রহমত আরিফ ঠাকুরগাঁও: ‘অনিয়ম, দুর্নীতি আর অব্যবস্থা পনায় বেহাল দশা ঠাকুরগাঁও জেলা পাসপোর্ট অফিসের। অভিযোগ করলে আমার পাসপোর্ট হবে না ।

পুরাতন কার্যালয় থেকে নতুন কার্যালয়ে স্থানান্তরিত হলেও ভোগান্তি কমেনি সেবাগ্রহীতাদের।

চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাবেন রতন ইসলাম (ছদ্ম নাম)। তাই পাসপোর্টের জন্য প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র জমা দিয়েছেন তিনি।

নামের ভুল সংশোধনের জন্য দিনের পর দিন ঘুরছেন পাস পোর্ট অফিস চত্ত্বরে।

এরই মধ্যে দালাল চক্র টাকা দাবি করেছে তার থেকে। দ্রুত কাজ করে দেওয়ার আশ্বাস দিলেও ঘুষ দিতে রাজি হননি তিনি।

এ বিষয়ে অভিযোগ করতে চেয়েও করতে পারেননি। দালাল চক্র তাকে নানারকম ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। তারা বলেছে, কাউকে অভিযোগ করলে পাসপোর্ট হবে না।

গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে এমন অভিযোগ শুরুতে করতে না চাইলেও পরে মুখ খুলেছেন এই ভুক্তভোগী।

তিনি বলেন, আমার পক্ষ থেকে কোনো ভুল হয়নি।

তারা ইচ্ছাকৃত নামের বানান ভুল করে। পরে এই ভুলকে কেন্দ্র করে ভোগান্তির গোলকধাঁধাতে ফেলে। আমরা এতটা নিরুপায় যে, নিজের অভিযোগটাও কাউকে করতে পারি না।

অভিযোগ করলে পাসপোর্ট পাব না। কিন্তু চিকিৎসার জন্য এটি খুবই দরকার।

পাসপোর্ট অফিসে ঘুরতে ঘুরতে জুতো ক্ষয় করে অবশেষে আক্ষেপ ঝেড়েছেন আব্দুল লতিফ লিটু নামের এক ব্যক্তি।

তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পাসপোর্টের জন্য ঘুরছি, কোনভাবে কাজ হচ্ছে না।

অবশেষে দালালকে ১০০০ টাকা দিতে বাধ্য হলাম।

পাসপোর্ট অফিসটি মগের মুল্লুকে রূপ নিয়েছে। ঠাকুরগাঁও পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে দেখা যায়, এখানে প্রতিদিন শত শত মানুষ সেবা নিতে আসছেন।

কিন্তু অধিকাংশই এই প্রতিবেদককে নিজেদের ভোগান্তির কথা জানান। এমন ভোগান্তি থেকে রেহাই চেয়েছেন ভূক্তভো গীরা।

পাসপোর্ট অফিসে লাইনে দাঁড়িয়ে জসিম উদ্দীন। প্রতিবন্ধী ভাইয়ের জন্য এসেছেন ৫৪ কিলোমিটার দূর উপজেলা হরি পুর থেকে। চোখের চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যেতে হবে ভাইকে নিয়ে। ১৫ দিন যাবৎ ঘুরছেন পাসপোর্ট অফিসে।

কিন্তু নিজের ভোগান্তির কথা কোনোভাবে জানাতে চাচ্ছেন না গণমাধ্যম কর্মীদের।

অবশেষে বললেন, ভাই আমরা তো জিম্মি। তাদের পাসপোর্ট না পেলে তো চিকিৎসা করাতে পারব না।

অভিযোগ করে নতুন ভোগান্তিতে পড়তে চাই না। পরে আমা র পাসপোর্ট পেতে আরও ভোগান্তি হবে।

তবে এসব ভোগান্তির বিষয়ে কিছুই জানেন না ঠাকুরগাঁও আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-সহকারি পরিচালক মোহাম্মদ আলিম উদ্দীন ভূঁঞা।

তিনি বলেন, আমি যোগদানের পর থেকে এ ধরনের অভি যোগ কেউ করেনি। আমাদের কোনো কর্মচারী এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *