আলিফ হোসেন,তানোরঃ
রাজশাহীর তানোরে চলতি মৌসুমে আলুচাষিদের মাথায় হাত উঠেছে।
গত দুদিনের টানা বৃষ্টিতে আলুখেতে অতিরিক্ত পানি জমায় এবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
আলুচাষিরা বলছেন, সদ্য রোপণকৃত যেসব আলুখেতে  সেচ দেয়া হয়েছিল  সেই সব জমিতে অতিরিক্ত পানি জমেছে। দ্রুত পানি নিষ্কাশন করা প্রয়োজন। কিন্ত্ত পানি নিস্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় রোপণকৃত আলু বীজ পচে যাবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ফলে তারা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন। তবে, সেচ না দেয়া রোপনকৃত আলুখেতে তেমন কোনো সমস্যা হবে না।
গত শুক্রবার ও শনিবার দুদিন বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বেশীরভাগ জমিতেই পানি জমে টইটুম্বর। কিন্ত্ত এসব পানি নিস্কাশনের তেমন কোনো ব্যবস্থা নাই।
তবে, অল্প সংখক আলুখেতে তেমন পানি জমেনি।
কৃষকরা বলছেন,  আলুখেতে বীজ রোপণের ১০  থেকে ১২ দিনের মধ্যে সেচ দিতে হয়। উপজেলার বেশিরভাগ আলু খেতে বীজ রোপণের ১৫ থেকে ২০ দিন আগেই  সেচ দেয়া সম্পূর্ন হয়েছিল।
অপরদিকে উপজেলার বেশ কিছু এলাকার অনেক জমি আলু রোপণের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছিলো।
তবে সেসব জমিতে পানি জমায় এখন আর আলু রোপণ করা যাবে না।
সরনজাই ইউপির শুকদেবপুর গ্রামের কৃষক জামিল, সেলি ম, রেজাউল জানান, জমি থেকে পানি বের করার জন্য তারা সকাল থেকে থাল- গামলা দিয়ে পানি বের করার চেষ্টা কর ছেন।
জামিল বলেন, তার ৫ বিঘা জমিতে আলু রোপণ করেছেন। গত মঙ্গল ও বুধবারে সেচ দেয়া হয়েছিল।
কিন্তু বুধবার  ও বৃহস্পতিবার দিন রাতে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হয়। বৃষ্টির কারনে জমিতে অতিরিক্ত  পানি জমে গেছে। বের করার কোন ব্যবস্থা নেই।
দু একদিনের মধ্যে পানি বের না হলে বীজ পচে নষ্ট হয়ে যাবে।
রেজাউল  বলেন, তার ৩ বিঘা জমিতে আলু বীজ রোপণ করে প্রথম সেচ দেয়ার পর বৃষ্টির পানিতে বিপদে পড়েছি।
সেলিম  বলেন, তার ৭ বিঘা ও তার ভায়ের ১২ বিঘা আলুর জমিতে পানি থইথই করছে। এখন পর্যন্ত্য প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার টাকা।
তবে লীজ নিয়ে যারা রোপণ করেছেন তাদের খরচ আরো বেশি হয়েছে।
ধানতৈড় গ্রামের আলু চাষী হাফিজুর রহমান বলেন, এবছর যশপুর মাঠে ১০৮ বিঘা জমি লীজ নিয়ে আলু চাষ করার পর কয়েকদিন আগে সেচ দিয়েছেন।
কিন্ত্ত হঠাৎ বৃষ্টিতে সেই আলুর জমিতে পানি জমে গেছে। তিনি বলেন, পানি বের করতে না পারলে ক্ষতি হবে। তবে পানি বের করার চেষ্টা করছেন।
পাঁচন্দর ইউপির কৃষক লুৎফর রহমান বলেন, ৪৫ বিঘা জমি তে সেচ দিয়েছিলাম। বৃষ্টিতে জমিতে প্রচুর পানি জমে ছে, কিন্তু বের করার কোন উপায় নেই।
একই এলাকার হাবিবুরের ৩০ বিঘা, সেহেরুলের ১০ বিঘা, সারোয়ারেরে ৪০ বিঘাসহ প্রায় প্রতিটি কৃষকের আলুর একই অবস্থা।
তিনি আরো বলেন, যে সব চাষীরা সেচ নিয়েছিল তাদের সমস্যা। এমনকি দ্রুত জমি থেকে পানি বের না হলে পচে যাবে এবং ফলনও কম হবে।
কৃষকরা জানান, আলু রোপণে এবার  বেশি খরচ হয়েছে। কারণ জমি লীজ, সার-কীটনাশক, চাষ, সেচ ও শ্রমিকের মজুরী বেশী হওয়ায় খরচ বেড়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা  সাইফুল্লাহ আহম্মেদ বলেন, এবারে আলু রোপণের লক্ষমাত্রা প্রায় ১৩ হাজার ৫০০ হেক্টর। এপর্য ন্ত রোপন হয়েছে প্রায় ১১ হাজার হেক্টর।
যে সব জমিতে সেচ দেয়া হয়েছিল ওই সব আলুর জমি ক্ষতি হবে। জমি থেকে দ্রুত পানি বের করতে পারলে ক্ষতির পরিমাণ কম হবে।
পানি বের করতে না পরলে লোকসানের মুখে পড়বে চাষীরা। আর যারা সেচ নেয়নি তাদের তেমন কোন ক্ষতি হবে না। এই বৃষ্টিতে সরিষাতে উপকার হবে বলেও জানান তিনি।#

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *