চৌগাছা প্রতিনিধি::অবশেষে এক সপ্তাহ পর মালেশিয়া প্রবাসি ইসমাইল হোসেনের মরাদেহ দেশে এসেছে। আজ ২২ জুন বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় লাশবাহী এম্বেুলেন্স পৌঁছায় যশোরের চৌগাছার সিংহঝুলী ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের বাড়ীতে। এ সময় শুরু হয় শোকের মাতম। স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। স্বামীর
মরাদেহ এক পলক দেখেই স্ত্রী অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। স্থানীয়রা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। এদিকে সকাল ১০ টায় নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মালেশিয়া প্রবাসি ইসমাইল হোসেনের (২৬) ১৪ জুন বুধবার দিবাগত রাত ১ টার দিকে মৃত্যু হয়। রাতে সহপাঠিদের সাথে রাতের খাবার শেষে কিছুটা সময় আড্ডা দিয়ে ঘুমাতে যান ইসমাইল হোসেন। রাত সাড়ে ১২ টার দিকে তিনি হঠাৎ অসুস্থ্যবোধ করেন। এরপর ভগ্নিপতিসহ সহপাঠিরা তাকে দ্রুত মালেশিয়ার একটি
হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
মরহুমের স্বজনরা জানান, বিগত আট মাস আগে ইসমাইলের পিতা আমির হোসেন মৃত্যুবরণ করেন। পিতার মৃত্যুর ২ মাস পর তার বড় ভগ্নিপতি হেলাল উদ্দীনের সহযোগিতায় সে মালেশিয়া যায়। সেখানে কোম্পানির চুক্তিভিত্তিক কাজে যোগ দেয়। সুখের স্বপ্ন নিয়ে
কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ইসমাইল প্রতিমাসে প্রবাস থেকে টাকাও পাঠিয়েছে। ইচ্ছে ছিল দুএক মাসের মধ্যে একটি পাকা বাড়ি নির্মাণ করবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন আকস্মিক কাল বৈশাখির ঝড়ে যেন শেষ হয়ে গেল।
এদিকে মৃত্যুর এক সপ্তাহ পর মরহুম ইসমাইল হোসেনের মরাদেহ দেশে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার সকালে এম্বুলেন্সবাহী মরাদেহ জগন্নাথপুর গ্রামে পৌঁছালে শোকের মাতম শুরু হয়। কয়েক হাজার মানুষ এক নজর দেখার জন্য ছুটে আসে মরহুমের বাড়ীতে। মানুষের ভীড় সামলাতে গ্রামবাসির অনেকটা বেগ বেতে হয়।
একমাত্র পুত্র সন্তানের মুখখানা দেখে মা ইশারন বেগমের বুকফাটা চিৎকারে আকাশ ভারী হয়ে ওঠে। স্ত্রী কেয়া খাতুন অসুস্থ্য হয়ে মুর্ছা যান। তাকে চৌগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। নয় মাস বয়সের ছোট শিশু সাবিরা শুধু ফ্যালফ্যাল করে স্বজনদের কান্না আর বিলাপের দৃশ্য দেখছে।
এদিকে সকাল ১০ টায় মরহুম ইসমাইল হোসেনের নামাজে জানাজা মুক্তিনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিতহয়েছে। জানাজায় কয়েকহাজার মানুষ অংশগ্রহন করেন। জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
মালেশিয়া প্রবাসি ইসমাইলের মরাদেহ পৌঁছেছে ॥ এলাকায় শোকের মাতম