন্ধ করাসহ তার দৃষ্টান্তর মূলক শাস্তি চায়। আমরা দ্রুত সভ্য
পরিবেশ থেকে জুলেখার এমন অসভ্য কাজের শেষ দেখতে চাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই বলেন,
বিভিন্ন সময় জুলেখা নিজের আত্মীয় পরিচয়ে আসা সুন্দরী
যৌনকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে পুরো রাণীনগর বাজার ঘুরে ঘুরে
ডিসপ্লে করে। এরপর তার পোষা বখাটে বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে দিনে কিংবা রাতে প্রতি ঘন্টা ৫শ টাকা কিংবা তার বেশি অর্থের বিনিময়ে খদ্দেরদের তার বাড়িতে গোপনে নিয়ে আসে।

এমন ভাবেই বছরের পর বছর জুলেখা তার কর্মকান্ড চালি য়ে আসছে। শুধু যৌনকর্মীই নয় ইদানিং জুলেখা বিভিন্ন কলে জ, বালক ও বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরও বিভিন্ন প্র লোভনের মাধ্যমে যৌনখানায় নিয়ে আসছে।

এতে করে পরিবেশ ও সমাজের সঙ্গে আগামীর প্রজন্মরাও না বুঝে নষ্টের পথে চলে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

তারা আরও জানান, বিভিন্ন সময় অর্থশালী ও সমাজের স ম্মানী ব্যক্তিদের কৌশলে তার যৌনখানায় এনে ব্লাকমেইল করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনাও ঘটছে।

সম্মানের ভয়ে স্থানীয়রা জুলেখার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারে না। প্রতিবাদ করতে গেলেই তার পোষা বহিরাগত সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে ভয়ভীতি দেখায় এবং ক্ষতি করে।

এলাকার একাধিক প্রভাবশালীদের ছত্রছাঁয়ায় বছরের পর বছর জুলেখা এমন অবৈধ কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। যার কারণে একাধিকবার সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি জানিয়েও কোন লাভ হয়নি। তাই আমরা বর্তমানের সভ্য সমাজে জুলেখা নামক দজ্জাল মহিলার প্রভাব থেকে এলাকাটিকে বাঁচাতে এবং এই মাস্টারপাড়ার সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে দ্রুত প্রশাসনের সার্বিক সুদৃষ্টি কামনা করছি।

এই বিষয়ে জুলেখার স্বামী মোজাম্মেল হক মুজা মুঠোফোনে
(০১৭২৯৩৩৪০৯১) জানান, আমার বাড়িতে এমন অনৈতিক
কর্মকান্ড হয় না।

বিভিন্ন সময় আমার বাড়িতে বিভিন্ন আত্মী য়-স্বজনরা আসে।

আমার বউয়ের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ সম্পন্ন মিথ্যে ও বানোয়াট।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু ওবায়েদ বলেন এই ধরণের
কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগে পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা
গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *