সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:
আমদানির শুরুতেই একদিন না যেতেই সাতক্ষীরার বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ টাকা কমেছে।

কয়েক দিন আগেও যে পেঁয়াজ ৯৫ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে, সেই পেয়াজ মঙ্গলবার থেকে কমে ৮০ টাকায় নেমে এসেছে। অর্থাৎ কেজিপ্রতি ২০ কমেছে।

আগামীকাল বুধবার এই দাম আরো কমতে পারে বলে জানান ব্যবসায়িরা।

এদিকে টানা ৮১ দিন বন্দ থাকার পর সোমবার (৫ জুন) বিকাল থেকে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে।

এদিন ১১টি ট্রাকে ২৮৭ মে. টন পেঁয়াজ ভারতের ঘোজা ডাঙ্গা স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে পেয়াজ আসা শুরু হয়।

বিকাল ৫টায় এরির্পোট লেখা পর্যন্ত ৭০ ট্রাক পেঁয়াজ প্রবেশ করেছে। তবে আরো ২৫ থেকে ৩০ ট্রাক পেঁয়াজ আজ
ভোমরা বন্দর দিয়ে প্রবেশের আশা করছেন সিএন্ডএফ কর্তৃপক্ষের।

এদিকে ভারতীয় পেঁয়াজ দেশের বাজারে প্রবেশ করতেই সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর বড়বাজারে দাম কমতে শুরু করেছে।

পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমে আসায় ক্রেতাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। ব্যবসায়ীরা বলছে,পেয়াজের আমদানি বাড়লে দাম আরো কমে আসবে। সাধারণ ক্রেতাদের
ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে চলে আসবে।

বাজারের খুচরা বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, সোমবার পর্যন্ত পেঁয়াজ পাইকারি ৯২ থেকে ৯৫ টাকায় কিনতে হয়েছে। খুচরা আমরা ১০০ টাকায় বিক্রি করেছি।

আজ মঙ্গলবার আমরা পেঁয়াজ ২০টাকা কমে বিক্রি করতে পারছি। এতে ক্রেতারাও বেশ খুশি। আমদানি বাড়লে
পেঁয়াজের দাম আরো কমে যাবে।

সাতক্ষীরার সুলতানপুর বড়বাজারের মুদি ব্যবসায়ি সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান মুকুল বলেন, গত রোববার পর্যন্ত পেয়াজের দাম ৯৫ থেকে ১০০ টাকা কেজি ছিল।

সরকার পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর মঙ্গলবার থেকে পেঁয়াজের দাম কমে এসেছে। আমদানির সাথে সাথে পেঁয়াজের দাম আরো কমবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

অপরদিকে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম কমে যাওয়ার কারণে অনেক পাইকারি ব্যবসায়ি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। আসন্ন কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে অধিক মুনাফা লাভের আশায় তারা পেঁয়াজের মজুদবাড়িয়েছিলেন।

সরকার হঠাৎ পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিবেন এটা তারা বুঝে উঠতে পারেননি। ফলে লোকসানেসর মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের।

ভোমরার ব্যবসায়ী মা ট্রেডার্সের স্বত্তাধীকারী জিএম আমির হামজা বলেন, মঙ্গলবার ১০০ ট্রাকে প্রায় ৩ হাজার মেট্রিক টন পেয়াজ আমদানি হতে পারে। বিকাল ৫টা পর্যন্ত প্রায় ৭০ ট্রাক পেঁয়াজ ঢুকেছে। আরো ৩০ ট্রাক ভোমরা বন্দরে ঢুকতে পারে। তিনি বলেন, পেঁয়াজের আমদানি মূল্য কেজি প্রতি ২৮ থেকে ৩০ টাকা পড়ছে।

ভোমরা স্থল বন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এএসএম মাকসুদ খান বলেন ভোমরা বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত আছে। আজ ৬০ ট্রাক পেয়াজ ভোমরা বন্দরে প্রবেশের গেট পাশ পেয়েছে। তবে এসংখ্যা ছাড়িয়ে ১০০ ট্রাকের মত ঢুকতে পারে। পেঁয়াজের অনেক গাড়ি ভোমরার বিপরীতে ভারতের
ঘোজাডাঙ্গায় স্থলবন্দর এলাকায় প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানা গেছে।

ভোমরা স্থলবন্দরের সুপার ইফতেখারুদ্দিন বলেন, সোমবার বিকালে ভোমরা বন্দর দিয়ে ১১ ট্রাকে ২৮৭ মে. টন পেয়াজ ঢুকেছে। মঙ্গলবার সকালে বন্দরে পেঁয়াজের গাড়ি ঢোকা শুরু করে। বিকাল ৫টা পর্যন্ত প্রায় ৭০ ট্রাক পেঁয়াজ বন্দরে ঢুকেছে।

আরো ৩০ ট্রাক পেয়াজ আজ আমদানি হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। তিনি বলে যেহেতু সরকার পেঁয়াজের আমদানির অনুমতি দিয়েছে বিধায় পুরাতন এলসি যাদের করা ছিল তারা এলসি পরিবর্তন করে পেঁয়াজ আমদানির চেষ্টা করছে। এজন্য দ্রুত পেঁয়াজ আসা শুরু হয়েছে। তবে এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *