স্টাফ রির্পোটার,যশোর:যশোরের খেজুরের গুড়সহ ১৪টি পণ্যকে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) স্বীকৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ শিল্প মন্ত্রণালয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ১৪ পণ্যকে জিআই সনদ দেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির মাল্টিপারপাস হলে সনদ বিতরণের আয়োজন করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদফতর।

জিআই সনদ পাওয়া ১৪টি পণ্য হলো– যশোরের খেজুরের গুড়, টাঙ্গাইল শাড়ি, গোপালগঞ্জের রসগোল্লা, নরসিংদীর অমৃত সাগর কলা, টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম, কুমিল্লার রসমালাই, কুষ্টিয়ার তিলের খাজা, বাংলাদেশ ব্ল‍্যাক বেঙ্গল ছাগল, রংপুরের হাঁড়িভাঙ্গা আম, মৌলভীবাজারের আগর আতর, মুক্তাগাছার মন্ডা, রাজশাহীর মিষ্টি পান এবং জামাল পুরের নকশি কাঁথা।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ একটি অমিত সম্ভাবনাময় দেশ। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, হস্তশিল্প সবকিছুই আছে আমাদের।

যেসব পণ্যকে সনদ দেওয়া হলো, প্রতিটি জেলা-উপজেলায় যুগ যুগ ধরে সেগুলো গড়ে উঠে ছে।

এখানকার মাটি, জল, আবহাওয়া সবকিছুর সঙ্গে প্রতিটি পণ্যের একটা যোগসূত্র রয়েছে। ইচ্ছে করলেই এটাকে নকল করা যাবে না, অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে পারবে না।

আমাদের পূর্বপুরুষরা যুগ যুগ ধরে এ সব পণ্য ব্যবহার করে এসেছেন। প্রতিটি অঞ্চলে যেখানে যেটা আছে সবকিছুর একটা ঐতিহাসিক পটভূমি রয়েছে।

তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে জিআই পণ্যের প্রচার ও প্রসারে আমাদের এখনই কার্যকর উদ্যোগ ও পদক্ষেপ নিতে হবে। বিদেশের বাংলাদেশ মিশন, দেশের সব আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কেন্দ্রীয়ভাবে এসব পণ্য প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করতে হবে। তাছাড়া দেশে-বিদে শে বিভিন্ন মেলায় জিআই পণ্যগুলো প্রদর্শন করা যেতে পারে। তিনি বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ডিপিডিটি, বিসিক ও এসএমই ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এসব পণ্যের উন্নয়ন ও প্রসারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে।

প্রচার ও প্রসারের পাশাপাশি জিআই পণ্যের গুণগত মান ও টেকসই সংরক্ষণের দিকে নজর রাখার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন মন্ত্রী।

মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, আমরা শুনেছি ভারত ৭০০ পণ্যের জিআই প্রদান করেছে।

এ ক্ষেত্রে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। আমাদের শুধু পণ্যে র জিআই করলেই হবে না, প্যাটেন্টও (কৃতিস্বত্ব) করতেহবে। তাহলে কেউ আর পণ্য নিয়ে যেতে পারবে না।

ফরেন সার্ভিস একাডেমির রেক্টর রাষ্ট্রদূত মাশফী বিনতে শামস বলেন, বিশ্বে বলা হয় বাংলাদেশ একটি দরিদ্র দেশ।

কিন্তু আমি বলি, বাংলাদেশ দরিদ্র না। হয়তো মাথাপিছু আয় অন্যদের থেকে কম। কিন্তু সবসময় বলি বাংলাদেশ অত্যন্ত সমৃদ্ধ একটি দেশ। কারণ, বাংলাদেশের যে শিল্প-সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য আছে সেটা পৃথিবীর অনেক দেশের থেকেই অনেক বেশি। আমরা অনেক বেশি সমৃদ্ধ এবং এটা সবাই স্বীকার করে। আমরা এ ক্ষেত্রে অনেকের থেকে এগিয়ে আছি।

এ ছাড়া টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই সনদ গ্রহণ করার পর টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এডিসি জিয়াউল ইস লাম চৌধুরী বলেন, কয়েক দিন আগে টাঙ্গাইল শাড়িকে নিজেদের বলে জিআই সনদ দিয়েছে ভারত।

এ জন্য আমা দের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। একই সঙ্গে সেখানের একটা ল’ফার্মকে নিয়োজিত করা হয়েছে, টাঙ্গাইল শাড়ির স্বীকৃতি যেনো শুধু বাংলাদেশের থাকে সে বিষয়ে কাজ করার জন্য। আশা করছি, আমরা জয়ী হবো।

 

 

 

One thought on “যশোরের খেজুরের গুড়সহ ১৪ পণ্য জিআই স্বীকৃতি পেল”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *