মোঃ হাবিব ওসমান, ঝিনাইদহ প্রতিবেদক:ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় ইন্টারনেটের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভূঁয়া(ফেইক) আইডি খুলে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে অপপ্রচার করে সম্মানহানি করা হচ্ছে।

সমাজের বিভিন্ন শ্রেনি পেশার মানুষের। আইটি বিভাগের দূর্বলতার অযুহাতে আইনি সহায়তা চেয়েও প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।

একাধিক সূত্র জানায়, এখানে স্থানীয় বিএনপি, আও য়ামী লীগ ও জামায়াতের শক্ত অবস্থান ছাড়াও অনেকগুলো প্রাচীন ঐতিহাসিক নিদর্শন, ধর্মীয় পীরের ভক্তদের আলাদা মতামত, অনুসারী ও সনাতনীদের অভ্যন্তরীন দ্বন্দ্বের কথাও শোনা যায়।

এখানে বিভিন্ন সমাজিক সংগঠনও রয়েছে। অপরদিকে বিভিন্ন সংগঠনের অভ্যন্তরিন বিরোধের জের ধরে রয়েছে এক চাপা উত্তেজনা। এসব নিয়ন্ত্রন করছে স্থানীয় একাধিক শক্তিশালী ও প্রভাবশালী চক্র।

শুধু তাই নয়, তাদের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী ও মাদকের সয়লাবে অতিষ্ঠ স্থানীয়রা। এখানে রাজনৈতিক, ব্যবসায়ীক ও সামা জিক প্রতিপক্ষ সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘদিন ধরে।

এছাড়াও এখানে বিরাজ করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অভ্যন্তরীন কোন্দল। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বেড়ে গেছে সামাজিক মাধ্যমের অপপ্রচার।

তারা প্রতিনিয়ত প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে সামাজিক যোগা যোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভুয়া আইডির আশ্রয় নিয়েছেন বলে অনেকের অভিযোগ।

সূত্র আরোও জানায়, বৃহত্তর ঝিনাইদহ-৪ নির্বাচনী এলাকায় অধিকাংশ মানুষ অ্যান্ড্ররয়েড মোবাইল ফোনে ফেসবুক ব্যব হার করেন। তাদের মাধ্যে বেশির ভাগই বয়সে তরুণ।

হাজার হাজার এসব তরুন গ্রাহকের রয়েছে স্মার্ট ফোনের ব্যবহার। তাদের প্রত্যেকের একেকটি বৈধ আইডি রয়েছে।

পাশাপাশি কিছু তরুনের রয়েছে ভুঁয়া আইডিও অভিভা বকে র হাতে ধরা খাওয়ার ভয়ে কেউ কেউ ভুয়া আইডি খুলে ফে সবুকে রয়েছে অবাধ বিচরন।

তবে বেশিরভাগ প্রতারনা ও অপপ্রচারের উদ্দেশ্যেই ব্যবহার হচ্ছে বলে দাবী সচেতন মহলের।

তাই আশংকাজনক হারে বিভিন্ন কারনে এসব আইডির পাশাপাশি খুলেছে ভুয়া ফেসবুক আইডি। বিভিন্ন জনের
রয়েছে বিভিন্ন রকম অসৎ উদ্দেশ্য।

এদের উদ্দেশ্যই থাকে ভুয়া আইডির মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা। বাদ যায়নি সন্ত্রাসীদের এ অপপ্রচারে অংশ গ্রহণ।

তাদের টার্গেট এখন এলাকার ধনী শ্রেণি, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সুনামধন্য সম্মানী মানুষ ও সুশীল সমাজের সমা জপতিরা।

সম্প্রতি নামে-বে-নামে এবং বিভিন্ন সেলিব্রেটিদের নামে ভূয়া আইডির নাম ভাঙ্গিয়ে ঝিনাইদহ-৪ নির্বাচনী এলাকার জনসা ধারনের মানহানীসহ নানা হয়রানীর অভিযোগ করেছেন।

এসব ঘটনায় অনেক ভুক্তভোগী থানায় সাধারন ডায়েরীও করেছেন কিন্তু প্রতিকার পেতে লাগেঅনেক সময়। প্রশাসন এসব ভুয়া ফেইসবুক আইডির বিরুদ্ধে তৎপর না হলে এবং ব্যবস্থা না নিলে সমাজে অপরাধ প্রবণতা বেড়ে যাবে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিমত।

জানা গেছে, ফেসবুকে ভুঁয়া আইডি রীতিমতো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এখন ভয়ঙ্কর ফাঁদের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছে অপরাধীরা।

ফেসবুকে ভুয়া তথ্য দিয়ে অনেকে মজা পেলেও প্রতারণার শিকার কেউ কেউ মানসিক রোগে আক্রান্তও হচ্ছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ফেসবুকই একদিকে যেমন বন্ধুত্বের বন্ধন অটুট করছে, তেমন একে ব্যবহার করে কেউ কেউ স্বার্থ হাসিল করছে। প্ররণার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছে
ফেসবুককে।

প্রায়ই শোনা যায়, ফেসবুকে পরিচয় থেকে প্রেম। একসময় বন্ধুরূপী প্রতারকের খপ্পরে পড়ে অনেককে হারাতে হয়েছে ইজ্জত। শুধু তাই নয়, ইজ্জত খুইয়েই শেষ হয়নি, প্রাণ পর্যন্ত দিতে হয়েছে অনেককে। আবার ফেসবুককে ব্যবহার করে বহু পরিবারকে করা হয়েছে ছন্নছাড়া।

বিজ্ঞানের আবিষ্কারকে ব্যবহার করে প্রেমিকার সঙ্গে অন্তরঙ্গ ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকির কথা শোনা যায় হর হামেশায়। আবার ফেইক আইডি খুলে সম্মানি লোকের সম্মা নহানি করা হচ্ছে অবলীলায়।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি প্রভাবশালী মহল ফেসবুকে ভুঁয়া আইডি ব্যবহার করে সরকারবিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত আছে।

পাশাপাশি ধর্মীয় উস্কানী প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে, নাশকতামূলক নানা কাজে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাইবার অপরাধ বেড়েই চলছে।

স্থানীয়রা বলেন, ফেক আইডিগুলোর অধিকাংশে প্রোফা ইলের ছবিতেই সুন্দরী নারী অথবা হ্যান্ডসাম পুরুষের ছবি দেওয়া থাকে আবার থাকে ও না। এক্ষেত্রে ছবিটি গুগল ইমেজে সার্চ দিলে একাধিক ব্যবহারের প্রমাণ মিলে।

তাছাড়া ভুয়া পরিচয়ে ও ছবি দিয়ে মোবাইল সিম বিক্রি হওয়াতে এ ফেক আইডির সংখ্যা বাড়ছে। এ ফেক আইডি ব্যবহার করে সামাজিক জীবনে দূর্বিসহ ও শঙ্কিত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবী।

ঝিনাইদহ-৪ নির্বাচনী এলাকার অনেক জনপ্রতনিধি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, একটি চক্র নামিদামি ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের নামে ফেসবুকের ভুয়া আইডি ব্যবহার করে নানা রকম অপরাধমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে হয়রানী করছে।

অবিলম্বে দেশের বিটিআরসি কর্তৃপক্ষকে তাদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নিতে পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন।

কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবার রহমান বলেন, এসব ভূয়া বা ফেক ফেসবুক আইডির বিরুদ্ধে আই সিটি বিভাগ তৎপর রয়েছে। পুলিশ ইতিমধ্যে অনেকগুলো ভুয়া ফেসবুক পেজ ও আইডি শনাক্তও করেছেন।

এসব অপরাধীরা অনেকে জেলও খাটছেন আবার অনেকের নামে খুলনা সাইবার ট্রাইবুনালে মামলা চলমানও আছে। তবে কালীগঞ্জের এ অবস্থা ভয়াবহ রুপ নিয়েছে।

প্রশাসন এসব ভুয়া আইডি সনাক্ত করে আইডিগুলো বন্ধ এবং জড়িতদের ধরে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে পুলি শের আইসিটি শাখা তৎপর আছে।

এছাড়াও টেলিযোগাযোগনি য়ন্ত্রক কমিশনও (বিটিআরসি) পদক্ষেপ নিয়ে থাকেন। আশাকরি কেউ আর প্রতারিত হবেন নাব লে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *