আকিমুল ইসলাম চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধিল:
চুয়াডাঙ্গায় হাড় কাঁপানো শীতের মধ্যেই শুরু হয়েছে বোরো ধান রোপণ। তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় বীজতলা রক্ষা করতে এরইমধ্যে চাষিদের নানা পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।
জেলার ৪ টি উপজেলায় বোরো আবাদ করতে ১৮ হাজার ২৭ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের বীজতলা (চারা রোপণ) করা হয়েছে।
উপজেলা ওয়ারী সদর উপজেলায় ৩৫০ হেক্টর, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৬৭৬ হেক্টর, দামুড়হুদা উপজেলায় ৪৭৭ হেক্টর, জীবননগর  উপজেলায় ৩২৪ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের বীজতলা (চারা রোপণ) করা হয়েছে।
এই বীজতলা থেকে ৩৪ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছে চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।
অতিরিক্ত কুয়াশার কারণে পলিথিনের ব্যবহার ও সেচ দিয়েও রক্ষা করা যাচ্ছে না বীজতলা। হাঁড় কাপানো ঠান্ডা বিরাজ করছে চুয়াডাঙ্গার প্রকৃতিতে।
কনকনে ঠান্ডায় কাঁদা-পানির ক্ষেতে নেমে সকালে বোরো ধান রোপণ করছে চাষিরা। তারা বলছেন, বোরো ধান রোপ ণের সময় চলে গেলে মুশকিল হয়ে যাবে। ধানের পাতু (চারা) বয়স হয়ে যাচ্ছে। সুতারাং ঠান্ডা শীত উপেক্ষা করে ধান লাগাতে হচ্ছে।
জেলার দামুড়হুদা উপজেলা সদরের দশমী গ্রামের বোরো চাষি নুর আলম বলেন, অতিরিক্ত কুয়াশা ও শীতের কারণে বেশির ভাগ বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক সুভাস চন্দ্র সাহা জানান, ঘন কুয়াশার কারণে কৃষকদের বোরো ধানের বীজতলা ও আলু ক্ষেত রক্ষায় বিশেষভাবে সতর্ক করেছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।
ধানের বীজতলা রক্ষায় সকালে চারার ওপর থেকে শিশির সরিয়ে দেওয়া, সম্ভব হলে বীজতলা পলিথিন দিয়ে দিনে ও রাতে ঢেকে দেওয়া, বীজতলায় সেচ দিয়ে পরদিন সকালে পানি বের করে দেওয়া, ছত্রাকনাশক ব্যবহার করা এবং বীজতলা লাল হলে জিপসাম ও ইউরিয়া সার দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, এখন পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা বীজতলার তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে এই আবহাওয়া আরো কয়েকদিন অতিবাহিত হলে বীজতলার ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে, বীজতলা বাঁচাতে অনেকে পলিথিন ও খড় দিয়ে ঢেকে রাখছেন। কেউ কেউ ব্যবহার করছেন ছত্রাকনাশক। তবুও প্রতিকার হচ্ছে না বলে জানান কৃষকরা।
চুয়াডাঙ্গা সর্বনিম্ন তাপমাত্রার সঙ্গে চলতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। উত্তরাঞ্চলের হিমেল বাতাসে হাড়কাঁপানো শীতে জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে।
কুয়াশার কারণে ৫০০ থেকে ৬শ মিটার দৃষ্টিশিমা বলে জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কর্মকর্তা জা‌মিনুর রহমান জানান।
তিনি আরো জানান, চুয়াডাঙ্গায় গত মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) তাপমাত্রা ছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বুধবার (১০ জানুয়ারি) ছিল ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) ছিল ১৩  ডিগ্রি সেলাসয়াস, শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) ছিল ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, শনিবার (১৩ জানুয়ারি) ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস, রোববার (১৪ জানুয়ারি) ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। যা কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
One thought on “হাড় কাঁপানো শীতে বোরো রোপণে ব্যস্ত কৃষক”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *