রহমত আরিফ ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতাঃ ঠাকুরগাঁওয়ে অতিরিক্ত তাপমাত্রার ফলে মিষ্টি কুমড়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরেছেন কৃষকেরা। দাম কিছুটা ভাল থাকলেও গাছের পাতা হলদে বর্ণ ধারণ করায় আশাতীত ফলন নিয়ে ভাবছেন চাষীরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে বিনামূল্যে বীজ ও কৃষকদের প্রযুক্তিগত পরামর্শ সহায়তা দেওয়া হলেও এবারের ফলন নিয়ে ভানায় রয়েছেন তারা।

ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়। কিছুদিন পূর্বে রবি জাতের মিষ্টি কুমড়া ক্ষেত থেকে উঠিয়ে বিক্রি করা হয়। খরিপ-১ জাতের মিষ্টি কুমড়ার আবাদ চলমান রয়েছে।

আর কিছুদিনের মধ্যে সেগুলো বিক্রি করবেন কৃষকেরা। সদর উপজেলার নারগুন, ভুল্লি, বড় বালিয়া, ছোট বালিয়া, আউলিয়াপুর, পুরাতন ঠাকুরগাঁও, আখানগর, ঢোলারহাটসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র।

জেলায় ঢাকা-১, বøাক সুইটি, মিতালি, বøাাক সিটি সেরা ও সোহাগীসহ নানা জাতের মিষ্টি কুমড়ার আবাদ হয়। এতে বীজ দিয়ে সহযোগিতা করে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। কম খরচে অধিক লাভের আশায় জেলার কৃষকেরা দিন দিন মিষ্টি কুমড়ার আবাদ করছেন বেশি।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বালিয়া এলাকার সফল চাষী হাবিব মো: আহসানুর রহমান পাপ্পু বলেন, গত মৌসুমের শুরুর দিকে ভাল ভলন ও দাম পাওয়ায় এ বছর মিষ্টি কুমড়ার চাষ করেছি।

এ মৌসুমে ৩০ একর জমিতে কুমড়া লাগিয়েছি। আরও প্রায় ১ মাসের মধ্যে মিষ্টি কুমড়া বিক্রি শুরু হবে। বর্তমানে বাজারে মনপ্রতি মিষ্টি কুমড়া ৭শ টাকা থেকে ৯শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আশা করছি ভাল দাম পাব।

সদর উপজেলার নারগুন এলাকার কৃষক সাইফুর রহমান বলেন, ৬ বিঘা (৩শ শতক) জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছি। গাছে ফুল এসেছে। অতিরিক্ত তাপমাত্রার ফলে কিছু কিছু গাছ হলুদ বর্ণের হয়ে গেছে। কৃষি অফিসের সাথে যোগাযোগ করছি, সমস্যা থেকে উত্তোরণের জন্য। প্রত্যাশা করছি ফলন ভাল হলে ন্যর্য্য মূল্য পাব।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাসেল ইসলাম জানান, ২ ধরনের মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়ে থাকে। এর মধ্যে রবি জাতের কুমড়া ইতিমধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে। বর্তমানে খরিপ-১ জাতের মিষ্টি কুমড়া ক্ষেতে রয়েছে।

বেশিরভাগ এলাকায় গাছে ফুল ধরেছে, আর মাসখানিকের মধ্যে এ জাতের মিষ্টি কুমড়া বাজারে উঠতে শুরু করবে। তবে অতিরিক্ত তাপমাত্রার ফলে ভাইরাসজনিত কারনে কিছু গাছ হলদে বর্ণ ধারণ করায় কিছুটা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকেরা।

এ বছর জেলা মোট ৩ হাজার ১৯৮০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়। রবি জাতের মিষ্টি কুমড়ার আবাদ শেষে বর্তমানে খরিপ-১ জাতের মিষ্টি কুমড়ার আবাদ চলমান রয়েছে। গত বছরে ১ হাজার ১০৫ হেক্টর জমিতে খরিপ-১ জাতের মিষ্টি কুমড়ার চাষ করা হয়েছিল।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মো: সিরাজুল ইসলাম বলেন, জেলায় মিষ্টি কুমড়ার ভাল ফলন হয়। প্রতি বছরের ন্যয় এ বছরও মাঠ পর্যায়েরও কৃষকদের প্রযুক্তিগত পরামর্শ ও বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। বর্তমানে খরিপ-১ জাতের মিষ্টি কুমড়ার আবাদ চলমান রয়েছে।

বর্তমানে বাজারে দামও ভাল রয়েছে, সামনের দিনে এ জাতের মিষ্টি কুমড়ায় কৃষকেরা ন্যার্য্য মূল্য পাবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। কৃৃষকদের মাঝে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন উন্নত জাতের মিষ্টি কুমড়ার বীজ বিতরণ করা হয়েছিল।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *