মুহা: জিললুর রহমান,সাতক্ষীরা:
চলতি মৌসুমে বনবিভাগের পশ্চিম সুন্দরবনের আওতাধীন সাতক্ষীরা রেঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ১০০ কোটি টাকার মধু আহরণের সম্ভাবনা রয়েছে।

এবছর ১ হাজার ৫০০ কুইন্টাল মধু এবং ৪৫০ কুইন্টাল মোম আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা। এ থেকে সরকারের রাজস্ব আসবে ৩০ লাখ টাকা।

তবে এ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশা করছেন বন কর্মকর্তারা।

বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, বিগত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সাতক্ষীরা রেঞ্জের আওতাধীন সুন্দরবন থেকে মধু সংগ্রহ হয়েছিল ১৪১৯ দশমিক ৫০ কুইন্টাল। ২০১৯-২০ অর্থবছরে হয়েছিল ২০০৬ দশমিক ৬০ কুইন্টাল।

২০২০-২১ অর্থবছরে মধু সংগ্রহ হয়েছিল ২১৫৯ দশমিক ১৫ কুইন্টাল। ২০২১ সালের মধু ও মোম আহরণের জন্য ১হা জার ১২টি অনুমতিপত্র দেওয়া হয়।

২০২২ সালে ৪১১টি পাস নিয়ে ২ হাজার ৮৯৮ জন মৌয়াল ১ হাজার ৪৪৯ কুইন্টাল মধু এবং ৩৩৪ দশমিক ৭০ কুইন্টাল মোম আহরণ করেন।

এ থেকে রাজস্ব আয় হয় ৩২ লাখ ৭৪ হাজার ৭০০ টাকা। ২০২৩ সালের মধু ও মোম আহরণের জন্য ৩৬৫টি অনুমতি পত্র (পাস) দেওয়া হয়।

এসব অনুমতিপত্রের বিপরীতে ২ হাজার ৪৫০ জন মৌয়াল সুন্দরবনে যান।

তারা ১ হাজার ২২৫ কুইন্টাল মধু ও ৩৬৭ দশমিক পাঁচ কুইন্টাল মোম আহরণ করেন।

আর এ থেকে ২৭ লাখ ৬৮ হাজার ৫০০ টাকা সরকারের রাজস্ব আসে।

চলতি মৌসুমে ১ হাজার ৫০০ কুইন্টাল মধু এবং ৪৫০ কুই ন্টাল মোম আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা। এ থেকে সরকারের রাজস্ব আসবে প্রায় ৩০ লাখ টাকা।

সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) এমকে এম ইকবাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, একটি নৌকায় সর্বোচ্চ ১০ জন মৌয়ালি অবস্থান করতে পারবেন। একজন মৌয়ালি ১৫দিনের জন্য সর্বোচ্চ ৫০কেজি মধু ও ১৫কেজি মোম আহ রণ করতে পারবেন।

১৫দিনের বেশি কোনো মৌয়াল সুন্দরবনে অবস্থান করতে পারবেন না। এ বছর ৯৫০ কুইন্টাল মধু ও ২৮৬ কুইন্টাল মোম আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ১ হাজার ৫০০ কুইন্টাল মধু এবং ৪৫০ কুইন্টাল মোম পাওয়ার আশা করছি। তবে এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে।

খুলনা বিভাগীয় বনকর্মতা ড. আবু নাসের মোহসীন বলেন, সুন্দরবন থেকে আহরণ করা মধুর অধিকাংশই সাতক্ষীরা রেঞ্জ থেকে সংগ্রহ করা হয়।

সাতক্ষীরার সুন্দরবনে যে মধু পাওয়া যায় এটি আর কোথায় পাওয়া যায় না। খলিসা ফুলের মধু শুধুমাত্র সাতক্ষীরা রেঞ্জই পাওয়া যায়। এই মধু সবচেয়ে দাবী। মধু আল্লাহর নেয়ামত এবং এটি সংগ্রহ করে এই অঞ্চলের অনেকের জীবন জীবি কা চলে। তবে কিছু অসাধু ব্যক্তির কারণে সবার বদনাম হয়ে থাকে। সুন্দরবন নিজেদের সম্পদ মনে করে আমাদের তা
রক্ষা করতে হবে। কেউ যাতে সাতক্ষীরার সুন্দরবনের মধুর সুনাম নষ্ট করতে না পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

প্রসঙ্গতঃ পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের কলাগাছিয়া য় একটি গরান গাছের মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহের মধ্যে দিয়ে সোমবার (১ এপ্রিল) দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে চলতি মৌসুমের মধু আহরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। খুলনা বিভাগীয় বনকর্মতা ড. আবু নাসের মোহসীন এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধানঅতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের সংসদ সদস্য এসএম আতাউল হক দোলন।

বনবিভাগের তত্বাবধায়নে আগামী ৩১ মে পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলবে। এবার ১হাজার ৫০০ কুইন্টাল মধু ও সাড়ে ৪ কুইন্টা ল মোম সংগ্রহ হবে। প্রথম দিনে ৬৪জন মৌয়াল পাশ নিয়ে
সুন্দরবনের প্রবেশ করেছে।

সাতক্ষীরার আর্কষন সড়ক পথে সুন্দরবন। সড়ক পথে সুন্দর বনের দেখতে চাইলে সাতক্ষীরায় আসতে হবে।

সাতক্ষীরা কৈখালিতে রয়েছে মৌমাছি জাদুঘর। সুন্দরবনের গা ঘেষে বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে অনেকগুলো পর্যটন কেন্দ্র।

One thought on “সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জে শত কোটি টাকার মধু আহরণের সম্ভাবনা”
  1. সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জে শত কোটি টাকার মধু আহরণের সম্ভাবনা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *