শৈলকূপা (ঝিনাইদহ)  সংবাদদাতাঃ
২০০২ সালে এসএসসি ও ২০০৪ সালে এইচএসসি পাস করে রাতারাতি সহকা রী শিক্ষক (কৃষি) বনে যান বাবুল হোসেন।
এদিকে সমালোচনার ঝড় থামাতে ২০০৮ সালে উন্মুক্ত বিশ্ববি দ্যালয়ের অধীনে বিএজিএড কোর্স সম্পন্ন করেও শেষ রক্ষা হয়নি তার।
সনদ ছাড়া ১৮ বছর চাকরী করার বিষয়টি ধরা পড়লেও এখনো বহাল তবিয়তে চাকরী করে যাচ্ছেন। ঘটনাটি ঘটেছে শৈলকুপা উপজেলার নাগেরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।
এলাকাবাসির অভিযোগ ও আদালতে মামলার কারণে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের কর্ম কর্তা মোহাম্মাদ মনকি উল হাসানাত সম্প্রতি বিদ্যালয়টি পরিদ র্শন করেন।
সরকারি বিধিমালা উপেক্ষা করে সনদ ছাড়াই চাকরী করায় বেতন ভাতার সরকারী অংশ স্থগিতসহ প্রাপ্ত অর্থ ফেরতের সুপারিশ করেছেন। জানা গেছে, শৈলকুপার মকরমপুর গ্রামের বাবুল হোসেন ২০০২ সালে নাগেরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ২০০৪ সালে জরিপ বিশ্বাস ডিগ্রি কলে জ থেকে এইচএসসি পাশ করেন।
২০০৫ সালে দৈনিক আজকের কাগজে বিজ্ঞাপন অনুযায়ী একই বছরের ২৫ জানুয়ারী সহকারি কৃষি শিক্ষক পদে চাকরীর জন্য আবেদন করেন তিনি।
সনদপত্র ছাড়াই অবৈধভাবে নিয়োগ লাভ করে ওই বছরের ৭ ফেব্রয়ারী সহকারী শিক্ষক (কৃষি) পদে যোগদান করেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় নানা গুঞ্জন শুরু হলেও ব্যক্তিগত প্রভাব ও প্রধান শিক্ষকের ছত্রছায়ায় বাবুল হোসেন দাপটের সাথে চাকরী করে যাচ্ছেন। পরবর্তী সময়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির প্রাক্তন সভাপতি খন্দকার গোলাম আকবর হ্যাপী ঝিনাইদহের বিজ্ঞ আদালতে বাবুল হোসেনের অবৈধ নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে ৪২০/৪০৬/৪৬৫/৪৭১ ধারায় ৫২/২০ নং মামলা দায়ের করেন।
এক পর্যায়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদ র্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের শিক্ষা পরিদর্শক মোহাম্মাদ মনকিউল হাসা নাত নাগেরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করে সনদ জালিয়াতির তথ্য পান।
এরপর তিনি বেতন ভাতার ১৫ লাখ ৭২ হাজার ৫’শ ১০ টাকা সরকারি কোষা গারে ফেরতসহ চলমান বেতন ভাতা স্থগিতের সুপারিশ করেন।
এদিকে একই স্কুলের সহকারি শিক্ষক কম্পিউ টার পদে নিলুফা ইয়াসমিন ২১-০৯ -২০০৩ সালে যোগদান করে ৩৪০০ টাকার স্কেলে এমপিওভুক্ত হন।
তার কম্পিউ টার সনদটি জাল/ভূয়া প্রমানিত হওয়ায় নিয়োগ বিধিসম্মত হয়নি বলেও তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে।
ফলে ২০০১ সালের পহেলা জানুয়ারী থেকে ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারী পর্যন্ত নিলুফা ইয়াসমিনের প্রাপ্ত ২৪ লাখ ৪৭ হাজার ৭২৭ টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরতযোগ্য বলে শিক্ষা পরিদর্শক মোহাম্মাদ মনকিউল হাসানা ত তার তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নাগেরহাট মাধ্য মিক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক মুকুল হোসেনের সাথে সহকারি কৃষি শিক্ষ কের নিবিড় সম্পর্ক থাকার কারণে শিক্ষা পরিদর্শক প্রতিবেদন দাখিল করলেও প্রধান শিক্ষক ব্রডশীটের কিছু তথ্য গোপন করে তা দাখিল করেন।
এখন এই জালিয়াতির বিষয়টি ধামাচাপা দিতে সব ধরনের নেপথ্য সহযোগিতা করে যাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক।
তবে প্রধান শিক্ষক মুকুল হোসেন জানান, পরিদর্শন প্রতিবেদনের আলো কে জেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে ব্রডশীটে জবাব পাঠানো হয়েছে, সেখা নে কোন তথ্য গোপন করা হয়নি।
অপরদিকে  ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষা অফিসার শেখ মনিরুল ইসলাম বলেন, নাগিরাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের সনদ জালিয়াতিসহ প্রতি বেদনে চাহিত প্রয়োজনীয় তথ্য গোপন করে পুর্নাঙ্গ ব্রডশিট না দেওয়ার কারনে প্রধান শিক্ষকের নিকট ফেরত পাঠানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *